কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
বৈঠকগুলিতে দলীয় কর্মীরা নিজেদের ক্ষোভ উগড়াতে গিয়ে বলেছেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে এই জমানায় কাটমানি ছাড়া কোনও কাজই হয় না এমন বার্তা পৌঁছেছিল সাধারণ মানুষের কাছে। শহর এলাকায় সিন্ডিকেটরাজ, তোলাবাজি জমি কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে দলের অনেক নেতাকর্মীর যুক্ত থাকার প্রবণতা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। যা সাধারণ মানুষ কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি। দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে এমন অভিযোগ জমা পড়লেও অনেক ক্ষেত্রেই তা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যার পরিণামে তৃণমূলের প্রতি মানুষের বিশ্বাস অনেকদিন থেকেই নষ্ট হচ্ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গকে পাখির চোখ করে ঢালাও উন্নয়ন করেছেন। উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা তিনি দূর করেছেন। প্রতিনিয়ত তিনি উত্তরবঙ্গের জন্য নতুন নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্রই তাঁর নজর ছিল। তারপরেও কেন মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিল? পরাজয়ের বৈঠকে উঠে এসেছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে একশ্রেণির তৃণমূল নেতার প্রতিটি ক্ষেত্রে ‘দাদাগিরি’ কোনওভাবেই সহ্য হচ্ছিল না। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপ প্রধান থেকে ব্লকস্তরের ছোটখাটো নেতা, বিভিন্ন পুরসভার কাউন্সিলারদের একাংশের নানাভাবে কাটমানি নেওয়া অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। দিনের পর দিন মানুষ এসব চোখের সামনে দেখে এসেছেন। তৃণমূল সুপ্রিমো বারবার সতর্ক করলেও ওই নেতা কর্মীরা তাঁদের স্বভাব বদলাননি। মানুষ তৃণমূলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকেছে বলে দলীয় নেতৃত্ব স্বীকার করছে। শিলিগুড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা বলেন, দলের যা অবস্থা হয়েছে তাতে সিপিএমে যেমন শুদ্ধিকরণের প্রক্রিয়া ছিল আমাদের দলেও এখন সেই শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন এসেছে। না হলে দলকে বাঁচানো যাবে না।
উত্তরবঙ্গের আট আসনের মধ্যে গত নির্বাচনে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং বালুরঘাট চারটি আসন তৃণমূলের দখলে ছিল। কিন্তু এবার গেরুয়া ঝড়ের দাপটে উত্তরবঙ্গ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে ঘাসফুল। দলের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, পর্যালোচনা বৈঠকে কাটমানি প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। যারা ঠিকাদারি করছেন তারাই আবার দলের পদে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। পর্যালোচনা বৈঠকে কর্মীরা এই বিষয়গুলি তুলে ধরে সরব হয়েছেন। মানুষ এগুলিকে ভালো চোখে নেননি তা ফলাফলে আমরা বুঝতে পারছি। সমস্তটাই দেখা হচ্ছে। দলের পর্যবেক্ষককে জানানো হয়েছে। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা গৌতম দেব বলেন, আমরা পর্যালোচনা করছি। অনেক ত্রুটিবিচ্যুতি সামনে উঠে আসছে। সবটাই দেখা হচ্ছে। মিটিংয়ের রিপোর্ট পর্যবেক্ষকের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ পাব পরবর্তীতে তা আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দল ভাঙিয়ে কেউ করেকম্মে খাবে তা হবে না। আমরা তালিকা তৈরি করছি। আর কেউ ছাড় পাবে না। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।