কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
গজলডোবায় মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প পর্যটন হাব ‘ভোরের আলোর’ কাছে মিলনপল্লিতে হেলিপ্যাড তৈরির জন্য প্রায় ২০০ একর জমি চিহ্নিত করে ঘিরে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। হেলিপ্যাডের জন্য চিহ্নিত জমিতে সাইনবোর্ডও লাগানো হয়েছিল। বিজেপি’র কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বে স্থানীয় কৃষক তথা জমির মালিকরা আন্দোলনে নামতেই পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তারপরেই পূর্ব নির্ধারিত জমি থেকে শনিবার প্রস্তাবিত হেলিপ্যাডের সাইনবোর্ড সরিয়ে পাশে সরকারের খাস জমিতে লাগানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, কোথাও বড়সড় ভুল হয়েছে বুঝতে পেরেই পর্যটনমন্ত্রী প্রস্তাবিত জায়গায় হেলিপ্যাড করার জন্য জেদাজেদিতে যেতে চাননি। তাতে বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য এই জমি আন্দোলন চালিয়ে যেত। নিজেদের সিঙ্গুর আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে তাই পর্যটনমন্ত্রী বিজেপি’র এই জমি আন্দোলনকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করতেই হেলিপ্যাড প্রস্তাবিত জায়গা থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
আবার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের আর একটি অংশ মনে করেন, লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খেয়ে তৃণমূল ভয়ে পিছিয়ে গিয়েছে। কারণ হেলিপ্যাড তৈরির জন্য এই জমি রাজ্য সরকার লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই চিহ্নিত করেছিল। তখন তারা ধরেই নিয়েছিল এখানকার গরিব কৃষকও কোনও প্রতিবাদ করবেন না। পাট্টা জমি দখল নিয়ে পুলিসের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহসও দেখাবেন না। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র উত্থান ও তৃণমূলের ভরাডুবিতে গোটা পরিস্থিতিই বদলে যায়। বিজেপি’র কিষাণ মোর্চা স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করায় তৃণমূল সরকার আর বিতর্ক বাড়াতে চায়নি। তাই সংঘাতে না গিয়ে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যদিও পর্যটনমন্ত্রী এমনটা মনে করছেন না। গৌতমবাবু এইধরনের প্রচারের বিরোধিতা করে বলেন, পাট্টা থাকা জমি আমরা নেব না এটা প্রথম থেকেই বলে আসছি। আমাদের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রীর মতো কৃষক দরদি কেউ নেই। কাজেই আমরা কৃষকের স্বার্থ বিরোধী কাজ করতে পারি না। এটা বিজেপি’র চক্রান্ত। গজলডোবায় যেখানে সরকারের খাস জমি রয়েছে সেখানেই আমরা হেলিপ্যাড তৈরি করব।
পর্যটনমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আত্মতুষ্টির কারণ দেখছেন না বিজেপি’র কিষাণ মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অরুণ মণ্ডল। তিনি বলেন, সোমবার কৃষকরা তাঁদের জমিতে কাজে যাবেন। যদি পুলিস বা কেউ তাঁদের কোনও বাধা না দেয়, কৃষকরা আগের মতোই কাজ করতে পারেন তাহলেই বুঝব কৃষকদের জমি জবরদখল হচ্ছে না। এর পাশাপাশি সরকারি নিয়ম মেনে এখানকার কৃষকরা তাদের জমির ‘মিউটেশন’ ও অন্যান্য কাজের জন্য আবেদন জানাবেন। সেই প্রক্রিয়া নির্বেঘ্নে না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় কৃষকদের এই আন্দোলন চলবে।