কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
জগদীশবাবু আগে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ছিলেন। তিনি সিতাই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে তাঁর এক স্ত্রী গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। রাজ্যে পালাবদলের আভাস পেতেই তাঁরা তৃণমূলে যোগদান করেন। তৃণমূলের পুরনো নেতা-কর্মীদের নানভাবে কোণঠাসা করে রাখেন। এক কথায় তিনি হয়ে ওঠেন সিতাইয়ের সর্বেসর্বা। গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিটে জিতে বিধায়ক হওয়ার পর তাঁর দাপট আরও বৃদ্ধি পায়। তাঁর স্ত্রী সিতাই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে বাড়ি ভাঙচুর করা, মারধর সাধারণ ঘটনা হয়ে ওঠে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোথাও প্রার্থী তো দূরের কথা এজেন্টও দিতে পারেনি বিরোধীরা। এবারের লোকসভা নির্বাচনেও বিরোধী এজেন্টকে মারধর ও বুথ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। কোচবিহারে বিজেপি প্রার্থী জেতার পরদিনই সিতাইয়ের পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর, কাগজপত্র বাইরে বের করে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। বাসিন্দাদের দাবি, সিতাইয়ে বিজেপি’র সেরকম কোনও সংগঠন নেই যাঁরা তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙবে। দীর্ঘদিন তৃণমূল করে আসা লোকজন যারা জগদীশবাবুর লোকজনের হাতে মার খেয়েছে, বাড়িছাড়া ছিল, তারাই এখন বিজেপি’র ঝাণ্ডা নিয়ে পাল্টা ভাঙচুর, লুটপাট করছে।
যদিও এই ভাঙচুর লুটপাটের রাজনীতির সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয় বলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে বিজেপি। এনিয়ে তারা সিতাই ব্লকে মাইকযোগে প্রচারও করেছে। কিন্তু তাতেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বিজেপি’র কোচবিহার জেলা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, সিতাইয়ে তৃণমূল যে সন্ত্রাস করেছে তা নজিরবিহীন। তৃণমূলেরই গোষ্ঠীকোন্দলে কয়েকশ বাড়ি ভাঙচুর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবারের লোকসভা নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী জয়লাভ করায় মানুষ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে। তারই প্রতিফলন ঘটছে। কিন্তু আমরা হিংসা, ভাঙচুরে বিশ্বাস করি না। আমরা সিতাইয়ে শান্তি বজায় রাখতে মাইক যোগে প্রচার করছি। জগদীশবাবু যে কায়দায় রাজনীতি শুরু করেছিলেন এখন সেটা তাঁর দিকেই ফিরে আসছে। যদিও এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন জগদীশবাবু। তিনি বলেন, আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সিতাইয়ে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের দিন রাতে। আমাদের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। সেদিনই শুধু ফরওয়ার্ড ব্লক অফিসে ভাঙচুর করেছিল সাধারণ মানুষ। তারপরে সিতাইয়ে কোনও ভাঙচুর বা দখলদারির রাজনীতি আমি করিনি। আমাদের যুব সংগঠনের নামে যে সমাজবিরোধীরা অনৈতিক কাজ করত তারাই এখন বিজেপি’র ঝাণ্ডা নিয়ে দাপিয়ে বেরাচ্ছে। তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে বিজেপি। তাদের ভয়েই আমাদের নেতা-কর্মীরা বাড়িতে ফেরার সাহস পাচ্ছেন না।