কর্মোন্নতি ও কর্মের প্রসার। সামাজিক সুনাম বৃদ্ধি। শারীরিক সমস্যার আশঙ্কা। ধনাগম মন্দ নয়। দাম্পত্যে চাপ, ... বিশদ
সূত্রটা একটু ধরিয়ে দেওয়া যাক। সুবজ জ্যাকেট পরা ৪৫৬ জন খেলোয়াড়। ব্যক্তিগত জীবনে তারা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও কারণে ঋণগ্রস্ত। প্রায় চার কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার মূল্যের হাতছানিতে সবাই এক দ্বীপে হাজির হয়েছে। ভুলভুলাইয়া সদৃশ এক বিশাল বাড়ির ভিতরে চারিদিকে গোলাপি জাম্পস্যুট ও কালো মুখোশ পরা পাহারাদারদের উপস্থিতি। মোট ছ’টা খেলা। যারা হেরে যাবে, তাদের তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলা হবে। শেষে জিতবে একজনই। আড়াল থেকে একজন ‘ফ্রন্ট ম্যান’ এই খেলা নিয়ন্ত্রণ করে। সোজা কথায়, হোয়াং ডং ইয়ুক পরিচালিত হার হিম করা ন’টা এপিসোডের এই সিরিজ দেখা শুরু করলে শেষ না করে থামা মুশকিল।
সিরিজের মূল কয়েকটি চরিত্রের বিষয়ে দু’-চার কথা না বললেই নয়। গি হুনের (লি জাং জে) কাঁধে ঋণের বোঝা। বিবাহ বিচ্ছেদের পর সে মেয়েকে ফেরত পেতে চায়। এদিকে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন। সাংও (পার্ক হে সো) মেধাবী ছাত্র ছিল। কর্পোরেটে কাজ করতে করতে ক্লায়েন্টের থেকে চুরি করা টাকা এখন সে ফেরত দিতে পারছে না। উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছে সেবিওক (হো ইয়ং জুং)। অনাথ আশ্রম থেকে ভাইকে ছাড়িয়ে সে আবার মা-বাবার সঙ্গে মিলিত হতে চায়। অন্যদিকে, বৃদ্ধ ইল নাম (ওহ ইয়ং সু) শেষ জীবনে স্রেফ নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে এই খেলায় যোগ দিয়েছে। চরিত্রগুলোর দিকে তাকালে বোঝা যায়, তাঁদের একটাই অভাব— প্রচুর টাকার।
অভিনয় গুণে এই সিরিজ আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। লোকেশন, সেট, কস্টিউম— সব মিলিয়ে দর্শকের কাছে এক নতুন পৃথিবীকে হাজির করতে পেরেছেন নির্মাতারা। বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় এই সিরিজের আবহসঙ্গীতের কথা। চিত্রনাট্যের পদে পদে রয়েছে সর্ব শক্তিমান সরকারের প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য। তাই সিরিজটা দেখতে বসলে রূপকের অর্থগুলো দর্শকদের সামনে পরিস্ফুটও হয়। বেরিয়ে আসে সামাজিক জীবন যুদ্ধে লড়তে থাকা আম আদমির অসহায়তা।
তবুও এই সিরিজ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। বাচ্চাদের খেলার সঙ্গে নৃশংসতাকে জুড়ে দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সিরিজের বিরোধিতাও চোখে পড়ছে। বেশ কিছু প্রশ্নেরও উত্তর নেই। এত সহজে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে দিনের পর দিন এইরকম নারকীয় মহাযজ্ঞ কীভাবে চলতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। বিজয়ীকে পুরো অর্থটাই দিয়ে দেওয়া হল। তাহলে এই জুয়ায় যারা টাকা ঢালল, তারা কী পেল? এগুলো বাদ দিলে, ‘স্কুইড গেম’ দর্শকদের নিরাশ করবে না।