বিশেষ কোনও পারিবারিক কারণে মানসিক দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। কাজকর্মের ক্ষেত্রে বিশেষ সুখবর পেতে পারেন। ... বিশদ
স ব্রহ্মযোগযুক্তাত্মা সুখমক্ষয়মশ্নুতে।।
—‘বাহ্য বিষয়াদিতে অনাসক্ত হয়ে যিনি আত্মসুখ অনুভব করেন, ব্রহ্মে যাঁর চিত্ত সমাহিত, তিনি অক্ষয় আনন্দ লাভ করেন।’
২১তম এই শ্লোকটির উপদেশ হচ্ছে: বাহ্য স্পর্শেষু অসক্তাত্মা, ‘বাহ্য বিষয়াদিতে অনাসক্তচিত্ত হয়ে’। বাহ্য বিষয়গুলি আমার ওপর প্রভুত্ব করবে কেন? এই প্রশ্নটি করুন। পশুরা নিরুপায়, কারণ তারা পরিবেশের ঊর্দ্ধে উঠতে পারে না। কিন্তু মানুষ তো পারে। তাকে প্রতিটি বাহ্যবিষয়ের ক্রীতদাস হয়ে থাকতে হবে কেন? তার অন্তরে যে আত্মা আছেন তিনি বাহ্যজগতের সমস্ত বস্তুর চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান। যুদ্ধের সময় মানুষ এই সত্যটি বুঝতে পারে। উদ্বাস্তুরা যখন যুদ্ধাঞ্চল ছেড়ে পালায়, তখন তারা কী করে, জানেন? কোনরকমে দেহ-মনটিকে বাঁচাবার জন্য তারা একে একে তাদের সমস্ত দামি দামি জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তখন তারা উপলব্ধি করে যে সম্পত্তির চেয়ে জীবনের গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু শান্তির সময়ে মানুষ এই সত্য ভুলে যায়। বাহ্য স্পর্শেষু অসক্তাত্মা, ‘বাহ্যবিষয়ের প্রতি যিনি আসক্তিশূন্য।’ স্পর্শ একটি অসাধারণ শব্দ যার অর্থ ছোঁয়া। মানুষের পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়। একটি দর্শনের, একটি শ্রবণের, একটি ঘ্রাণের, একটি আস্বাদনের এবং শেষেরটি স্পর্শের। সমস্ত ইন্দ্রিয়গুলির মধ্যে যেটি সবচেয়ে বেশি ধরা-ছোঁয়ার অনুভূতি দেয়, তা হলো স্পর্শেন্দ্রিয়। ইংরেজি ‘tangible’ শব্দটি এসেছে ‘touch’ বা স্পর্শ থেকে। যখন আপনি কোন কিছু স্পর্শ করতে পারেন , তখন সেটি tangible বা অনুভবনীয় এবং কোন বস্তুকে আমরা কেবল তখনই সত্য মনে করি, যখন তা tangible হয়। আমি কোন কিছুকে স্পর্শ করতে পারছি, অতএব সেটি অবাস্তব। তাই, সাধারণ ,মানুষের মন শারীরিক স্পর্শ দিয়েই বাস্তবতার পরিমাপ করে। যেসব বস্তু স্পর্শ করা যায় না, তা অধিকাংশ মানুষের কাছেই অবাস্তব। কাজে কাজেই, অত্যধিক স্থূল প্রকৃতির মানুষ স্পর্শসুখের দ্বারাই প্রভাবিত। এই কারণেই এখানে বাহ্যস্পর্শ, ‘বাহ্যিক স্পর্শ’-এর কথা বলা হয়েছে। নিজের শরীরকে স্পর্শ করলে হবে। আমি বাইরের বস্তুকেও স্পর্শ করতে চাই; এই হচ্ছে বাহ্য শব্দটির অর্থ। শিশু অবস্থায় বাহ্যস্পর্শ-এর আনন্দ উপভোগ করা চলে, কারণ তা সুখদায়ক। শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য তার প্রয়োজন আছে। শিশুর নিরাপত্তাবোধ ও মানসিক বিকাশের জন্য মায়ের ত্বকের স্পর্শ একান্তই আবশ্যক।