সংবাদদাতা, হরিরামপুর: শনিবার বিজেপির নাগরিক সংবর্ধনা মিছিলকে কেন্দ্রে করে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর শহর। মিছিলের পুরভাগে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে পুলিসের বচসা বাধে। পুলিস মিছিল আটকে দিলে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিসের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পুলিসের গাড়িও ভাঙচুর হয়। পুলিস লাঠি চালিয়ে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিস শূন্যে গুলিও চালিয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। এই সংঘর্ষের ঘটনায় গঙ্গারামপুর থানার আইসি সহ চার পুলিস অফিসার, কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার ও সাতজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে গঙ্গারামপুরের এই ঘটনার পর এদিন বালুরঘাট শহরে বিজেপি তাদের বিজয় মিছিলের কর্মসূচি স্থগিত করে দেয়। সেখানে দিলীপবাবু দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, গঙ্গারামপুরের এসডিপিও এবং তৃণমূল চায় না আমরা কোনও কর্মসূচি করি। তাই ওরা ঝামেলা পাকিয়েছে। সাধারণ মানুষের উপর লাঠি চালিয়েছে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এরাজ্যে কেউ মিছিল করতে পারবে না?
দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিস সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিজেপি মিছিল করে। আমরা আইন অনুযায়ী মিছিল আটকানোর চেষ্টা করি। মিছিল থেকে পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। আমাদের চারজন কর্মী জখম হয়েছেন। গণ্ডগোল পাকানোর অভিযোগে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিসকে প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে। তবে গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছেন পুলিস সুপার। তিনি বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ। গুলি চালানো হয়নি।
এদিন সকালে  বুনিয়াদপুরে বিজেপি নাগরিক সংবর্ধনা মিছিল  করে। এর আগে সেখানে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার সহ জেলা বিজেপির নেতারা শহরের কালীতলায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সংসদ সদস্য এবং দলীয় কর্মীদের নিয়ে দিলীপবাবু গঙ্গারামপুর চৌপথির দিকে মিছিল করে রওনা হন। পুলিস পুনর্ভবা সেতুর কাছে মিছিল আটকে দেয়। সেখানে পুলিসের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বচসা বাধে। এরইমধ্যে মিছিলও খানিকটা এগয়। ফের মিছিল আটকানো হলে এবার পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পুলিস লাঠিচার্জ করে। সেতুর পাশেই থাকা পুলিসের একটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।  চৌপথিতে থাকা র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স মিছিল আটকাতে গেলে উত্তেজিত কয়েকশো বিজেপি কর্মী বাঁশ নিয়ে তাদের পিছু নেয়। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পুলিস জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। ঘটনার পর দীর্ঘক্ষণ ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে থাকে।