বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহ যোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন ... বিশদ
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্রিগেড চলো কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়ে গত ৩ জানুয়ারি বহরমপুরে মিনি ব্রিগেড সভা করেছিল দলের মহকুমা কমিটি। ওই সময় জেলার অন্যান্য ব্লকেও সভা, মিছিল করে তৃণমূল সাংগঠনিক শক্তির মূল্যায়ন করে। কিন্তু ব্রিগেড সভার পর জেলায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কার্যত ঝিমিয়ে পড়েন। এই অবস্থায় লোকসভা ভোটের আগে দলের পালে হাওয়া লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক। এজন্য শনিবার তিনি বহরমপুর রবীন্দ্র সদনে দলের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি ও জেলা নেতাদের নিয়ে সাংগঠনিক মহাসভা করেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা সভায় সর্বসম্মতিক্রমে একগুচ্ছ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক বলেন, লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে আগামী ১৬মার্চ শহরের ওয়াইএমএ ময়দানে বিশাল সভা করা হবে। যার নাম দেওয়া হয়েছে মিনি ব্রিগেড। সেই সভায় দু’লক্ষ লোক জমায়েত করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আগামী ২৪ফেব্রুয়ারি লালগোলা ও মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে দু’টি কর্মী সম্মেলন করা হবে। সম্মেলনগুলিতে সংশ্লিষ্ট দু’টি কেন্দ্রের প্রতিটি বুথ থেকে ২০জন করে কর্মীকে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মাইক বাজানো নিয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় দু’টি সম্মেলনই হলঘরে করা হবে। সভাগুলিতে আমি উপস্থিত থাকব। এছাড়া, বুথ কমিটিগুলিকে এলাকার নেতাদের বাড়ি কিংবা হলঘরে বুথ কর্মী সম্মেলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ব্লকে সম্মেলনও চলবে। তাতে দলের চেয়ারম্যান, সভাপতি, মন্ত্রী, কার্যকরী সভাপতি সহ নেতারা টিম করে হাজির থাকবেন।
এরপরই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু। তিনি বলেন, ওঁর স্বরূপ সকলেই জানেন। এখন অনেকেই বলছেন, কলকাতায় উনি সিপিএম, দিল্লিতে বিজেপি। তবে, দীর্ঘ ২০বছর ধরে উনি বহরমপুরের এমপি। এতদিনে কী উন্নয়ন করেছেন, সেই প্রশ্নের জবাব তো ওনাকে দিতেই হবে। এখন উনি ভাগীরথী এক্সপ্রেসে চাপছেন, ফুটবল খেলছেন। এতদিন কী করেছেন? কে বহরমপুরে একটি জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিকম সংস্থার পরিষেবা ঢুকতে দেয়নি। কে একটি বেসরকারি টেলিকম সংস্থার কছে টাকা চেয়েছিল? কাজেই তৃণমূলের কোনও নেতিবাচক কিছু নেই। ওদেরই নেতিবাচক অবস্থা। ২০বছরে সংসদ সদস্যের কোটার টাকা বহরমপুরের কোথায় খরচ করা হয়েছে, কী উন্নয়ন হয়েছে, কত অঞ্চল ও গ্রামকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে একটি পুস্তিকা তৈরি করা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের সময় তা ছাপিয়ে প্রচার চালানো হবে।
দলের শক্তি ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি শুভেন্দু বলেন, বর্তমানে এই জেলায় তৃণমূল প্রধান দল। জেলার সাড়ে ৫হাজারের বেশি বুথেই আমাদের কর্মী আছেন। কিন্তু, অন্য দলগুলির তা নেই। ডোমকল পুরসভা এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের করুণ অবস্থার প্রমাণ পেয়েছি। এখন হাওয়া গরম করতে তৃণমূলের নিচুতলায় ভাঙন ধরানোর গল্প প্রচার করছে কংগ্রেস। এসব করে কিছু হবে না। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু ছাড়াও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা, শ্রম দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জাকির হোসেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল, বিধায়ক আখরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহফুজ আলম অবশ্য বলেন, এই জেলার যা উন্নয়ন হয়েছে, তার অধিকাংশই অধীর চৌধুরীর হাত দিয়ে হয়েছে। গ্রামীণ রাস্তা, সেতু, বহরমপুরে রেলের ডবল লাইন পাতা প্রভৃতি সহ অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন অধীরবাবু। তৃণমূল অপপ্রচার করে হাওয়া গরমের চেষ্টা করছে। লোকসভা ভোটে এর উপযুক্ত জবাব পাবে ওরা।