উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ যে বিহারের মানুষ ছিলেন ক’জন জানেন, বলা মুশকিল। বলিউডে সাফল্যের জোরে শত্রুঘ্নই এখানে ‘বিহারিবাবু’। তবুও বিহার বলেই জাত পরিচয়কে শত্রুঘ্ন সিনহার অভিনয় জীবনের সাফল্যের থেকেও এগিয়ে রাখাই দস্তুর। প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও, বিহারি রাজনীতির পাটিগণিতের কাছে ফিল্মি জনপ্রিয়তাও যে ফানুস বই কিছু নয়, তা বিলকুল জানে বিজেপিও। নেতাদের একাংশ একান্তে বলছে, পাটিগণিত তো আমাদের পক্ষেই রয়েছে। এমনকী জাতপাতের রসায়নেও ফলাফল একদম পরিষ্কার। এটা পদ্ম ফুলের জায়গা। কায়স্থ ভোট সঙ্গে নিয়ে এতদিন বিজেপি জিতেছে। এই প্রতীকে দাঁড়ানো মানে তাঁর দিল্লি যাওয়া কনফার্ম। তাদের এহেন বক্তব্যে মনে হবে, রবিশঙ্কর প্রসাদ নন, বরং শত্রুঘ্ন সিনহার চ্যালেঞ্জই বেশি কঠিন। কিন্তু রাজনীতিতে সবসময় নিয়ম মেলে না। তাই যে কোনও সময় মোড় ঘুরে যেতেই পারে। কারণ একটাই। রসায়ন। এমনটাই মনে করছেন মহাজোটের নেতারা।
এই কেন্দ্রের ভোট নিয়ে দুই জোটের নেতাদের মধ্যে কটাক্ষ, পালটা কটাক্ষ সমানে চলছে। বিহারিবাবু ভোট প্রচারে বলছেন, এবারও জয় নিশ্চিত। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, আমেরিকা থেকে ট্রাম্প এসে দাঁড়ালেও নাকি পাটনা সাহিবে বিজেপির জয় কেউ আটকাতে পারবে না। উত্তর দিয়েছেন বিহারিবাবুও। তাঁর উত্তর ছিল, পারলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসে পাটনা সাহিবে দাঁড়ান। আমি খুব খুশি হব। বিজেপির টিকিটে ২০১৪ সালে রেকর্ড ভোটে জেতা শত্রুঘ্ন দল বদলে ২০১৯ –এ পাশে পেয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল সহ মহাগঠবন্ধনের সমস্ত দলকে।
অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী রবিশঙ্কর প্রসাদ পাটনারই বাসিন্দা। বাবা ঠাকুর প্রসাদ সিং জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতাদের এক জন। বিহার জনসঙ্ঘের সভাপতিও ছিলেন। রবিশঙ্কর প্রসাদ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নন, ডাকসাইটে আইনজীবীও। কেন্দ্রীয় সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া, ইনফরমেশন টেকনোলজির গুরুদায়িত্বও ছিল তাঁর কাঁধে। রাফাল মামলা থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— যাবতীয় কথার জবাব দিতে তিনিই দলের মুখপাত্র। লম্বা রাজনৈতিক জীবনে রাজ্যসভাতেই কাটানো আইনজীবী রবিশঙ্কর এবার সম্মুখ সমরে বিহারীবাবুর বিরুদ্ধে।
বিহারের এই আসনে কায়স্থ সম্প্রদায়ের ভোটই প্রধান সহায় শত্রুঘ্ন সিনহার। কায়স্থদের পিছনে রয়েছেন যাদব আর রাজপুতরা। মুসলিম ভোটারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। শত্রুঘ্ন সিনহার জয়ের সম্ভাবনা যাঁরা দেখছেন তাঁদের হিসেবের ভিত্তি হল, যাদব, মুসলিম, দলিত ভোট। সেই সঙ্গে কায়স্থদের বড় অংশের সমর্থন। আর, এটাই মহাজোটের রসায়নের তত্ত্ব।
কংগ্রেসের প্রদেশ কমিটির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান এইচ কে ভার্মার বক্তব্য, আমাদের আশা কায়স্থদের বড় অংশের সমর্থন বিহারিবাবু পাবেন। তার উপরে যাদব, মুসলিম এবং দলিত ভোটও তাঁর দিকে থাকবে। যদিও, জাতপাতের সমীকরণ নিয়ে আলাদা করে কিছু বলতে নারাজ পদ্মফুল শিবির। নেতাদের কথায়, জাতপাতের অঙ্কে নয়, মোদির পাঁচ বছরের কাজ দেখে সব সম্প্রদায়ের মানুষের ভোটই রবিশঙ্কর প্রসাদ পাবেন। ভোটের ফলই তা স্পষ্ট করে দেবে।