কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
গত বছরের ১৭ নভেম্বর। বিশ্বে প্রথম কোভিড আক্রান্তের সন্ধান মিলল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। ডিসেম্বরেই করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু। এরপর করোনা মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান মেলে। উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া কেরলে বাড়িতে ফেরেন। তিনিই দেশের প্রথম নথিভুক্ত করোনা আক্রান্ত।
রাশিয়ায় করোনার টিকার প্রথম নথিভুক্তি
করোনা প্রতিরোধে টিকার সন্ধানে হন্যে গোটা বিশ্ব। এই অবস্থায় আগস্টে প্রথম টিকা নথিভুক্তির ছাড়পত্র দিল রাশিয়া। আর এই ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন স্বয়ং। তাঁর দাবি, টিকাটি যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এটি করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তবে টিকার সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন বহু বিশেষজ্ঞই।
টিকার ট্রায়ালে খোদ পুতিনের মেয়ে
আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শিখাও। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে টিকা নথিভুক্তির দিনেই পুতিন জানিয়ে দেন স্পুটনিক-ভি’র একটি ডোজ তাঁর এক মেয়ে গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান, তাঁর দুই মেয়ের একজনের শরীরে এই ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই প্রয়োগ করা হয়েছে এবং সে ভালো আছে বলেও জানান পুতিন। এরপরেই জোর চর্চা শুরু হয়, তাঁর কোন মেয়ে বড় না ছোট কে টিকা নিয়েছেন।
করোনা রোধে ব্যর্থ, হারলেন ট্রাম্প
জীবনে যে কাজে হাত দিয়েছেন, সফল হয়েছেন। দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দাবি তাঁর সমর্থকদেরও। তাঁর দাবির এই অসাড়তা প্রমাণ করল করোনা। প্রথম থেকেই করোনাকে হাল্কাভাবে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরেও করোনা নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। ১৫ লক্ষের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের। বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা রোধে বিজ্ঞানসম্মত কোনও দিশা দেখানেত ব্যর্থ ট্রাম্প প্রশাসন। সাধারণ নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে শাস্তি দিয়েছে মার্কিন জনতা।
আসছে টিকা
করোনা মোকাবিলায় টিকার গবেষণা শুরু হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সবার চোখ ছিল অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার দিকে। সেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, তাদের টিকার কার্যকারিতা ৭০.৪ শতাংশ। অন্যদিকে ফাইজার জানিয়েছে, ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ৯০ শতাংশ সাফল্য দেখিয়েছে তাঁদের টিকা।
কলকাতাতেও টিকার ট্রায়াল
টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে শামিল কলকাতাও। মহানগরের তিনটি কোভিড হাসপাতালে চলছে টিকার ট্রায়াল। এখন সাগর দত্তে রাশিয়ার তৈরি টিকা স্পুটনিক-ভি, নাইসেডে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে কোভোম্যাক্সের ট্রায়াল চলছে। কলকাতা পুর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম টিকার চূড়ান্ত পর্বের হিউম্যান ট্রায়ালে অংশ নেন।
টিকা নিয়েও আক্রান্ত মন্ত্রী
হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজের করোনা আক্রান্ত হওয়ায় টিকার একের পর সাফল্যের মাঝেও কিছুটা চোনা পড়ল । হরিয়ানার প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ২০ নভেম্বর ভারত বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়ে সুস্থই ছিলেন হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ। কিন্তু তার পরেও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় স্পষ্ট যে তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি। বিতর্কের মাঝে ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পর ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বোঝা সম্ভব। সেটাও আবার প্রথম ডোজ দেওয়ার ১৪ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়। অর্থাৎ ২৮ দিন পর জানা যাবে কতটা সফল কোভ্যাক্সিন।
লিখেছেন ভিক্টর বাগ