বিদ্যার্থীদের পঠনপাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
এবার এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্যে হতে চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক কেউই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন কখনও হননি। প্রায় গোটা বছরটাই স্কুল বন্ধ ছিল, হয়নি টেস্ট পরীক্ষা। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে তৈরি হবে পরীক্ষার জন্য! জানিয়েছে তোমাদের বন্ধুরা। সঙ্গে রয়েছে শিক্ষকদের পরামর্শ।
অতিরিক্ত সময়কে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি
স্বাভাবিক সময়ের থেকে মাধ্যমিক প্রায় তিন মাস পিছিয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে সরকার পাঠ্যক্রমও কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। এর জন্য সরকারকে অনেক ধন্যবাদ। মাধ্যমিকে ভালো ফল করার জন্য আমি এই অতিরিক্ত সময়কে ভীষণভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। স্কুলের শিক্ষিকারাও সব সময় খুব সাহায্য করছেন। এবছর করোনার জন্য টেস্ট দিতে না পারায় ২০২০-২১ সালের টেস্ট পেপার হাতে আসেনি। তাই গত বছরের টেস্ট পেপার নিয়েই প্রস্তুতি সারছি জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষার জন্য। নিজেই নিজের মকটেস্ট নিচ্ছি। কোনও প্রশ্নে আটকে গেলে স্কুলের শিক্ষিকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিচ্ছি। তাঁরা ভুল ত্রুটি সংশোধন করে দিচ্ছেন। প্রতিদিন সব বিষয়কেই সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়ছি। আর যে সব বিষয়ে এখনও কিছুটা খামতি রয়েছে সেগুলিকে বাড়তি নজর দিচ্ছি। আশা করছি, এবার মাধ্যমিকে ভালো ফল করতে পারব।
মাল্টিপারপাস গভঃ গার্লস স্কুল
বাধা কাটবে,
সফল হতে হবে
প্রায় এক বছর অনলাইন ব্যবস্থায় পড়াশোনা করে মাধ্যমিকের মতো বড় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। অনলাইন ব্যবস্থায় পড়াশোনার কোনও অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল না। বাধ্য হয়ে সেই ব্যবস্থায় যেতে হয়েছে। সবকিছুর মতোই অনলাইন ব্যবস্থারও সীমাবদ্ধতা আছে। প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর অভাব আছে নানা জায়গায়। আছে আমাদের অনভিজ্ঞতা। ফলে বারবার নিজেদের এই ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত করতে করতে এগতে হয়েছে। আমাদের শিক্ষকরা সব সময়ই আমাদের পাশে থেকেছেন, সাহায্য করেছেন।
অনলাইন ব্যবস্থায় পরীক্ষার সঙ্গে সরাসরি পরীক্ষার পার্থক্য আছে। স্কুলে নির্বাচনী পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এই জায়গায় আমাদের কিছুটা ঘাটতি থেকে গিয়েছে। পাঠ্যক্রম কমেছে। মাধ্যমিক পিছিয়ে যাওয়া মানে উচ্চমাধ্যমিকের মোট সময় কমে যাওয়া। ফলে আমার মতো অনেকের মনেই হয়তো প্রশ্ন, এতে উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করা যাবে তো? পাঠ্যক্রমের হ্রাসও এমন হয়েছে যে চিন্তা হয়, ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে কিছু অসুবিধা হতে পারে। কোনও কোনও বিষয় সম্পূর্ণ বাদ না দিয়ে বিভিন্ন অংশ থেকে কিছুটা করে কমানো হলে ভালো হতো বলে আমার মনে হয়েছে। কাজেই সবমিলিয়ে বহু বাধা অতিক্রম করে আগামী দিনে আমাদের পরীক্ষা দিতে হবে। ভালো ফল করতে হবে। মূল লক্ষ্য সেটাই।
হাওড়া বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশন
মক টেস্ট দিতে
পারলে সুবিধা হবে
মাধ্যমিক অবশ্যই ভালোভাবে দিতে চাই। পাঠ্যক্রম কমে যাওয়ায় আর সময় বেড়ে যাওয়ায় আপাতভাবে কিছুটা হালকা লাগছে। তাই এই সময়ে কিছুটা একাদশ শ্রেণীর পড়া এগিয়ে রাখার চেষ্টা করব। লকডাউন ঘোষণার পর যে প্রাথমিক অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা গিয়েছি, সেই সময়ের পর স্কুলের শিক্ষকরা দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। অনলাইনে পড়ার গ্রুপ তৈরি করে যোগাযোগ রাখা, বিভিন্ন অ্যাপে’র মাধ্যমে সপ্তাহে সময় করে ক্লাস নেওয়া, মাসে এক বা একাধিক ক্লাস টেস্ট নেওয়ার মাধ্যমে তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন পাঠ্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যেতে।
আগামী সময়ে স্কুলের কাছে প্রত্যাশা এই যে যদি সম্ভব হয়, পরীক্ষার আগে স্কুল থেকে কিছু মক টেস্ট নেওয়া হোক, তাহলে খুব উপকার হয় প্রস্তুতির ক্ষেত্রে। যেহেতু টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি, তাই এই ধরনের টেস্ট থেকে পরীক্ষায় সীমিত পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে কী ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে তা আন্দাজ করতে পারা যাবে।
বাঁকুড়া জেলা স্কুল
পরীক্ষা এবার
একার নয়, সবার
বারাসত কালীকৃষ্ণ গার্লস হাই স্কুল
আমার প্রস্তুতি
মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালোই চলছে। তবে সিলেবাস কমে যাওয়া এবং পরীক্ষাও পিছিয়ে যাওয়ায় বাড়তি কিছুটা সুবিধা হল। আরও ভালো করে প্রস্তুত হতে পারব। এই বাড়তি সময়টাতে পরীক্ষায় কাজে লাগবে এমন আরও কিছু বই পড়ছি, যাতে প্রস্তুতিতে কোনও খামতি না থেকে যায়। সেই সঙ্গে নিয়মিত মক টেস্ট দিচ্ছি। একটা রুটিন তৈরি করেছি। পড়ার সময়কে তিন ভাগে ভাগ করে সব বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়ছি। সময় বেঁধে প্রশ্নের উত্তর লেখা প্র্যাকটিস করছি। এসবের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ের টেস্ট পেপার সল্ভ করা তো আছেই। কোনও জায়গায় বুঝতে অসুবিধা হলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের হোয়াটসআপ বা ফোন করে বুঝে নিচ্ছি। এরকমভাবে ক্রমশ পড়ার সময় আরও বাড়বে। এভাবেই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিধাননগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
সব বিষয়কে সমান
গুরুত্ব দিয়ে পড়ছি
করোনা জনিত কারণে বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার মুখোমুখি আমরা। ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছি, মাধ্যমিক পরীক্ষা এবছর জুন মাসে হবে। পাঠ্যক্রমও কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময় তো বেড়ে গেল অনেকটা, কিন্তু টেস্ট পরীক্ষা না হওয়ার দরুন আমরা নিজেরা সার্বিকভাবে মাধ্যমিকের জন্য কতটা প্রস্তুত, সে সম্পর্কে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে। যদিও আমাদের বিদ্যালয়ে প্রতিটা বিষয়ের ওপর মাঝেমাঝে যে অনলাইন টেস্ট নেওয়া হচ্ছে সেটা কিছুটা সাহায্য করছে। তবু একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেনে সম্পূর্ণ বিষয়ের ওপর পরীক্ষা হলে ভালো হতো। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমেই যথাসম্ভব আমাদের সাহায্য করে চলেছেন এখনও। যেকোনও সময় পড়াশোনা সংক্রান্ত কোনও অসুবিধা হলে তৎক্ষণাৎ তাঁরা সেটা বুঝিয়ে দেন। বাড়িতে বাবা-মাও তাঁদের সাধ্যমতো সাহায্য করার চেষ্টা করেন। আমি রোজ অনলাইন ক্লাস ছাড়াও ১০-১২ ঘণ্টা নিজে প্রত্যেকটা বিষয় সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়ার জন্য সময় রাখি। ঘড়ি ধরে প্রতিটি বিষয়ের মক টেস্ট দিই নিজের মানসিক উদ্বেগ কমাতে এবং পরীক্ষা হলের ভয় কাটাতে। এভাবেই নিজেকে মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুত করছি।
বেথুন কলেজিয়েট স্কুল