কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
কনি আইল্যান্ডে দরিদ্র অভিবাসীদের জন্য নিয়োজিত ছিল চারটি দাতব্য সংস্থা। ব্রুকলিন চিলড্রেন’স এইড, নিউ ইয়র্ক চিলড্রেন’স এইড, সেন্ট জন’স সামার হোম ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ইমপ্রুভিং দ্য কন্ডিশন অব পুওর নামে এই চার প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন ছিল কনি আইল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলের ৩০ একর এলাকা। এখানেই তারা গড়ে তুলেছিল দরিদ্র অভিবাসীদের জন্য কম ভাড়ায় বাড়ি। যাতে কঠিন সময়ে এখানে এসে তারা আশ্রয় পেতে পারে। কনি আইল্যান্ডের ওয়েস্ট ফিফথ স্ট্রিটে সিসাইড পার্কের কাছেই ছিল ব্রুকলিন চিলড্রেন’স এইডের কেন্দ্রটি। এর নকশা করেছিলেন কালভার্ট ভক্স। যিনি প্রসপেক্ট ও সেন্ট্রাল পার্কের নকশার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। এসব বাড়ি তৈরিতে অর্থ জুগিয়েছিল ভ্যান্ডারবিল্টস ও অ্যাস্টরসের মতো নিউ ইয়র্কের ধনাঢ্য পরিবারগুলো। ডেনসনের ভাষ্যে, ‘সেই সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে এটা অবিশ্বাস্য শোনালেও, সত্য এটাই যে, এগুলো গড়ে তুলতে ওই ধনীরা ১ শতাংশই অর্থ দিয়েছিলেন।’
ওই সময় প্রতি বছর বহু শিশু ডায়রিয়ার মতো রোগে ভুগে মারা যেত। অথচ একটু চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারলেই তাদের বাঁচানো সম্ভব ছিল। কিছু সমাজসেবী এ ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছিলেন। তাঁরাই কনি আইল্যান্ডে এই বাড়িগুলো তৈরি করেন, যা একই সঙ্গে হাসপাতাল হিসেবেও কাজ করত। বিশেষত শিশুদের ডায়রিয়ার মতো রোগের চিকিৎসা করা হতো। মায়েদের শেখানো হতো সন্তান পরিচর্যার নানা বিষয়। ডেনসনের মতে, ‘অভিবাসী শিশুদের মৃত্যুহার বেশি হওয়ার কারণ ছিল ভয়াবহ দারিদ্র্য। তারা আমেরিকায় বাঁচতে এসে মরে যাচ্ছিল। স্বপ্ন খুঁজতে এসে মুখোমুখি হচ্ছিল এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের। আশার আলো জ্বালিয়ে কনি আইল্যান্ড ছিল এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এই এলাকা একটি সামাজিক সংযোগস্থল হিসেবেও কাজ করেছে। এখানে এসেই বিভিন্ন সংস্কৃতি পরস্পরের সঙ্গে বিনিময়ের সুযোগ পেয়েছে। এখানে এসেই জাতি-পরিচয় নির্বিশেষে সবাই হয়ে উঠেছে আমেরিকান।’
সেই সামার হোমগুলো তবে গেল কোথায়? যখন থেকে আবাসিক এলাকা হিসেবে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং যেদিন থেকে সৈকত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, সেদিন থেকেই এই বাড়িগুলো জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের ছাপ রয়ে গিয়েছে। হাজারো অভিবাসীকে বাঁচিয়ে এই কনি আইল্যান্ড ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। যা আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফিরে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন চার্লস ডেনসন। ব্রুকলিন ইগলকে তিনি বলেন, ‘আজ হয়তো সকলের কাছে কনি আইল্যান্ডের পরিচয় একটি বিনোদন উদ্যানের চেয়ে বেশি কিছু নয়। কিন্তু এর পিছনে রয়েছে এক লম্বা ইতিহাস। এখানকার অনেক ইতিহাসই এখনও অনেকে জানে না। এগুলো জানানো জরুরি। এ থেকেই বোঝা সম্ভব আমেরিকার সঙ্গে অভিবাসীদের সম্পর্কটি। আজকের এই সময়ে এটি ভীষণ দরকার।’