শীতের শুরুতেই গরম গরম ডাম্পলিংয়ে মজে যাক মন। একপদ নিরামিষ ও একপদ আমিষ ডাম্পলিংয়ের রেসিপি দিলেন ইউয়াচা রেস্তরাঁর শেফ। রেসিপি সংকলনে কমলিনী চক্রবর্তী।
ভেজিটেরিয়ান চাইভ ডাম্পলিং
উপকরণ: ফিলিংয়ের জন্য: গাজর ২০০ গ্রাম, সেলেরি ২০০ গ্রাম, পানিফল ১০০ গ্রাম, পোট্যাটো স্টার্চ ৩০ গ্রাম, নুন ও মরিচ স্বাদ মতো, আদার রস ১০ মিলি, তিলের তেল ১ চামচ, পেঁয়াজকলি কুচি ১৫ গ্রাম।
ডাম্পলিংয়ের জন্য: ময়দা ১০০ গ্রাম, পোট্যাটো স্টার্চ ১০০ গ্রাম, পেঁয়াজকলির রস ১০০ গ্রাম।
পদ্ধতি: গাজরের খোসা ছাড়িয়ে ছোট টুকরো করে নিন। পানিফল খোসা ছড়িয়ে ছোট টুকরো করে নিন। সেলেরি কুচিয়ে কেটে নিন। এবার এইসব সব্জি হালকা ভাপিয়ে জল ঝরিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে ভাপানো সব্জি দিন। তার সঙ্গে পেঁয়াজকলি কুচি মেশান, পোট্যাটো স্টার্চ মেশান। নুন ও মরিচ মিশিয়ে ভালো করে ভাজুন। ভাজা হলে একটা ছড়ানো থালায় এই মিশ্রণ ঢেলে ঠান্ডা হতে দিন।
ডাম্পলিং তৈরির জন্য: ময়দা ও পোট্যাটো স্টার্চ একসঙ্গে মেশান। পেঁয়াজকলির রসটা ফোটান। সেই রস অল্প অল্প করে ময়দার মিশ্রণে ঢালুন ও ময়দা মাখতে থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত ময়দাটা বেশ ভালোভাবে মাখা না হচ্ছে ততক্ষণ পেঁয়াজকলির রস মিশিয়ে মেখে নিন। অল্প নুন দেবেন। এবার এই মাখা ময়দার মিশ্রণ থেকে ছোট লেচি কেটে তা পাতলা করে বেলে নিন। তাতে চামচের সাহায্যে সব্জির পুর ভরে মুখটা আটকে দিন। এবার ডাম্পলিং স্টিমার একটু গ্রিজ করে তাতে এই ডাম্পলিংগুলো সাজিয়ে ফুটন্ত জলে স্টিম করে নিন অন্তত মিনিট দশেক। গরম পরিবেশন করুন।
চিকেন করিয়েন্ডার ডাম্পলিং
উপকরণ: ফিলিংয়ের জন্য: চিকেন কিমা ৬০০ গ্রাম, টোবান স্যস ১০০ গ্রাম, পানিফল ৫০ গ্রাম, ধনেপাতা ৫০ গ্রাম, লাল পেঁয়াজ ৫০ গ্রাম, তিলের তেল ৫ গ্রাম, নুন ও মরিচগুঁড়ো স্বাদ মতো।
ডাম্পলিংয়ের জন্য: ময়দা ১০০ গ্রাম, পোট্যাটো স্টার্চ ৪০ গ্রাম, লাল বাঁধাকপির রস ১৭০ গ্রাম।
পদ্ধতি: ফিলিং তৈরি করার জন্য: চিকেন কিমা সেদ্ধ করে জলটা আলাদা রেখে দিন। তারপরি কিমা বেটে নিন। তাতে নুন মরিচগুঁড়ো ও কাঁচা লঙ্কা মেশান। পানিফল খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে নিন। পেঁয়াজও খোসা ছাড়িয়ে কেটে নিন। তারপর তা হালকা গরম জলে একবার ফুটিয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। এবার কড়াইতে তিলের তেল গরম করে নিন। তাতে সেদ্ধ করা উপকরণগুলো ভাজুন। তারপর চিকেন দিন টোবান স্যস দিন অল্প চিকেন ব্রথ দিয়ে নুন ও মরিচ মিশিয়ে ফোটান। পুর শুকনো হলে ও সব উপকরণ একসঙ্গে মিশে গেলে নামিয়ে নিন। একটা ছড়ানো থালায় রেখে ঠান্ডা করে নিন।
ডাম্পলিং তৈরি করার জন্য: ময়দা ও পোট্যাটো স্টার্চ একসঙ্গে মেশান। লাল বাঁাধাকপির রসটা ফোটান। সেই রস অল্প অল্প করে ময়দার মিশ্রণে ঢালুন ও ময়দা মাখতে থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত ময়দাটা বেশ ভালোভাবে মাখা না হচ্ছে ততক্ষণ বাঁধাকপির রস মিশিয়ে মেখে নিন। অল্প নুন দেবেন। এবার এই মাখা ময়দার মিশ্রণ থেকে ছোট লেচি কেটে তা পাতলা করে বেলে নিন। তাতে চামচের সাহায্যে চিকেনের পুর ভরে মুখটা আটকে দিন। এবার ডাম্পলিং স্টিমার একটু গ্রিজ করে তাতে এই ডাম্পলিংগুলো সাজিয়ে ফুটন্ত জলে স্টিম করে নিন অন্তত মিনিট দশেক। গরম পরিবেশন করুন।
চীন দেশে ডাম্পলিং খাওয়ার রীতি বহু যুগ ধরে চলে আসছে। শোনা যায় ঝ্যাং ঝংজিং নামে এক ব্যক্তি নাকি প্রথম এই খাবারটি রাঁধেন। সেই সময় ডাম্পলিং বানানোর জন্য তিনি ময়দা, ল্যাম্ব আর লঙ্কার ব্যবহার করেছিলেন। ল্যাম্ব দিয়ে পুর বানিয়ে তাতে সামান্য কিছু হার্ব মেশানো হয় স্বাদ বাড়ানোর জন্য। তারপর তা ময়দার খোলায় ভরে সেদ্ধ করে পরিবেশন করা হয়েছিল। সেই থেকেই ডাম্পলিং চীনের লোকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। গ্লোবালাইজেশনের যুগে ডাম্পলিং, ডিমসাম বা মোমো এখন গোটা পৃথিবীতেই আদৃত। চীনে ঘরানার এই খাবারের স্বাদ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সর্বত্র। সাধারণত ডাম্পলিং স্ন্যাক্স হিসেবেই খাওয়া হয়। ক্রমশ ল্যাম্বের পাশাপাশি চিকেন, পর্ক ও সব্জিও ব্যবহৃত হতে শুরু করে ডাম্পলিংয়ের পুর হিসেবে। কলকাতার বিখ্যাত চীনে রেস্তরাঁ ইউয়াচায় পাবেন বিভিন্ন স্বাদের ডাম্পলিং। কখনও তাতে ফিলিং বা পুর হিসেবে থাকে ল্যাম্ব, কখনও পর্ক, কখনও বা অন্য ধরনের সব্জি। আবার এইসব ডাম্পিলিংয়ের খোলাগুলোও অন্য স্বাদে তৈরি করা হয় এই রেস্তরাঁয়। ময়দার সঙ্গে মেশানো হয় পোট্যাটো স্টার্চ। আবার জলের বদলে তা মাখার জন্য বিভিন্ন সব্জির রস ব্যবহার করা হয়। তাতে ডাম্পলিং হয়ে ওঠে রঙিন ও সুস্বাদু।