বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
মেখলিগঞ্জ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৬৮টি এবং ধুলিয়া বলদিয়াহাটি এলাকায় ১০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারমধ্যে ৭০টি বাড়ি একেবারে ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। এছাড়া ভোটবাড়ি, জামালদহ, নিজতরফ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় আধ ঘণ্টা ব্যাপী এই ঝড় তাণ্ডব চালিয়েছে। শতাধিক বাড়ি ধুলিসাৎ হওয়ায় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে খোলা আকাশের নীচেই বাসিন্দানের রাত কাটাতে হয়েছে। গোটা ব্লকের একাধিক জায়গায় বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তার উপর পড়ে থাকা গাছ সরাতে সকাল থেকে স্থানীয়রা হাত লাগিয়েছেন। তবে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি জানিয়েছে, ঝড়ের দাপটে বহু জায়গায় বিদ্যুতের তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ চলছে।
এদিকে রাতে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি হওয়ায় বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন। প্রশাসনের তরফে এদিন সকাল থেকেই ত্রাণ বণ্টন শুরু হয়েছে। বেশকিছু এলাকায় ত্রাণ দেরিতে পৌঁছনোয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। একই সঙ্গে মাথাভাঙা-১ ব্লকের কেদারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের জোরশিমুলিতেও ঝড়ে শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল থেকে মাথাভাঙা-১ ব্লক প্রশাসন ত্রাণ বণ্টন ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শুরু করেছে।
এব্যাপারে উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুলিয়া বলদিয়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদ বর্মন, সন্তোষ বর্মন, অশোক রায়রা বলেন, রাতের ঝড়ে এলাকার একধিক বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২ পর্যন্ত প্রচণ্ড বেগে ঝড়ের সঙ্গে মুষলধারায় বৃষ্টি হয়েছে। ঘরের চাল উড়ে যাওয়ায় সেই বৃষ্টির মধ্যে ভিজেই আমাদের রাত কাটাতে হয়েছে। এব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকা সন্তোষজনক ছিল না। আমাদের এখানে অনেকেই সঠিকভাবে ত্রাণ পাননি। মাথাভাঙা-১ ব্লকের জোরশিমুলির বাসিন্দা বৃন্দাবন বর্মন, গিরিবালা বর্মনরা বলেন, রাতের ঝড়ে আমাদের বাড়ি সম্পূর্ণ উড়ে গিয়েছে। ঝড় জলের মধ্যে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে রাত কাটাতে হয়েছে। সকালে অবশ্য প্রশাসনের তরফ থেকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।
মেখলিগঞ্জের বিডিও ইউডেন সাঙ্গে ভুটিয়া বলেন, রাতে গোটা ব্লক জুড়ে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। এতে ৮০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের আধিকারিকরা সকাল থেকে এলাকায় রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের ত্রাণ দেওয়ার কাজ চলছে। একই সঙ্গে আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছি। রাস্তার উপর গাছ পড়ে থাকা সহ নানা কারণে বেশকিছু এলাকায় পৌঁছতে একটু সময় লেগেছে। এখন সর্বত্রই ত্রাণ বণ্টনের কাজ চলছে। মাথাভাঙা-১ বিডিও সম্বল ঝা বলেন, কেদারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের জোরশিমুলিতে শনিবার রাতে ব্যাপক ঝড় হয়েছে। আমাদের আধিকারিকরা সকাল থেকে এলাকায় রয়েছেন। দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা চলছে। মেখলিগঞ্জের বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসের অর্ঘ্য রায় প্রধান বলেন, মেখলিগঞ্জ ব্লক জুড়ে ব্যাপক ঝড় হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে পর্যাপ্ত ত্রাণ পায় সেব্যাপারে ব্লক প্রশাসনকে দেখার জন্য বলেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছি। তাদের আরও কোনওভাবে সহায়তা করা যায় কিনা সেটা দেখা হচ্ছে।