পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
খুশির হাওয়া
২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন। বড়দিন মানেই মহানন্দ। দল বেঁধে পিকনিক। যখন ছোট ছিলাম, তখন প্রতি বছর ঠিক সান্তা ক্লজের কাছ থেকে উপহার পেতাম। রাতে কখন সান্তা এসে বিছানায় গিফট রেখে চলে যেত। এখন অনেকটা হয়ে বড় গিয়েছি। তাই আর সান্তার উপহার পাওয়া হয় না। এখন যে গিফট পাই, বুঝতেই পারি বাবা কিংবা মা কিনে দিয়েছেন। বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় এই সময়টায় পড়াশোনার চাপ সেরকম থাকে না। পিকনিক হোক বা না হোক ২৫ ডিসেম্বর মানে বাড়িতে দারুণ সব রান্না হয়। আমার কাছে বড়দিন মানে খুশির হাওয়া।
—রাজদীপ বিশ্বাস, অষ্টম শ্রেণি
পার্ক স্ট্রিট যেতে চাই
সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। প্রতি বছরের মতো এবার প্রচুর কেক আর চকোলেট উপহার পাব জানি। বাবাকে বলেছি, একটা ক্রিসমাস ট্রি কিনে আনতে। সেটা আলো দিয়ে সাজাব। আমাদের বাড়িতে প্রভু যিশুর একটি ছবি রয়েছে। বড়দিনের সন্ধেবেলা যিশুর ছবির সামনে মোমবাতি জ্বালাই। এবছরও তার অন্যথা হবে না। তবে, আমার ক্রিসমাস ইভে পার্ক স্ট্রিট দেখার খুব ইচ্ছা। শুনেছি, কলকাতার ওই রাস্তাটি আলো দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়। প্রচুর ভিড় হয়। একেবারে দুর্গাপুজোর মতো। তাই বাবাকে বলেছি, বড়দিনে পার্ক স্ট্রিট দেখতে চাই।
—প্রসূন পাল, ষষ্ঠ শ্রেণি
জলখাবারে লুচি
আমার বড়দিন কাটে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। প্রতি বছর এই দিনটাকে আমরা পরিবারের সবাই কোনও একটা জায়গায় মিলিত হই। এখন আর একান্নবর্তী পরিবারের যুগ নয়, সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। যেহেতু ডিসেম্বর মাসে আমাদের সব ভাই-বোনেদের পরীক্ষা হয়ে যায়, তাই বাবা-মা, কাকু-কাকিমা, জেঠু-জেঠিমা প্ল্যান করে ২৫ ডিসেম্বর কোনও এক জায়গায় জড়ো হই। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, নাচ-গান, খেলা এক্কেবারে হইহই ব্যাপার। তবে, একটা ব্যাপার আমি খেয়াল করেছি, দুপুরের রান্নার মেনু একটু-আধটু প্রতি বছরই পাল্টে যায়। কিন্তু সকালের জলখাবারে লুচি-তরকারির কোনও পরিবর্তন হয় না! তার সঙ্গে কেক, কমলালেবু, জয়নগরের মোয়া, চকোলেট তো থাকেই। এবারও আমরা পরিবারের সবাই একসঙ্গে চড়ুইভাতি করব।
—অর্জুন দাস, সপ্তম শ্রেণি
গড়চুমুকে পিকনিক
আমাদের পাড়াটা খুব ভালো। যেকোনও উৎসব-আনন্দে হইচই হয়। একেবারে উৎসব-মুখর পাড়া বলতে যা বোঝায়, আমাদের এলাকাটি সেরকমই। তাই যেকোনও উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ইংরেজি বছর শেষ হতে চলেছে। নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আগে আমাদের শেষ বড় উৎসব ক্রিসমাস। গত বছর বড়দিনের দিন পাড়ার ক্লাব থেকে ব্যান্ডেল চার্চে পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিল। চার্চ আর গঙ্গার মাঝের মাঠটায় বন্ধুরা মিলে চুটিয়ে ক্রিকেট খেলেছিলাম। আমাদের খেলার ধুমে আর একটু হলে পিকনিকের ডাল রান্না পণ্ড হয়ে যেতে বসেছিল। এবার যাব গড়চুমুক। হাওড়া জেলার এই পিকনিক স্পটটি শুনেছি খুব সুন্দর। দেখি এবার কী অভিজ্ঞতা হয়।
—গৌরব বসু, নবম শ্রেণি
ঘুড়ি ওড়াই
সকলের কাছে ঘুড়ি মানেই বিশ্বকর্মা পুজো। কিন্তু আমরা পাড়ার বন্ধুরা ২৫ ডিসেম্বর ঘুড়ি ওড়াই। এখানে বড়দিনে ঘুড়ির মেলায় আকাশ ছেয়ে যায়। খুব মজা করি। এছাড়াও আমাদের এলাকার কাছাকাছি একটি গির্জা আছে। ক্রিসমাসের দিন সেখানেও ঘুরতে যাই। কী সুন্দর গির্জা সাজানো হয়! সেখানকার মনোরম পরিবেশ মন কেড়ে নেয়। বড়দিন আর কেক একেবারেই সমার্থক। দোকানে তো হরেক রকম কেক বিক্রি হয়। কিন্তু আমার মায়ের হাতে বানানো কেক অপূর্ব। রান্নাঘর থেকে যখন কেকের গন্ধ ভেসে আসে মন উশখুশ করে। ক্রিসমাস মানেই কেক আর গিফটের উৎসব। আমার সব বন্ধুর বড়দিন ভালো কাটুক সেই কামনাই করি।
—শান্তনু মাজী, নবম শ্রেণি
আলোকমালা
২০২৪-এর শেষ প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছি। অপেক্ষা করছি ২০২৫-এর। ডিসেম্বর নির্ভেজাল আনন্দের মাস। আমরা তো কার্যত সারা বছর গরমে হাসফাস করি। হাতেগোনা কয়েকটা মাস শীতকাল। তারমধ্যে ডিসেম্বরের ঠান্ডা রীতিমতো উপভোগ্য। আর বছর শেষের সবচেয়ে বড় উৎসব ক্রিসমাস। এই উৎসব এখন শুধুমাত্র খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে আবদ্ধ নেই। সর্বধর্মের মানুষ প্রভু যিশুর জন্মদিনের আনন্দে মেতে ওঠেন। আলোয় আলোয় সেজে ওঠে শহর থেকে মফস্সল। ছোটবেলায় আমি সান্তা ক্লজ সাজতাম। এখন পাড়ার বাচ্চাদের সান্তা ক্লজের টুপি উপহার দিই। আর আলো দিয়ে সাজাই ক্রিসমাস ট্রি।
—দেবজ্যোতি করণ, একাদশ শ্রেণি
সিঁথি আর বি টি বিদ্যাপীঠ
পায়ে পায়ে পঁচাত্তর! হীরক জয়ন্তী বর্ষের সূচনা হয়েছে ৭৫টি গাছের চারা রোপণ করে। বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি সারা বছর ধরে চলছে নানান অনুষ্ঠান। ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হীরক জয়ন্তী বর্ষের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি হবে। ১৯৫০ সালের ছোট্ট চারা গাছ আজ মহীরুহ। সদ্য স্বাধীনতার জোয়ারে ভাসছে দেশের নানা প্রান্ত। স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে একান্ত প্রয়োজন শিক্ষা। স্থানীয় কতিপয় শিক্ষানুরাগী মানুষের সহায়তায় শুরু হয় পথচলা। রায়বাহাদুর বদ্রীদাস তুলসানের দান করা জমিতে তৈরি হয় এই স্কুল। তখন ৭০-৮০ জন ছাত্র। তখন এই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ। সেই শুরু। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি সিঁথি আর বি টি বিদ্যাপীঠকে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদন পায় ১৯৫১ সালে। ১৯৬১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। প্রথমে কলা, তারপর বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়। পরবর্তীকালে সহশিক্ষা ও ইংরেজি মাধ্যমের প্রচলন হয়। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ১০০। পড়ুয়াদের সুবিধার্থে চালু করা হয়েছে স্পোকেন ইংলিশ ক্লাস। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকাতেও স্থান করে নিয়েছে এই স্কুল। এই স্কুলের শিক্ষণ পদ্ধতিতে রয়েছে প্রথাগত পার্থক্য। প্রতিটি বিষয়ের সিলেবাস শেষ হলেই পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেই খাতা অভিভাবকরা দেখতে পারেন। প্রাক্তনীরাও স্কুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। এই স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন নামী সঙ্গীতশিল্পী কুমার সানু। যাঁর আসল নাম কেদারনাথ ভট্টাচার্য। যাত্রাসম্রাট তপন ভট্টাচার্যও এই স্কুলের প্রাক্তনী। এখন সমস্যা একটাই বিদ্যালয় সংস্কারে অর্থাভাব। আশা করি, সকলের সহযোগিতায় সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে এই স্কুল এগিয়ে যাবে।
—সত্যরঞ্জন মান্না, প্রধান শিক্ষক