Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

’৪২-এর কলকাতা

‘ব্রিটিশ ভারত ছাড়ো...’ গান্ধীজির ডাকে ১৯৪২ সালের আগস্টে রাস্তায় নেমেছিল কলকাতাও। আম বাঙালির প্রতিবাদের সেই ইতিহাস ফিরে দেখলেন সৌম্যব্রত দাশগুপ্ত।

তুমুল শঙ্খধ্বনি...! চারদিক তোলপাড় করে রাজপথে মিছিল। ছুটে চলেছে উন্মত্ত জনতা। এই পথ হয়তো থামবে হাসপাতালে, মর্গে বা শ্মশানে। সব জেনেও ওরা ছুটে চলে।
১৯৪২ সালের গ্রীষ্মকাল, গান্ধীজিকে সহসা অপরিচিত মনে হয়। তাঁর চিরচেনা আপোষপন্থী গলায় অন্য সুর। কয়েক বছর আগে সুভাষচন্দ্রের দূরদর্শী ভবিষ্যদ্বাণীর সাফল্যে উদ্বেল গান্ধী। ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতার ফলেই আন্দোলনে নামার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল মনে প্রাণে চাইছিলেন ক্রিপস প্রস্তাব ব্যর্থ হোক। ২৩ মার্চ ক্রীপস্ ভারতে আসার আগেই, ১০ মার্চ ভাইসরয় লিনলিথগোকে লিখেছিলেন— আমাদের উদ্দেশ্য যে সৎ, তা প্রমাণ করবার জন্য ক্রিপস মিশন অপরিহার্য।... যদি ভারতীয় দলগুলোর দ্বারা ক্রিপস প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়,... জগতের সামনে আমাদের সাধুতা প্রমাণ করা যাবে।’ ক্রিপস প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে চার্চিল খুশি হয়ে জানালেন যে, লন্ডনে ফিরে এলে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবেন। ইতিমধ্যেই জাপানের কল্পিত আক্রমণের করতে আগ্রহী তিনি। ৮ জুন গান্ধীজি সোসালিস্ট নেতা ইউসুফ মেহের আলীকে বললেন, ‘আমি নিশ্চিত যে ব্রিটিশ শাসন কোনও অংশেই উৎকৃষ্ট নয়।’ মেহের আলী তাঁকে পরামর্শ দিলেন ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের। জওহরলাল বা প্যাটেলরা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিদ্রোহের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু চাপে পড়ে তাঁদের রাজি হতে হয়।
৭ আগস্ট, বোম্বাইতে বসল অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) অধিবেশন। কমিউনিস্ট সদস্যরা প্রথম থেকেই ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনের তীব্র বিরোধী। গোপালাচারী, নেহরুদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ৮ আগস্ট বিপুল সংখ্যাধিক্যে ভারত ছাড়ো প্রস্তাব গ্রহণ করা হল। ৯ আগস্ট সকালেই প্রায় সব প্রথম সারির নেতাই গ্রেপ্তার হলেন। গ্রেপ্তারির উদ্যোগের কথা আগে জেনে গিয়েছিলেন নেহরু, প্যাটেলরা। কিন্তু আত্মরক্ষার ন্যূনতম পন্থাটুকুও তাঁরা অবলম্বন করেননি।
কলকাতা! রাত্রির অন্ধকার নেমেছে শহরে। ঘরের ভেতর ঘুম নেই। মানুষের চোখে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা আকাশবাণীর জন্য। ‘আমি সুভাষচন্দ্র বলছি! ভারতের মহাসংগ্রামে যোগ দিন! এই আন্দোলন স্বাধীনতার অন্তিম সংগ্রাম।’ ইথার তরঙ্গে বিদ্রোহের বার্তা। উদ্বেল কলকাতা। নেতা নেই, এ যেন মানুষের বিদ্রোহ। মৃত্যুর মহোৎসবে প্রধান ঋত্বিক কলকাতার ছাত্র সমাজ। ওরাই তো ভাগ্যদেবীর যজ্ঞদেবীর নিত্য বলিদান।
১৩ আগস্ট কলকাতায় শুরু হল ছাত্র আন্দোলন। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়, ভাবানীপুর, ওয়েলিংটন স্কোয়ার জুড়ে পড়ুয়াদের মিছিলের কলরব। এই কলকাতাকে চেনা যায় না। এই জঙ্গি মেজাজ আগে দেখা যায়নি। সকাল থেকেই প্রতিটি স্কুল-কলেজে ধর্মঘট। একটা বিরাট মিছিল শ্যামবাজার থেকে কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট ধরে এগিয়ে আসছে। ‘ইংরেজ ভারত ছাড়’ ধ্বনিতে কম্পিত ধরণী। সভা হবে ওয়েলিংটন স্কোয়ারে। মিছিল এসে পৌঁছল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। বেপরোয়া সাইরেন সহসা আর্তনাদের সুরে সাবধান হতে বলে। নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর নেমে এল লাঠি, টিয়ার গ্যাস। দক্ষিণ কলকাতার হাজরা পার্ক থেকে শুরু হওয়া মিছিল পুলিসের সম্মুখীন হল ভবানীপুরে, যদুবাবুর বাজারের সামনে। ব্রিটিশ পুলিসের বেপরোয়া আক্রমণের মোকাবিলায় ছাত্ররা হাতে তুলে নিল ইট। মুহূর্তে ভবানীপুর রণক্ষেত্র। শ্রদ্ধানন্দ পার্ক থেকে একটি মিছিল ওয়েলিংটন স্কোয়ারের কাছে এলে সার্জেন্টরা তার উপর গুলি চালায়। রক্তাক্ত হল রাস্তা। বিকেল তিনটে নাগাদ মেডিক্যাল কলেজের সামনে সেখানকার ছাত্ররা একটি মিছিল বের করে। তাদের সঙ্গে কারমাইকেল মেডিকেল কলেজ, ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুলের ছাত্ররাও উপস্থিত। মিছিলের নেতৃত্বে ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ইব্রাহিম, জেনারেল সেক্রেটারি শিশিরকুমার বসু। হ্যারিসন রোড দিয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ হয়ে মিছিল তখন মিশন রো-র পথে। মিশন রো আসতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সার্জেন্ট এবং বন্দুকধারী গোর্খা পুলিস। তিন মিনিটের মধ্যে মিছিল ভেঙে ছারখার। শিশিরকুমার বসু, শচীন চৌধুরী, রবি বসু, কালিদাস বসু, কুলভূষণ সেনগুপ্ত আহত হলেন। সারা কলকাতায় ১৩ আগস্ট বেলা দুটো পর্যন্ত পুলিসের পাশবিক অত্যাচার অব্যাহত থাকে।
প্রতিবাদী একটি মিছিল ফলওয়ার্ড ব্লকের নেতাদের উদ্যোগে এগিয়ে চলে শ্যামবাজার থেকে কর্নওয়ালিস্ট স্ট্রিট দিয়ে। শ্রীমাণী বাজারের কাছে মিছিল আসতেই পুলিসের গুলি ছুটে এলো। লুটিয়ে পড়লেন ক্যালকাটা ট্রেনিং স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বৈদ্যনাথ সেন। কলকাতার প্রথম শহিদ বৈদ্যনাথ। সিমলা-কাঁসারিপাড়া অঞ্চলের ছাত্রকর্মী কৃষ্ণ কুণ্ডু, বুলু বোস, লক্ষ্মী হাজরা সমর দে বিদ্যাসাগর কলেজের সামনে একটি ট্রামে আগুন লাগিয়ে দিলেন।
বৈদ্যনাথ সেনকে ছাত্ররা তুলে নিয়ে শোয়ালেন ২ নম্বর সরকার বাইলেনের রোয়াকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। কলকাতা জুড়ে আগুন লেগে গেল। পরের দিন ১৪ আগস্ট বৈদ্যনাথ সেনের মৃতদেহ নিয়ে একটি মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হল শ্রীমানী বাজারের সামনে। পুলিস বাধা দিল। এবার ছাত্রদের সঙ্গে পুলিসের রাজপথে যুদ্ধ। কয়েক মুহূর্তে রণক্ষেত্র কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট। পুলিসের গুলি লাগল বোনের বিয়ের জন্য বাজার করতে আসা দিলীপ কুমার ঘোষ নামে এক তরুণ ছাত্রের বুকে। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু।
একই স্থানে পর পর দু’দিন, শহিদ হলেন দু’জন। ১৪ আগস্ট শুরু হয়ে গেল জনযুদ্ধ। কলকাতার সমস্ত অঞ্চলে দোকানপাট বন্ধ। বিডন স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ, আপার সার্কুলার রোড, মেছুয়া বাজার থেকে নিমতলা ঘাট স্ট্রিট। পুলিসের সঙ্গে মানুষের লড়াই। আহত হয় ৬৫ জন। দলে দলে ছাত্ররা উপস্থিত ইট, সোডার বোতল, ফায়ার আলার্ম পোস্ট নিয়ে। বাগবাজার থেকে ঠেলা গাড়ি ভরে ইট আর সোডার বোতল জড়ো হল রাস্তায়। মধ্য কলকাতার গতি পথে গোপাল মুখার্জি, ভানু বসুরা জঙ্গি আন্দোলন চালাচ্ছেন। স্কটিশ চার্চ কলেজের সামনে থেকে আসা একটা ছাত্র মিছিল কর্নওয়ালিশ স্ট্রিটের সমস্ত ট্রাম লাইন বিধ্বস্ত করে। বন্ধ হল ট্রাম চলাচল। বাড়ির দুই পাশ থেকে জনগণের সমর্থন। পুলিসের উপর সমানে ইট ও সোডার বোতল বৃষ্টি। আগস্টের অগ্নিগর্ভ কলকাতার প্রধান শক্তি ছাত্র সমাজে। রক্তক্ষয়ী লড়াইতে তাঁদের সঙ্গী হলেন কলকাতার ক্লাবগুলি। দক্ষিণ কলকাতার কালচার ক্লাবের সদস্যরা মুদিয়ালী রোডে বোমা বানাতে শুরু করে। উত্তর কলকাতার সিমলা ব্যায়াম সমিতির কর্মকর্তা অমর বসুর নেতৃত্বে ক্লাব যোগ দিয়েছিল আন্দোলনে। রাজবল্লভ পাড়া ব্যায়াম সমিতি, বাগবাজারে পুয়োর ব্রাদার ক্লাব, বোসপাড়া অঞ্চলের তরুণ ব্যায়াম সমিতি, দেশবন্ধু পার্ক সংলগ্ন ব্যায়াম সমিতি আন্দোলনের পুরভাগে। হাতিবাগানের মিত্রা সিনেমার পাশের গলির মধ্যে ‘দেশ গৌরব ব্যায়াম সমিতি’-র যোগ দিল আন্দোলনে। কলকাতা জেগে উঠেছে বহু যুগের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি মতো। মানুষের প্রাণে প্রাণে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিস রিপোর্ট বলছে শহরের মধ্যবিত্ত বাড়ির মহিলাদের মধ্যে সুভাষচন্দ্রের বক্তৃতা শোনার আগ্রহবেশী। উত্তর কলকাতায় ছাত্রদের সঙ্গে পুলিসের যুদ্ধে আশপাশের বাড়ি থেকে কাপড়ে লঙ্কার গুঁড়ো বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসে পুলিসের দিকে। বউবাজার অঞ্চলের নবীনচাঁদ বড়াল স্ট্রিটে পতিতালয়ের মেয়েরা রুখে দাঁড়াল বিদেশি সৈন্যদের বিরুদ্ধে। তাদের অত্যাচারের কথা সুভাষচন্দ্র বসুকে বলে দেওয়ার ভয় দেখাল।
সরকারি রিপোর্টে যুগান্তর দলের নেতৃস্থানীয় কর্মী সুধীরকুমার ঘোষকে কলকাতার বোতল বোমা বিশেষজ্ঞ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের ড. সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ছাত্র হর্ষনারায়ণ বসু নলিনী সরকার স্ট্রিটের মেসবাড়িতে বোমার কারখানা গড়ে তুলেছিলেন। কংগ্রেস সোস্যালিস্ট পার্টির কর্মী হরিপদ মজুমদার একটি হ্যান্ড গ্রেনেড বানানোর কারখানা গড়ে তোলেন। অম্বিকা মজুমদার ও অন্যান্য সোস্যালিস্ট পার্টির কর্মীরা ওয়েলিংটন স্কোয়ারে কাছে ইলেকট্রিক বাল্ব বোমা তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। আপার সার্কুলার রোডের ১২৩/১ নং বাড়ি তল্লাসি করে পুলিস পেল বোমার কারখানা। আন্দোলনচলাকালীন মির্জাপুর স্ট্রিটের ছাত্র কর্মীদের সঙ্গে জয়প্রকাশ নারায়ণ, ড. রামমনোহর লোহিয়া যোগাযোগ করে একটি গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে উৎসাহ দিলেন।
কলকাতার দখল নিতে পথে নামল ছাত্ররা। এক অদ্ভুত গেরিলা স্ট্রিট ফাইট। উত্তম কলকাতায় হেমন্ত বসু ও অমর বসুর নেতৃত্বে প্রতিটি রাস্তা আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। বিদ্যাসাগর কলেজ ও পার্শ্ববর্তী স্কুলগুলোর দায়িত্ব নিলেন শশধর গাঙ্গুলি, সিটি কলেজ ও সেন্ট পলস কলেজের দায়িত্ব নিলেন চিত্ত দাস, সেন্ট জেভিয়ার্স ও আশুতোষ কলেজের দায়িত্ব রবি দাশগুপ্তের উপর, মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজ ও উত্তর কলকাতার অন্যান্য স্কুলে নৃপেন মজুমদার। কলকাতার রাস্তা প্রতিদিন যুদ্ধক্ষেত্রের রূপ নিচ্ছিল। শহরের পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে ১৬ আগস্ট এক রিপোর্টে সরকার বলল ‘কলকাতা যেন এক অসম লড়াই করছে।’ নেতাহীন আন্দোলনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিল সাধারণ মানুষ।
১৫ আগস্ট থেকে কলকাতার অবস্থা আরও পাল্টে গেল। শহরের টেলিফোনের তার কেটে, ল্যাম্পপোস্ট তুলে ফেলে, ফায়ার অ্যালাম বক্স ভেঙে রাস্তায় রাস্তায় অবরোধ। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার ট্রাম চলাচল বন্ধ হল। পাড়ায় পাড়ায় স্ট্রিট ফাইটের প্রস্তুতি। চিৎপুর-কাশীপুর অঞ্চলের মিল শ্রমিকরা ইউরোপীয় কোম্পানির দখল করতে ঘেরাও শুরু করলেন। সাধারণ মানুষের লড়াইকে রুখতে ১৬ আগস্ট থেকে কলকাতার উপর নৃশংস অত্যাচার শুরু করল পুলিস। এল মিলিটারির গাড়ি। মেশিনগান চলল কলকাতায়। আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই মৃতের সংখ্যা ছাড়ানো কুড়ি জন। আহতের সংখ্যা কয়েকশো। শহিদের তালিকায় সাধারণ মানুষের সংখ্যা রাজনৈতিক কর্মীদের থেকে বেশি ছিল। কলকাতার শহিদের তালিকায় ছিল সুরেন্দ্রনাথ গড়াই, অনাথ নাথ চক্রবর্তী, বলদেও সাহু, পাঁচুগোপাল সরকার, কালিদাস চক্রবর্তী, অমরেন্দ্রনাথ দাস, কানাইলাল মান্না, লক্ষ্মীনারায়ণ দত্ত, বৈদ্যনাথ সেন, শ্রীমতি দাসী, রঙ্গিলা কুরমী, জং বাহাদুর প্রভৃতি মানুষের তালিকায় বিভিন্ন শ্রেণীরও ক্ষেত্রের মানুষের নাম দেখা যায়। এযেন প্রাণের ডাকে পথে নামা। আগস্ট আন্দোলনের কলকাতায় এই সংগ্রাম কিছুটা ছিল প্রকাশ্য, তবে গোপন অন্তর্ঘাতমূলক কাজই এখানে প্রাধান্য পায়। জনগণের তীব্র ব্রিটিশবিরোধিতাই এই আন্দোলনের জন্য তাদের মানসিক প্রস্তুতির ভিত্তি রচনা করে। ইতিহাস ক্ষমতার কথা বলে, কিন্তু ক্ষমতার উত্থান-পতনের পিছনে থাকা হাজার হাজার মানুষ অন্ধকারেই থাকে। কলকাতার সাধারণ মানুষ সেদিন যে প্রতিবাদের ইতিহাস রচনা করেছিল, তা অনন্য। সুবোধ ঘোষের ‘তিলাঞ্জলী’, বিমল করের ‘দেওয়াল’ উপন্যাসে ধরা আছে সেদিনের তিলোত্তমার বিদ্রোহী রূপ। 
18th  August, 2024
স্বপ্ন হলেও সত্যি
কলহার মুখোপাধ্যায়

মামা বলল, ‘আগে ভালো করে লাটাই ধরতে শেখ, তারপর ঘুড়ি ওড়াবি।’ বাবা বলল, ‘আগে ভালো করে সিট বেল্ট বাঁধতে শেখ, তারপর গাড়ির স্টিয়ারিং ধরবি।’   পাড়ার ন্যাপাদা বলল, ‘মাঠে ঠিকমতো দৌড়তে শেখ আগে, তারপর বলে পা দিবি
বিশদ

15th  September, 2024
ঘুড়ির পিছে ঘোরাঘুরি
রজত চক্রবর্তী

আরও আরও উপরে। আরও উপরে। ওই আমাদের বাড়ি ছোট হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। বুল্টিদের বাড়ির ছাদ ছোট্ট হয়ে গিয়েছে। দড়িতে টাঙানো বুল্টির লাল জংলা ফ্রক আর দেখা যাচ্ছে না। করদের মাঠ, পুকুর, আম-জাম-পাকুড়-লিচুগাছেদের ভিড়, বাড়িগুলো সব ছোট ছোট, শুধু ছাদের পর ছাদ।
বিশদ

15th  September, 2024
মলমাস
রোহিণী ধর্মপাল 

জিন্স পরিহিতা রীতিমতো আধুনিকা বললেন, ‘ঠাকুরমশাই, গৃহপ্রবেশে কোনও ত্রুটি রাখতে চাই না। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ হলে আমাদের খুব সুবিধা হয়।’ অফিসের ফোন আসায় একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন সঙ্গী যুবক। এবার ফোনটা মিউট করে সুবেশ ছেলেটি বললেন, ‘তারপরেই আসলে আবার আমাদের অস্ট্রেলিয়া ফিরতে হবে তো! বিশদ

08th  September, 2024
মলিন মানুষ
সন্দীপন বিশ্বাস

সারা বাড়ি আনন্দে গমগম করছে। আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়ে যেন উৎসবের হাট বসেছে। বাড়ির একমাত্র ছেলে শুভদীপের বিয়ে। বিয়ের দিন সবাই সেজেগুজে প্রস্তুত। এখনই বর বেরবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে। বাবা তাড়া দিচ্ছে শুভদীপকে। ‘তাড়াতাড়ি বেরো। এতটা পথ যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছতে না পারলে সমস্যা হয়ে যাবে।’  বিশদ

08th  September, 2024
যব ছোড় চলে...

আজ, ১ সেপ্টেম্বর নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের মৃত্যুদিন। ১৩৭ বছর আগে নির্বাসিত নবাবের মৃত্যু ঘিরে আজও রয়েছে হাজারো প্রশ্ন। মেটিয়াবুরুজ ঘুরে সেই অতীতের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার।
বিশদ

01st  September, 2024
বর্ষামঙ্গল
শ্যামল চক্রবর্তী

কেশববাবু ছাতা কিনেছেন। প্রয়োজনে নয়, দুঃখে! হেড অফিসের ছোটবাবু কেশব দে রিটায়ার করার পর থেকেই দিনরাত স্ত্রীর গঞ্জনা শুনতে শুনতে, এক বর্ষার সকালে বেরিয়ে পড়েছেন। গণশার দোকানে পাউরুটি আর ঘুগনি দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে মেট্রোগামী অটোতে চেপে বসলেন। বিশদ

25th  August, 2024
কেন মেঘ আসে...
কলহার মুখোপাধ্যায়

‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে...’, তবে এই তো আর ক’দিন। এক কী দেড় মাস! তার মধ্যেই দুগ্গা চলে আসবে। তখন আকাশ ফুঁড়ে রোদ্দুর। মেঘগুলোর রং যাবে সব পাল্টে। আইসক্রিম আইসক্রিম মেঘ চড়ে বেড়াবে আকাশে। তখন মালতির একটু স্বস্তি। বিশদ

25th  August, 2024
মৃত্যুর মুখোমুখি

কারাগারের নিস্তব্ধতা চিরে ছুটে আসছে শব্দ। মুজফ্‌ফরপুর জেলের কোনায় কোনায় তখনও জমাট বাঁধা অন্ধকার। কনডেমড সেলের মেঝেয় চুঁইয়ে পড়েছে সামান্য আলোর রেখা। সেই আলোয় স্পষ্ট দূরের অন্ধকারে শক্ত কাঠের পাটাতনে দুলতে থাকা মরণ-রজ্জু। বিশদ

18th  August, 2024
বেগম, কন্যা ও রবীন্দ্রনাথ
সমৃদ্ধ দত্ত

‘ম্যাডাম, আমাদের সোর্স খুব কিন্তু কনফার্মড! খুব ডেলিকেটও। বাইরে এই খবরটা চলে গেলে সমস্যা হবে।’ বললেন আর এন কাও। রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর প্রধান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে। কী করা উচিত? ম্যাডাম হলেন প্রধানমন্ত্রী। ইন্দিরা গান্ধী চিন্তিত মুখে বললেন, ‘তাহলে আমাদের কোনও অফিসারকে এর মধ্যে ইনভলভ করার দরকার নেই। আপনি নিজেই যান।’ 
বিশদ

11th  August, 2024
পদ্মাপারে চীনের ফুটপ্রিন্ট

আমেরিকাকে ‘সবক’ শেখাতে শেখ হাসিনা জড়িয়ে ধরেছিলেন চীনকে। তাঁর শেষ চীন সফর—৮ জুলাই।বেজিংয়ের জন্য বাংলাদেশের দুয়ার হাট করে খুলে দিয়েছিলেন হাসিনা।
বিশদ

11th  August, 2024
অবন ঠাকুরের বাগানবাড়ি

কলকাতার খুব কাছেই কোন্নগরে গঙ্গার পশ্চিম তীরে ‘অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বাগানবাড়ি’, যেন একটুকরো ছোট্ট শান্তিনিকেতন। ‘জোড়াসাঁকোর ধারে’ বইয়ে যে বাড়ির স্মৃতিচারণ করেছেন অবন ঠাকুর। সেই বাগান বাড়ি ঘুরে তার হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার বিশদ

04th  August, 2024
রং কই রং দাও? গুরুর আদেশ! রং তুলি নিয়ে বসলেন নন্দলাল। তারপর..? 
সুশোভন অধিকারী, প্রাক্তন কিউরেটর নন্দন, কলাভবন বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন 

শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক সত্ত্বা ছিল। তিনি যেমন কড়া শিক্ষক, তেমনই ছিলেন ছাত্র অন্তঃপ্রাণ। শিল্পের জন্যই তিনি নিবেদিত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর কাকা-ভাইপোর সম্পর্ক। বয়সের ব্যবধান মাত্র ১০ বছর। কিন্তু, লেখায় রবীন্দ্রনাথ, আঁকায় অবন ঠাকুর, এ এক অদ্ভুত মেলবন্ধন। বিশদ

04th  August, 2024
উত্তমপুরুষ: সিঁড়ি থেকে নামার সময় মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন উত্তমদা
রঞ্জিত মল্লিক

উত্তম কুমারের সঙ্গে আমার গোটা পাঁচেক ছবি করার সৌভাগ্য হয়েছিল। প্রথম ছবি ছিল ‘মৌচাক’। আর শেষ ছবি ‘ওগো বধু সুন্দরী’। প্রথমেই একটা কথা বলে রাখা ভালো, আমি এরকম সারা ভারতে দেখিনি। পৃথিবীতেও আর কোথাও আছে কিনা জানি না। বিশদ

28th  July, 2024
উত্তমপুরুষ: হাত নাড়তে নাড়তে ইডেনে নামলেন উত্তম জেঠু 
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়

বাবার (শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে যখন উত্তম কুমার কাজ করছেন, আমি তখন খুবই ছোট। কাজেই উত্তম কুমার কী, কেন, সেই বিষয়ে আমার কোনও আগ্রহই ছিল না। বিশদ

28th  July, 2024
একনজরে
চারদিন ধরে বিদ্যুৎহীন ছিল পূর্বস্থলীর বৈদ্যপুর গ্রাম। সেখানকার মানুষ বারবার বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে সমস্যার কথা জানিয়েও সুরাহা পাননি। বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জলেরও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অবশেষে সোমবার তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে পারুলিয়া-জামালপুর সড়ক অবরোধ করেন ...

চারিদিক আগাছায় ভরা। তার মধ্যে ছোট্ট দু’টি ঘরে চলছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ঘরের দেওয়ালেও ধরেছে ফাটল। ফলে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো অবস্থা ...

আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পিজিটি ও জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতিতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের দুর্ভোগ চরমে। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ প্রথম থেকেই। এবার চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই রোগীদের ছুটি নিতে ‘চাপ’ সৃষ্টির অভিযোগ উঠল। ...

ব্যবহৃত সিরিঞ্জ বেঁকিয়ে ফেলার দরকার নেই। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ এমনই নির্দেশ দিতেন ওয়ার্ডের নার্সদের। হাসপাতাল সূত্রে মিলেছে এই ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মস্থলে জটিলকর্মে অনায়াস সাফল্য ও প্রশংসালাভ। আর্থিক দিকটি শুভ। ক্রীড়াস্থলে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৬৩০: আমেরিকার বোস্টন শহর প্রতিষ্ঠিত হয়
১৮৪৬: সাপ্তাহিক ‘দর্পণ’ প্রকাশিত হয়
১৮৬৭: চিত্রশিল্পী গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম
১৯০৫: বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা করেন ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি
১৯১৫: জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী  মকবুল ফিদা হুসেনের জন্ম
১৯২৪: হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির জন্য মহাত্মা গান্ধীর অনশন
১৯৪০: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নেতৃত্বে ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ শুরু হয়
১৯৪৪: বিশিষ্ট অভিনেতা বিভু ভট্টাচার্যের জন্ম
১৯১৫: চিত্রশিল্পী এম এফ হুসেনের জন্ম
১৯৫০: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্ম
১৯৫৪: কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর মৃত্যু 
১৯৬৫: প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার অরবিন্দ ডি সিলভার জন্ম
১৯৭০:  প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার অনিল কুম্বলের জন্ম
১৯৭৭: ইংরেজ উদ্ভাবক ও ফটোগ্রাফির পুরোধা উইলিয়াম টলবোটের মৃত্যু
১৯৮০: পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজের জন্ম
১৯৮৬: ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জন্ম
১৯৯৯: কবি ও গীতিকার হসরত জয়পুরির মৃত্যু 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৭ টাকা ৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৬৫ টাকা ১১২.২০ টাকা
ইউরো ৯১.৫৭ টাকা ৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৪০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৮,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৮,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১ আশ্বিন, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। চতুর্দশী ১৫/৪৫ দিবা ১১/৪৫। শতভিষা নক্ষত্র ২১/৫ দিবা ১/৫৩। সূর্যোদয় ৫/২৭/২৫, সূর্যাস্ত ৫/৩৪/৫৫। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/১৫ মধ্যে পুনঃ ৭/৪ গতে ১১/৭ মধ্যে । রাত্রি ৭/৫৭ গতে ৮/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৯/৩২ গতে ১১/৫৪ মধ্যে পুনঃ ১/৩০ গতে ৩/৫ মধ্যে পুনঃ ৪/৪০ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ৭/৫৭ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৮ গতে ৮/২৯ মধ্যে পুনঃ ১/১ গতে ২/৩১ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৩ গতে ৮/৩২ মধ্যে।   
৩১ ভাদ্র, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। চতুর্দশী দিবা ১১/৫। শতভিষা নক্ষত্র দিবা ২/২৮। সূর্যোদয় ৫/২৭, সূর্যাস্ত ৫/৩৭। অমৃতযোগ দিবা ৭/৫২গতে ১০/১৬ মধ্যে ও ১২/৪০ গতে ২/১৬ মধ্যে ও ৩/২ গতে ৪/৪০ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১৬ মধ্যে ও ৮/৪০ গতে ১১/৬ মধ্যে ও ১/২৭ গতে ৩/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৮ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ১/৩ গতে ২/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৬ গতে ৮/৩৫ মধ্যে।  
১৩ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আর জি কর কাণ্ড: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্যাতিতার বাড়িতে সিবিআই

11:57:47 PM

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তি, জাতীয় সড়ক অবরোধ
বন্যা বিধ্বস্ত আরামবাগে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের ...বিশদ

10:51:00 PM

এনসিপি (এসসিপি)-তে যোগদান করলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিধায়ক বাপু সাহেব তুকারাম পাথারে

10:18:00 PM

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয়ী ভারতীয় পুরুষ হকি দলকে শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির

10:13:00 PM

আইএসএল: গোয়াকে ২-১ গোলে হারাল জামশেদপুর

09:35:00 PM

মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বিশেষ টিম তৈরি করল খড়্গপুর জিআরপি
দেশের সর্বোচ্চ আদালত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই ...বিশদ

09:28:00 PM