Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ভালোবাসার উপহার

উদয়ারুণ রায়: হঠাৎ অসময়ে ইন্দিরাকে দু’কাপ চা নিয়ে ওর ঘরে ঢুকতে দেখে সুচেতন একটু অসন্তুষ্টই হল। সুচেতনের এই একান্ত নিজস্ব ঘরে খুব বেশি লোকজন আসুক সেটা ও পছন্দ করে না। ঘরটা ওর একদম নিজস্ব মনের বিচরণ ক্ষেত্র। ঘরটিতে ওর পছন্দের সব জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো।
বছর পাঁচ হল সুচেতন চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে। অবসর নেওয়ার পর এই ঘরটি যেন ওর কাছে আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে।
চায়ের কাপ দুটো ওর পড়ার টেবিলের উপর নামিয়ে রেখে ইন্দিরা বলল, ‘জানো, ঝিল্লির ননদের বিয়েতে গিয়ে আমার একটা দারুণ লাভ হয়েছে। বেয়ান মানে বুড়িদি, আমাকে একটা স্পেশাল উপহার দিয়েছে।’
সুচেতন মন দিয়ে সত্যজিৎ রায়ের উপর সদ্য প্রকাশিত একটা বই পড়ছিল। তার মধ্যে ইন্দিরা এসে এসব কথা তোলাতে সে একটু বিরক্তই হল।
সুচেতন অন্যমনস্ক হয়েই প্রশ্ন করল, ‘কে বেয়ান?’
‘আরে, বেয়ান বোঝ না! ঝিল্লির শাশুড়ি, বুড়িদি।’ ওর অন্যমনস্কতা কাটাতে গলায় সামান্য ঝাঁজ এনে বলল ইন্দিরা।
‘হ্যাঁ বল, বুড়ি তোমাকে কিছু প্রেজেন্ট করেছে? কী সেটা? বুড়ি শব্দটায় অন্যমনস্কতা কেটে গেল সুচেতনের।
‘উপহারটা যে খুব দামি তা কিন্তু নয়। তবে যেটি দিয়েছে, সেটার বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে একটা বিশেষ তাৎপর্য আছে।’
ইন্দিরার কথা বলার ধরনে সামান্য কৌতূহল হল সুচেতনের। হাতের বইটা মুড়ে রেখে চায়ের কাপে একটা চুমুক দিয়ে জিজ্ঞাসা করল, ‘জিনিসটা কী? খুব ভ্যালুয়েবল হলে, সে জিনিস ও তোমাকে দিতে যাবে কেন?’
‘সে আমি কীভাবে বলব? দেওয়ার সময় আমাকে শুধু বলল, ‘বেয়ান, এটা আমার খুব পছন্দের জিনিস। মেয়ের বিয়ের উপহার হিসেবে তোমাকে দিলাম। খুব যত্নে রেখ এটা। মাঝে মাঝে পর।’
‘জিনিসটা ভীষণ সুন্দর। দেখলে তোমারও পছন্দ হবে।’
ইন্দিরা সুচেতনের স্ত্রী। গতকাল রাতে মেয়ের ননদের বিয়ে সেরে বাড়ি ফিরেছে। এই বিয়ের অনুষ্ঠানটা সুচেতন শরীরের দোহাই দিয়ে সতর্কভাবে এড়িয়ে গিয়েছে। বাড়ির অন্য সকলে যাতায়াত করেছে।
সুচেতনের এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে বড়, মেয়ে ছোট।
চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আগেই সুচেতন ছেলের বিয়ে দিয়ে ঘরে বউমা এনেছে। আর অবসর নেওয়ার এক বছরের মধ্যে মেয়ের বিয়েটাও সেরে ফেলেছে। তবে সুচেতনকে কারওর বিয়ের জন্য খোঁজ খবর করতে হয়নি। ছেলে ও মেয়ে দু’জনেরই নিজেদের পছন্দের বিয়ে। কেবল সম্মতি দিয়ে সামাজিক রূপ দিয়েছে সুচেতন। তবে মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে অদ্ভুত এক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল সুচেতনকে।
প্রথা অনুযায়ী যতই প্রেমের বিয়ে হোক, পাত্রীপক্ষকেই ছেলের বাড়ি গিয়ে আগে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হয়। সেই মতো হবুজামাইয়ের লেক টেরসের বাড়িতে গিয়ে জামাইয়ের মাকে দেখে চমকে উঠেছিল সুচেতন। বুড়ি তার খুব পরিচিত। এক সময়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মায়ের সব থেকে প্রিয় বন্ধু বানু মাসির মেয়ে বুড়ি, ভালো নাম খেয়া।
পরিচয়পর্বে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে সুচতেন খুব স্বাভাবিক গলায় বলেছিল, ‘আপনি বানু মাসির মেয়ে বুড়ি না?’
ভীষণ মিষ্টি হেসে খেয়া ওরফে বুড়ি উত্তর দিয়েছিল, ‘তুমি বুয়াদা তো? তোমাকে দেখেই চিনেছি। মাথার সাদা চুলটুকু বাদ দিলে, দেখতে একই রকম আছে! ঝিল্লি তাহলে তোমারই মেয়ে?’
মেয়েরা কত সহজভাবে নিতে পারে সব কিছু। সুচেতন আপনি সম্বোধনে শুরু করেছিল। কিন্তু খেয়া কেমন অবলীলায় আগের মতো তুমি দিয়েই শুরু করল।
ওর সঙ্গে আসা ইন্দিরা, ছেলে দেবতনু আর খেয়ার ডাক্তার স্বামী তিনজনেরই তখন চোখে অবাক বিস্ময়!
ডাক্তার মিত্র মানে, খেয়ার স্বামী আশ্চর্য হয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞাস করেছিলেন, ‘তোমরা দু’জনে দু’জনকে আগে থেকে চিনতে?
সুচেতন আমতা আমতা করে কিছু বলতে যাচ্ছিল, তবে তার আগেই উচ্ছ্বাসের সঙ্গে খেয়া বলে উঠেছিল, ‘পরিচিত মানে! বুয়াদা ঋতা মাসির একমাত্র ছেলে। আমার মা আর ওর মা দু’জনে ভীষণ বন্ধু ছিল। সেই স্কুল থেকে। আমি ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে কত গিয়েছি ওদের বাড়িতে। বড় হওয়ার পরেও যেতাম। ওরাও আসত আমার বাপের বাড়িতে। তবে বড় হয়ে বুয়াদার আসা কমে গিয়েছিল। কথাগুলো বলার পর একটা ভীষণ অর্থপূর্ণ হাসি ছড়িয়ে পড়ল খেয়ার চোখে মুখে। কেউ খেয়াল না করলেও সুচেতনের তা নজর এড়াল না।
মেয়েরা কী অসম্ভব দক্ষতায় সব কিছু ম্যানেজ করতে পারে।
মেয়ের বিয়ের সমস্ত অনুষ্ঠানে বাধ্য হয়ে থাকতে হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে সতর্কভাবে মেয়ের শ্বশুর বাড়িটিকে এড়িয়ে চলে সুচেতন।
ছোটবেলা থেকেই সুচেতনের খেয়ার প্রতি আলাদা একটা ভালোলাগা ছিল। খেয়ারও সেরকম কিছু ছিল কি না, তা ঠিক বুঝতে পারত না সুচেতন।
এক এক সময় ওদের বাড়িতে গেলে খেয়া যেচে বেশ ঘনিষ্ঠতা দেখাত। অনেক গল্প করত। আবার কখনও কখনও এমনভাবে দেখাত যে সে ওকে যেন চেনেই না। খেয়া অচেনার ভাব দেখালে, পাগলের মতো হয়ে যেত সে। পড়াশোনায় মন বসত না। খেলতে যেতে ইচ্ছা করত না। খাওয়ার সময় খিদে পেত না। আবার যখন খেয়া বেশ ভালো ব্যবহার করত, হেসে কথা বলত, ওর আঁকার খাতা দেখাত, গান গেয়ে শোনাত, তখন প্রজাপতির পাখনায় উড়তে শুরু করত সুচেতন।
দু’জনে বয়সের বিশেষ ফারাক ছিল না। সুচেতন যখন কলেজে ভর্তি হল, সে বছর খেয়া মাধ্যমিক পাশ করেছিল।
খেয়া উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে শান্তিনিকেতনে চলে গেল রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে পড়বে বলে। কিন্তু তার আগেই ওদের মধ্যে যে আড়াল ছিল, সেটা গেল ভেঙে।
একদিন নিজের বাড়িতে খেয়াকে পেয়ে সুচেতন ওকে ডেকে নিয়ে গেল ছাদে। সুচেতনদের ছাদ থেকে বহু দূর পর্যন্ত একটা ফাঁকা মাঠ দেখা যেত। কিছুটা কচুরিপানা ঢাকা জলা আর বাকিটা ধুধু প্রান্তর।
ছাদে এসে খেয়া জিজ্ঞাসা করল, ‘কী ব্যাপারে হঠাৎ ছাদে ডাকলে? কিছু গোপন কথা বলবে না কি?’
খেয়ার হঠাৎ এমন প্রশ্নে ঘাবড়ে গেল সুচেতন। যা বলতে চেয়েছিল, সব কেমন গোলমাল হয়ে গেল। ও আমতা আমতা করে বলল, ‘আসলে ওই যে দেখছ না, ওই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠটা, ওটা আমার খুব প্রিয়। তাই তোমাকে দেখাব বলে ডেকে এনেছি।’
ওর কথা শুনে মুখে দুষ্টুমি মাখা হাসিটা রেখে, বুকে ঢেউ তোলা গভীর চোখে ওর দিকে চেয়ে রইল খেয়া।
নিজের দৃষ্টিটাকে যে কোথায় লোকাবে তাই ঠিক করে উঠতে পারছিল না সুচেতন।
ওকে বাঁচিয়ে দিল খেয়া। নিজের চোখটা ছাদের দিকে নামিয়ে আদুরে গলায় বলল, ‘বুঝেছি, তুমি বোধহয় আমার প্রেমে পড়েছ। কিন্তু কী জানো, আমিও না...’
বুকে দামামা বাজতে শুরু হল সুচেতনের। ‘আমিও না’ বলে থেমে গেছে খেয়া।
আর থাকতে পারল না সে। পাগলের মতো খেয়ার হাত দুটো চেপে ধরে বলে উঠল, ‘পুরোটা শেষ কর বুড়ি, তুমি কী করতে চাইছিলে?’
সুচেতনের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল না খেয়া। চোখ থেকে চোখ নামিয়ে নিল ছাদের মেঝেতে। খুব অস্পষ্ট স্বরে বলল, ‘আমিও যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি বুয়াদা, ঠিক তোমার ওই তেপান্তরের মাঠকে ভালোবাসার মতো।’
খেয়ার কথায় সুচেতনের মনে হল, একশো ঘোড়া ছুটছে ওর বুকের ভিতর।
সেই শুরু। সুচেতন বারবার ছুটে ছুটে গেছে শান্তিনিকেতনে খেয়ার আকর্ষণে।
খেয়াও যখন ছুটিতে বাড়িতে আসত তখন ওরা চষে ফেলত কলকাতা শহর।
কবিপক্ষে রবীন্দ্রসদনে গাইতে আসত খেয়া। সুচেতন শুনতে যেত ওর গান।
এর মধ্যে সুচেতন সরকারি চাকরি পেয়ে গেল। খেয়া বিশ্বভারতী থেকে এম.মিউজ করে বেরনোর পর রবীন্দ্র ভারতীতে সংঙ্গীতের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিল। এবার দু’জনে ঠিক করল, দু’জন দু’জনকে বিয়ে করতে চায়, সেই বিষয়টা যে যার বাড়িতে জানাবে।
বাড়িতে জানাবার পরেই বাঁধল গোলোযোগ। খেয়ার বাবা ছিল কলকাতার এক মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল। নামকরা ডাক্তার। তিনি মনে মনে তাঁর এক প্রাক্তন প্রিয় ছাত্রর সঙ্গে খেয়ার বিয়ে দেবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। ছেলেটিও ডাক্তার হিসাবে মেধাবি।
আর সুচেতন সামান্য এক সরকারি কর্মচারী।
বেঁকে বসলেন খেয়ার ডাক্তার বাবা। খেয়াও জিদ করে বসল, সে সুচেতনকে বাদে আর কাউকে বিয়েই করবে না। এমন পারিবারিক অশান্তি শুরু হল যে, সুচেতনের মায়ের সঙ্গে খেয়ার মায়ের এতদিনের বন্ধুত্ব ভেঙে যেতে চায়।
ঠিক এই সময় সুচেতন নিজে এই সম্পর্ক থেকে সরে দাঁড়াল। সে খেয়াকে বোঝাল, বাবা-মা কত স্বপ্ন নিয়ে, কত যত্নে, কত কষ্ট করে নিজের সন্তানকে বড় করে। কেবলমাত্র নিজেদের বিবাহিত জীবনের সুখের জন্য, সেই বাবা-মাকে কষ্ট দেওয়া এক ধরনের স্বার্থপরতা। তার উপর তোমার বাবা যখন আমাকে নিজের মেয়ের যোগ্য পাত্র বলে মনে করছেন না। সেক্ষেত্রে চিরকালীন একটা অযোগ্যতা বোঝা নিয়ে আমি এই বিয়ে করতে পারব না। ভালোবাসা মানে যাকে ভালোবাসি, তাকে যে কোনও মূল্যে নিজের করে পেতেই হবে, এই মানসিকতায় তার বিশ্বাস নেই।
এই কথাগুলো যখন সুচেতন খেয়াকে বোঝাচ্ছিল, তখন ওর নিজের মধ্যেই অসম্ভব তোলপাড় চলছিল। মনে হচ্ছিল তার হৃদয়টাকে নিয়ে কেউ গামছা নিংড়ানোর মতো নিংড়োচ্ছে। তবুও জিতেছিল সুচেতন। খেয়ার বিয়ে হয়েছিল তাঁর বাবার পছন্দের পাত্রের সঙ্গেই। বিয়ের পরে খেয়া চলে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গে। সুচেতন স্থির করেছিল সে আর বিবাহিত জীবনের মধ্যে ঢুকবেই না।
সুচেতনের বাবা যখন মারা গেলেন, তখন মায়ের অনুরোধে বানু মাসিকে শ্রাদ্ধে নিমন্ত্রণ করতে হেদুয়ার বাড়িতে গিয়েছিল সুচেতন। গিয়ে দেখে খেয়া আছে ওই বাড়িতে। কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গ থেকে এসেছে বাপের বাড়িতে। বানু মাসির সামনে কোনও কথা বলার সুযোগই হয়নি ওদের। নিমন্ত্রণ করে যখন বেরিয়ে আসছে, সেই সময়ে সিঁড়িতে পিছন থেকে ডাকল খেয়া, ‘বুয়াদা, একটু দাঁড়াও। তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে।’
সুচেতন ঘুরে দাঁড়াতেই দেখল, খেয়া খুব দ্রুত নেমে আসছে সিঁড়ি দিয়ে। নেমে সুচেতনের একদম গায়ের কাছে চলে এল খেয়া। খেয়ার চোখে জল। কাছে এসে সুচেতনের দুটো হাত চেপে ধরে বাষ্প জড়ানো গলায় বলল, ‘বুয়াদা, একটা অনুরোধ করব, তুমি রাখবে?’
কতদিন পরে স্পর্শ পেল বুড়ির। সুচেতনের ভিতরে তখন কম্পন। খুব অস্ফুট স্বরে সে বলল, ‘বল, কী কথা?’
‘বুয়াদা, তুমি বিয়ে করে নাও। তুমি না বিয়ে করলে আমি কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না। তন্ময়ের সঙ্গে ঠিকমতো সংসার করতে পারছি না। সব সময় মনে হচ্ছে তোমাকে আমি ঠকিয়েছি। প্লিজ বুয়াদা, এটা তোমার কাছে আমার শেষ অনুরোধ। এই কথাটুকু রেখ।’
এটুকু বলে হাত দুটো ছেড়ে দিল খেয়া। তারপর ধীর পায়ে উঠে গেল সিঁড়ি দিয়ে।

‘কী গো দেখবে, কী দিয়েছে বুড়িদি?’
‘দেখাও।’ কিছুটা কৌতূহলী সুচেতন।
‘দাঁড়াও আনছি।’ শেষ হওয়া চায়ের কাপ দুটো নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ইন্দিরা।
খেয়ার অনুরোধ রেখেছে সুচেতন। সে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত পাল্টেছে। তার ভালোবাসাকে সে নিজের করে না পেলেও, দূর থেকে প্রেমিকার শান্তি, স্বাচ্ছন্দ্য চাওয়াটাও তো এক ধরনের ভালোবাসারই অঙ্গ। তাই ওর মা যখন ওকে বিয়ে করার জন্য অনুরোধ করেছে, তখন আর সে আপত্তি করেনি।
একটা ছোট জুয়েলারি দোকানের কাপড়ের ব্যাগ হাতে ঢুকল ইন্দিরা। সুচেতনের কাছে এসে সেই ব্যাগ থেকে বার করল লাল একটি গয়নার বাক্স। বাক্সটা খুলতেই চমকে উঠল সুচেতন। কী দেখছে সে এটা!
সে দিনটা ছিল খেয়ার জন্মদিন। ডায়মন্ড হারবার বেড়াতে গিয়েছিল ওরা দু’জনে অফিস ছুটি করে। লাঞ্চের পর বিশাল নদীর ধারে ভাঙা কেল্লাটার উপর দু’জন দু’জনের কাঁধ ছুঁয়ে বসেছিল ওরা। তখনই সুচেতন নিজের ব্যাগ থেকে একটা রুপো আর কালো পুঁতি দিয়ে খুব যত্নে বানানো সুন্দর একটা হার খেয়ার গলায় পরিয়ে দিতে দিতে বলেছিল, ‘বুড়ি আজ তোমার জন্মদিনে আমি এমন একটা হার তোমাকে উপহার দিলাম, যা বিয়ের আগে ছেলেরা তার বাগদত্তাকে পরিয়ে দেয়।’
‘ও মা, এটা তো মঙ্গলসূত্র!’ আহ্লাদে বলেছিল খেয়া।
‘আমরা তো আমাদের বিয়ে করার কথা বাড়িতে জানাবই। তার আগে আমি আমার বাগদত্তাকে নিজের করে বেঁধে রাখলাম, এই মঙ্গলসূত্র পরিয়ে।’—খেয়ার নাকে নিজের নাকটা ঘসতে ঘসতে বলেছিল সুচেতন।
‘দেখ, কী সুন্দর এই মঙ্গলসূত্রটা। বুড়িদির চয়েস আছে বলতে হবে। এই হারটা না কি ওর খুব প্রিয়। বেয়ান কিন্তু আমাকে বেশ পছন্দ করে। নইলে এমন সুন্দর...’ গদগদ কণ্ঠে বলেই চলেছে ইন্দিরা।
সুচেতনের কানে ঢুকেও ঢুকছে না অবান্তর কথাগুলো। 
02nd  February, 2025
হতভম্ব হেমন্ত

মন্তর ফোনটা পেয়ে সারা শরীর শিরশির করে ওঠে মলয়ের। প্রথমে বিস্ময়! তারপর লজ্জা, ভয়, সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সেই শিরশিরানিতে। ফোন ছেড়ে একটু ধাতস্থ হতেই একরাশ অস্বস্তি এসে গ্রাস করে মলয়কে। হেমন্ত কি ওকেই সন্দেহ করছে?
বিশদ

09th  February, 2025
মওলা বকশ  ও লাহোরি   দরওয়াজা

দ্বিতীয় আকবর শাহের একার নয়। মুঘল সম্রাটদের কমবেশি সকলের দুর্বলতা হল হাতি। শাহজাহানের আমল থেকেই আস্তাবলে কমপক্ষে ৬ হাজার হাতি থাকা যেন সর্বদাই স্বাভাবিক।
বিশদ

02nd  February, 2025
সেকালের ডুয়েল

১৭৮০ সালের ১৭ আগস্ট। কলকাতার আকাশে ভোরের আলো ফুটে উঠছে। আলিপুরের এক নির্জন অংশে দু’জন বিদেশি একে অপরের দিকে পিস্তল তাক করে দাঁড়িয়ে।
বিশদ

02nd  February, 2025
কুলের  রেসিপি

মসুর ডাল ১ কাপ, কুল ১০০ গ্ৰাম, হলুদ গুঁড়ো  চা চামচ, নুন, চিনি স্বাদমতো, কাঁচালঙ্কা ২-৩টে, তেল পরিমাণ মতো, ফোড়নের জন্য: শুকনো লঙ্কা ২টো, কালো সর্ষে  চা চামচ, গোটা জিরে  চা চামচ, রাঁধুনি  চা চামচ। 
বিশদ

01st  February, 2025
টুকরো  খবর

চীনে নববর্ষ উপলক্ষ্যে ড্রাগন ডান্স সহ এক ভিন্ন ধরনের উৎসবের আয়োজন করা হয় চাওম্যান রেস্তরাঁয়। চীনে নৃত্য ও খাবার দুই-ই বিশেষ জনপ্রিয়। চাইনিজ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই বছরটি ইয়ার অব দ্য স্নেক। তা সমৃদ্ধির প্রতীক। চীনে নববর্ষ পালন হবে, অথচ খাওয়াদাওয়া হবে না তাও কি হয়?
বিশদ

01st  February, 2025
কপির কেরামতি

সেদ্ধ বাঁধাকপি ১ বাটি, ছোলা এবং মটর ডাল বাটা ১ বাটি, কাঁচালঙ্কা-আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদ ১ চামচ, লঙ্কার গুঁড়ো ১  চামচ, গরমমশলা গুঁড়ো ১ চা চামচ, ভাজা মশলা ২ টেবিল চামচ (শুকনো গোটা গরমমশলা, শুকনো লঙ্কা, জিরে, ধনে হালকা করে ভেজে গুঁড়ো করে নিতে হবে), ভাজার এবং রান্নার জন্য প্রয়োজন মতো সর্ষের তেল,  নুন ও চিনি স্বাদ মতো, ফোড়নের জন্য: গোটা শুকনো লঙ্কা, জিরে, হিং। (ধোকা মাখার সময় যদি খুব নরম থাকে তাহলে প্রয়োজনে একটু বেসন মেশানো যেতে পারে।)
বিশদ

01st  February, 2025
দুই বাংলার পোলাও

এপার ও ওপার বাংলার তিন ধরনের পোলাওয়ের রেসিপি জানালেন ইছামতী রেস্তরাঁর কর্ণধার মিতাশ্রী চৌধুরী।
বিশদ

01st  February, 2025
ভ্যালি অব ডলস

শটি আধুনিক প্রযুক্তির পীঠস্থান। সেই সঙ্গে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন হস্তশিল্প। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেল। তাই নানা কারণে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র— জাপান। চারটি প্রধান এবং অসংখ্য ছোট দ্বীপ নিয়ে এই দেশ।
বিশদ

26th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: সিরি ফোর্ট
সমৃদ্ধ দত্ত

সাবধানে পা ফেলতে হবে। দেখে তো মনে হচ্ছে মাটি। ঘাস। পাথর। অনায়াসে পা রেখে রেখে এগিয়ে চলা যায়। একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে অন্য একটি ধ্বংস চিহ্নে যাওয়ার জন্য যে ব্যাসল্ট পাথরের অমসৃণ টুকরোয় সতর্কভাবে পা রাখতে হয়, সে সতর্কতা নিছক পিছলে পড়ে যাওয়ার জন্য? বিশদ

19th  January, 2025
ডক্টর মিশ্র
নন্দিনী নাগ

সল্টলেকে ঝাঁ-চকচকে চেম্বার, একতলা একটা ফ্ল্যাটের পুরোটা নিয়ে। সাদা পাথরের তিন ধাপ সিঁড়ি ডিঙিয়ে কাঠের জাঁকালো সদর দরজা। সেই দরজা পেরিয়ে ভেতরের হলঘরে সোফার মধ্যে শরীর ছেড়ে দেওয়ার পর মিসেস দত্তের মনে ডাক্তারবাবুর প্রতি বেশ সমীহ জন্মাল। বিশদ

12th  January, 2025
অস্তরাগ
সঞ্জয় রায়

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা নদীর জলে গলে গলে যাচ্ছে। বসন্ত বাতাসে চরাচর জুড়ে গোধূলির অদ্ভুত বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি যেন মায়াময়। চিত্রপটে স্যিলুট হয়ে বসে আছে দু’টি নরনারী। জীবনের প্রান্তদেশে পৌঁছে দু’টি মন পরস্পর খুঁজে পেয়েছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অদ্ভুত মিল। বিশদ

05th  January, 2025
অতীতের আয়না: সাহেবি বড়দিন ও নিউ ইয়ার
অমিতাভ পুরকায়স্থ

কাজকর্ম শিকেয় তুলে পাঁচ দিন ধরে বাঙালির দুর্গোৎসব পালন যাঁরা বাঁকা চোখে দেখেন, তাঁদের আঠারো শতকের কলকাতা থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারলে বেশ হতো। সে সময় শহরের সাহেব-মেমদের বড়দিন উপলক্ষ্যে খানা-পিনা-নাচ-গান ও কেনাকাটার হুল্লোড়ের মরশুম চলত দিন দশেক। বিশদ

05th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: ইন্ডিয়া গেট
সমৃদ্ধ দত্ত

গরিব ও মধ্যবিত্তদের কাছে সেই আর্থিক শক্তি কোথায়! রবিবার অথবা ছুটির দিন কিংবা ন্যাশনাল হলিডে হলেই কোনও বৃহৎ শপিং মল অথবা মাল্টিপ্লেক্সে যাবে! অনেকক্ষণ মেনুকার্ড দেখার পর শেষ পর্যন্ত বরাবরের মতোই ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন অর্ডার করার বিলাসিতাও যাদের থাকে না, তারা যাবে কোথায়? বিশদ

05th  January, 2025
কেউ দেখেনি
প্রদীপ আচার্য

নিরাপদর নিরাপদে থাকার সুখ উবে গেল। গ্রামের নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার একটা আলাদা সুখ আছে। সেই সুখের মুখে আজ ঝামা ঘষে দিল একটা জানোয়ার। সবাই সাপের ভয় দেখিয়েছে। বিশদ

29th  December, 2024
একনজরে
মাঘী পূর্ণিমায় পূর্ণকুম্ভে স্নান করতে গিয়ে সঙ্গমে  মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনার এক মহিলার। ডুব দিয়ে তিনি উঠে আসতে পারেননি।   ...

রাজ্যে কৃষিকাজে সেচের জন্য যে পাম্প চলে, সেখানে যাতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা যায়, তার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলগুলিতে মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে রান্নার কাজে এলপিজির বদলে যাতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার হয়, চেষ্টা চলছে তারও। ...

৫৫ বলে ৫২। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের নিরিখে মন্দের ভালো। টানা ব্যর্থতার পর অবশেষে রানে ফেরার ইঙ্গিত মিলল বিরাট কোহলির ব্যাটে। বুধবার মোতেরায় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় একদিনের ...

কালিয়াচকের রাস্তা থেকে এক গৃহবধূকে অপহরণ! এই অভিযোগে পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। ঘটনায় তুমুল আলোড়ন ছড়িয়েছে এলাকায়। শ্বশুরবাড়ির তরফে বধূকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব রেডিও দিবস
১৬০১: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সমুদ্র পথে ভারত আগমন
১৮৩২: লন্ডনে প্রথম কলেরার প্রাদুর্ভাব
১৮৭৯: স্বাধীনতা সংগ্রামী ও কবি সরোজিনী নাইডুর জন্ম
১৮৮২: কলকাতায় প্রথম পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়
১৯৩১: ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে নয়াদিল্লিতে স্থানান্তর হয়
১৯৪৫: অভিনেতা বিনোদ মেহরার জন্ম
১৯৬০: ফ্রান্সের সফল পরমাণু পরীক্ষা
১৯৬৯: পরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের প্রথম বাঙালি গভর্নর ও ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান
১৯৭৪ – উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী ওস্তাদ আমির খাঁর মৃত্যু
১৯৮৫: টেনিস খেলোয়াড় সোমদেব দেববর্মনের জন্ম 
২০১৫: কেশব রেড্ডি, ভারতীয় চিকিৎসক ও লেখক



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৫.৮৮ টাকা ৮৭.৬২ টাকা
পাউন্ড ১০৬.০৭ টাকা ১০৯.৮১ টাকা
ইউরো ৮৮.১৬ টাকা ৯১.৫৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৮৫,৩০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৮৫,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯৪,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯৪,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১ ফাল্গুন, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। প্রতিপদ ৩৫/২০ রাত্রি ৮/২২। মঘা নক্ষত্র ৩৭/১৩ রাত্রি ৯/৭। সূর্যোদয় ৬/১৩/৪৫, সূর্যাস্ত ৫/২৮/১১। অমৃতযোগ রাত্রি ১/৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/৪৩ মধ্যে পুনঃ ১০/৪৩ গতে ১২/৫৮ মধ্যে। বারবেলা ২/৩৯ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৫১ গতে ১/২৬ মধ্যে। 
৩০ মাঘ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। প্রতিপদ রাত্রি ৭/৫২। মঘা নক্ষত্র রাত্রি ৯/০। সূর্যোদয় ৬/১৬, সূর্যাস্ত ৫/২৭। অমৃতযোগ রাত্রি ১/০ গতে ৩/২৮ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/২৯ মধ্যে ও ১০/৩৬ গতে ১২/৫৭ মধ্যে। কালবেলা ২/৪০ গতে ৫/২৭ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৫২ গতে ১/২৮ মধ্যে। 
১৪ শাবান।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
শিয়ালদহের ফুল বাজারে আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ৭টি ইঞ্জিন

11:06:00 PM

ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে মোদি এবং মাস্কের বৈঠক

10:43:00 PM

বীরভূমের হেতমপুরে একটি বাড়িতে আগুন
বীরভূমের দুবরাজপুরের হেতমপুর পঞ্চায়েতের চিৎগ্রামে একটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড। জানা গিয়েছে, ...বিশদ

10:22:00 PM

এসআই অমিতাভ মালিক হত্যা মামলা: দার্জিলিং আদালতে আত্মসমর্পণ বিমল গুরুংয়ের
রাজ্য পুলিসের এসআই অমিতাভ মালিক হত্যা মামলায় আজ, বৃহস্পতিবার দার্জিলিং ...বিশদ

10:17:00 PM

উত্তরপ্রদেশের আরালি ঘাটে চলছে আরতি

10:04:00 PM

ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজের মধ্যে শুরু হয়েছে বৈঠক

09:47:00 PM