বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
সুকান্ত বেরা : নাটকীয় পটপরিবর্তন না ঘটলে পাঞ্জাবকে হারিয়ে বাংলার রনজি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা বিশবাঁও জলে। ২৬০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষে ২ উইকেটে ২১৮ রান তুলেছে বঙ্গ-ব্রিগেড। সেঞ্চুরি করে ক্রিজে আছেন অভিমন্যু ঈশ্বরণ। ৯০ রানে ব্যাট করছেন ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারি। এখনও ৪২ রানে পিছিয়ে রয়েছে বাংলা। বৃহস্পতিবার ম্যাচের চতুর্থ তথা শেষ দিন। বাংলার মেন্টর অরুণলাল স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘আমরা সারাদিন ব্যাট করার চেষ্টা করব। ওরা কীভাবে ম্যাচটা শেষ করে দিল দেখলেন? কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য দু’টো দলকেই জিততে হত। কিন্তু ওরা কোনও ঝুঁকিই নিল না। এই ম্যাচ আমাদের পক্ষে জেতা কঠিন। পাঞ্জাবও যাতে জিততে না পারে, সেই চেষ্টা করতে হবে। খুব ভালো ব্যাটিং করছে মনোজ ও অভিমন্যু। আমরা পিচটা ঠিকভাবে বুঝতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে টসে জিতে আগে ব্যাট না করলেই ভালো হত।’ প্রথম ইনিংসে ২৬০ রানের লিড নিয়ে বাংলাকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল পাঞ্জাব। যুবরাজ সিংরা চেয়েছিলেন, ইনিংসে ম্যাচটা জিতে বোনাস সহ সাত পয়েন্ট পেতে। যেটা তাদের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে দেবে। সেই সম্ভাবনা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। তবে উইকেট এখন অনেক বেশি ব্যাটিং সহায়ক লাগছে। তার ফায়দা তুলেছেন মনোজ তিওয়ারি ও অভিমন্যু ঈশ্বরণ। ১৫৭ বলে ১১টি বাউন্ডারির সাহায্যে অভিমন্যু শতরান পূর্ণ করেন। ৯টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৯০ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেছেন মনোজ।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনার অভিষেক রামন ৭ রানে আউট হন। লাঞ্চের পর সুদীপ চ্যাটার্জিকে ১৮ রানে বোল্ড করেন সিদ্ধার্থ কল। তখন ইনিংস পরাজয় এড়ানোই ছিল বাংলার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ১৮০ রান যোগ করে মনোজ তিওয়ারি ও অভিমন্যু ঈশ্বরণ কার্যত পাঞ্জাবের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চতুর্থ দিনে, সকালের এক ঘণ্টা দুই দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাঞ্জাব যদি পর পর উইকেট তুলে নিতে পারে, তাহলে সরাসরি জেতার সুযোগ থাকবে তাদের সামনে। আর মনোজ তিওয়ারি ও অভিমন্যু যদি এভাবে খেলে যেতে পারেন, তাহলে লাঞ্চের পর দ্রুত রান তুলে অন্ধ্রপ্রদেশ ম্যাচের মতো সরাসরি জেতার জন্য অবশ্যই ঝাঁপানো উচিত বাংলার। মনোজরা দু’শো রানের টার্গেট রাখতে পারলে,অন্তিম লগ্নের লড়াই হয়ে উঠবে রোমাঞ্চকর। দিনের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি পাঞ্জাবের। ৭ উইকেটে ৩৫৭ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন আনমোলপ্রীত সিং ও বিনয় চৌধুরি। ১২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন আনমোলপ্রীত। আর বিনয় ১০ রানে ব্যাট করতে নামেন। চার রান যোগ করে দিনের প্রথম ওভারেই বিনয় ১৪ রানে বোল্ড হন মুকেশের বলে। দু’রানের মধ্যে আনমোলপ্রীতকে (১২৬) সাজঘরে ফেরান অশোক দিন্দা। তখন পাঞ্জাবের লিড ছিল ১৭৬ রান। দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসার মঞ্চ তৈরি করে ফেলেছিলেন মুকেশ ও দিন্দা। কিন্তু তাঁদের প্রয়াসে জল ঢেলে দেন মনপ্রীত গনি। দশম উইকেটে সিদ্ধার্থ কলকে নিয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করে গনি ৮৪ রান যোগ করার পরেই বাংলা ব্যাকফুটে চলে যায়। গনি ছ’টি বাউন্ডারি ও পাঁচটি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৭ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন। প্রদীপ্ত প্রামাণিকের বলে সিদ্ধার্থ কল ৯ রানে আউট হতেই ৪৪৭ রানে পাঞ্জাবের প্রথম ইনিংস শেষ হয়। বাংলার বোলারদের মধ্যে মুকেশ কুমার পাঁচটি ও প্রদীপ্ত প্রামাণিক চারটি উইকেট নিয়েছেন।
আরও আগে ইনিংস ডিক্লেয়ার দিলে ভালো হত বলে মেনে নিয়েছেন পাঞ্জাবের আনমোলপ্রীত সিং। তিনি জানিয়েছেন, ‘এখনও আমাদের ৪২ রানের লিড রয়েছে। বাংলার এই জুটিকে দ্রুত ভাঙতে পারলে আমরা ফের ম্যাচে ফিরে আসব। ওরা যদি দেড়শো-দু’শো রানের টার্গেট দেয়, তাহলে আমরা জেতার চেষ্টা করব।’