কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
শিলিগুড়ি শহরের আশরাফ নগরে মাদকের ওই প্যাকেজিং ইউনিটের হদিশ মেলার পর গোয়েন্দাদের চোখ কপালে উঠেছে। এসটিএফ সূত্রের খবর, বাড়ি ভাড়া নিয়ে দু’বছর ধরে চলছিল মাদক কারবারের ওই ডেরা। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নগদ ১৭ লক্ষ ২৫ হাজার ১৮০ টাকা। এতে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট রয়েছে। তা এক সপ্তাহে মাদক বিক্রির লভ্যাংশ বলেই জানা গিয়েছে।
এ নিয়ে গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই ইউনিট সপ্তাহে এত টাকার ব্যবসা করলে দু’বছরে তা হবে ১৮ কোটি টাকার আশপাশে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থ হয়তো জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যবহার হচ্ছে। এখান থেকে ওই অর্থ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি শক্তি কিংবা মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় থাকা জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের কাছে চলে যাচ্ছে। এমনকী বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ভারত বিরোধী জঙ্গি সংগঠনের কাছেও ওই অর্থ পৌঁছতে পারে হাওয়ালার মাধ্যমে।
এসটিএফের উত্তরবঙ্গের ডিএসপি সুদীপ ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, মাদকের ওই প্যাকেজিং ইউনিট থেকে বাজেয়াপ্ত অর্থ কোথায়, কীভাবে কাজে লাগানো হতো, তা স্পষ্ট নয়। তদন্তে ঘটনার সমস্ত দিক গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শুধু শিলিগুড়ি নয়, সংশ্লিষ্ট ইউনিটের সঙ্গে অসম সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও দার্জিলিং পাহাড় এবং সিকিমের যোগসূত্র মিলেছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। এসটিএফ সূত্রের খবর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ থেকে সড়কপথে এখানে আনা হতো হেরোইন। এখানে তা বিভিন্ন ওজনের প্যাকেটে ভরা হতো। এরপর সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে প্যাকেটগুলি চালান করা হতো।
এ নিয়ে গোয়েন্দাদের বক্তব্য, অনেকদিন আগেই আমদানি হয়েছে ‘নারকো টেরোরিজম’-এর। অর্থাৎ মাদক কারবার থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি-বারুদ, বোমা সংগ্রহ করাই জঙ্গিদের উদ্দেশ্য ছিল। সংশ্লিষ্ট প্যাকেজিং ইউনিটের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা ও রঘুনাথগঞ্জের সংস্রব মেলায় নারকো টেরোরিজমের সন্দেহ আরও বাড়িয়েছে। কারণ, ওই জায়গাগুলি থেকে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ মিলেছে। এসটিএফের অফিসাররা জানান, এ ব্যাপারে খোঁজখবর চলছে। তবে মুর্শিদাবাদের লালগোলা, রঘুনাথগঞ্জ, মালদহের কালিয়াচক, বৈষ্ণবননগর প্রভৃতি এলাকায় মাদক কারবারের দীর্ঘদিন ধরেই রমরমা। আফিম চাষ থেকে হেরোইন প্রস্তুত, সবই ওই এলাকাগুলিতে হয়।
প্রসঙ্গত, ১৪ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকায় হেরোইন প্রস্তুতের কারখানায় হানা দিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। ধৃতদের জেরা করেই এসটিএফ শিলিগুড়ির প্যাকেজিং ইউনিট সিল করে দেয়। এসটিএফের এক অফিসারের বক্তব্য, রঘুনাথগঞ্জের কারখানা ও শিলিগুড়ির প্যাকেজিং ইউনিটের সঙ্গে ছয় থেকে সাতজন জড়িত। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন ধরা পড়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। পলাতকদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছে। এদিকে, শিলিগুড়িতে ওই প্যাকেজিং ইউনিটের হদিশ মেলার পর পুলিস ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, শিলিগুড়িতে যে কায়দায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওই ইউনিট গড়া হয়েছিল তা উদ্বেগের। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পুলিস, পুরসভা ও প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। প্রতীকী চিত্র