কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
শনিবার ইসলামাবাদের সেরেনা হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলেন ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়া। অতিথি তালিকায় ছিলেন পাকিস্তানের সব প্রান্তের বিশিষ্টরা। কিন্তু হোটেলে ঢোকার সময় আমন্ত্রিতদের চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হল। অতিথিদের অভিযোগ, ভারতীয় হাই কমিশনার ইফতার পার্টির জন্য বিলাসবহুল হোটেলটিকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে বিখ্যাত সাংবাদিক মেহরান জাহরা-মালিকের ট্যুইট, ইসলামাবাদের সেরেনা হোটেলে ভারতীয় দূতাবাসের ইফতার পার্টি উপলক্ষে নজিরবিহীন হেনস্তা চলছে। কেউ হোটেলে ঢোকার চেষ্টা করলেই পুলিস ও সন্ত্রাসদমন বাহিনীর দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হচ্ছে। হেনস্তা করা হয়েছে আমার ড্রাইভারকেও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক সাংবাদিক বলেন, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ভয়ে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। এমনকী কিছু আমন্ত্রিত অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন পেয়েছেন। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নিষেধ করা হয়েছে তাঁদের।
দুর্ব্যবহারের শিকার হন পাকিস্তান পিপল’স পার্টির প্রবীণ নেতা ফারহাতুল্লা বাবরও। তাঁর ট্যুইট, ভারতীয় হাই কমিশন আয়োজিত ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে এসেছিলাম। এসে দেখি হোটেল ঘিরে ফেলা হয়েছে। বলা হয়, ইফতার পার্টি বাতিল হয়েছে। তা সত্ত্বেও ঢুকতে চাইলে অন্য একটি গেট ব্যবহার করতে বলা হয়। সেই গেটে গিয়ে দেখি সেটি বন্ধ। সেখানে বলা হয় মূল গেটে ফিরে যেতে। কী চলছে? সন্দেহজনক কিছু একটা ঘটেছে। বাবরের আরও বক্তব্য, একের পর এক অছিলায় অতিথিদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। তবে তা সত্ত্বেও কোনওভাবে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরেছি। তবে অনেক অতিথিকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়ে।
অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত ভাষণে ভারতীয় হাই কমিশনার বিসারিয়া বলেন, এখানে আসতে গিয়ে আপনাদের অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন। সেজন্য ক্ষমা চাইছি। আমাদের কিছু বন্ধু উপস্থিত পর্যন্ত হতে পারেননি। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লাহোর, করাচি থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। হেনস্তার এই ঘটনার প্রতিবাদ করে রবিবার বিবৃতি জারি করা হয় ভারতীয় দূতাবাসের তরফে। সেখানে বলা হয়, সেরেনা হোটেলকে কার্যত দখল করে নিয়েছিল পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী। হেনস্তার যাবতীয় ঘটনা ঘটিয়েছে তারাই। দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বেশ কয়েকজন কূটনীতিকের সঙ্গেও। কূটনৈতিক নিয়মকানুন লঙ্ঘন করে হোটেলের বাইরে বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। যাতে পাকিস্তানি নাগরিকরা অনুষ্ঠানে যোদ দিতে না পারেন। বেশ কয়েকজন অতিথির গাড়ি পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অতিথি তালিকায় ছিলেন পাক পার্লামেন্টের সদস্য, সরকারি অফিসার, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা, ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক সহ সমাজের সব স্তরের মানুষ। অতিথিদের সঙ্গে কেন দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে ভারতীয় হাই কমিশনের অফিসার ও স্টাফদেরও হেনস্তা করা হয়। ধাক্কাধাক্কি দেওয়া হয়। কয়েকজনের মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। দেওয়া হয় হুমকি।
ইসলামাবাদের এই ঘটনার রবিবার কড়া সমালোচনা করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ট্যুইট, ইটের বদলে পাটকেল দেওয়ার নির্বোধ কূটনীতি। নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনের বাইরে আমরা যা করেছিলাম, সেটাও নির্বোধের মতো কাজ ছিল। ইসলামাবাদের আমাদের সঙ্গে যা হল, সেটাও নির্বোধের মতোই কাজ। এখন ব্যাপারটা ১-১ হয়ে দাঁড়াল। এসব অর্থহীন কাজ বন্ধ করে এখন সামনে এগনোর সময়।