বিমা প্রভূতক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। গৃহ সংস্কার বা ক্রয়ের প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে যেতে পারেন। শরীরের ... বিশদ
দেখুন হিন্দুর দিকে, তাঁহারা সম্প্রদায়-বিশেষের চরমাবস্থায় উপনীত হইয়া ভগবানে সমাহিত হইয়া রহিয়াছেন। দেখুন খ্রীষ্টানদিগের সিদ্ধ-পুরুষদিগকে, তাঁহারা কি আনন্দে দিনযাপন করিতেছেন। দেখুন মুসলমানদিগের সাধকদিগকে, তাঁহারা শান্তভাবে ভগবানকে সম্ভোগ করিতেছেন। সমন্বয় দেখিতে আর যাইব কোথায়?
এই জগতই তাহার রঙ্গভূমি, লীলাময় এই স্থানেই অভিনয় করিতেছেন। আমরা যেমন আপনাদের গৃহের ভিতর বসিয়া সূর্যালোককে মনে করি যে, আমার বাটিতে উহা আবদ্ধ হইয়া আছে, সেইরূপ সাম্প্রদায়িক ভাবরূপ প্রাচীর দ্বারা আমরা বাহিরের ভাব কোন মতে উপলব্ধি করিতে পারি না। নিজ বাটির বাহির হইয়া প্রত্যেক বাটিতে প্রবেশপূর্ব্বক তথাকার রৌদ্র এবং সূর্য্য জ্ঞান লাভ করিতে পারিলে, সর্ব্বশেষে তাহার সমন্বয় হইতে পারে। তখন তাহার এক সূর্য্য জ্ঞান ও তাহার রশ্মি সর্ব্বব্যাপী বলিয়া বিজ্ঞান বা প্রত্যক্ষ হইবার সম্ভাবনা। ধর্ম্ম-সমন্বয়ও সেইরূপ। প্রত্যেক ভাবে সাধক হইয়া (পুস্তক পাঠে হয় না, কল্পনায় হয় না, কবিতায় হয় না, শুনিলে হয় না) তাহাতে সিদ্ধ হইয়া, তদনন্তর তাহার সমন্বয়কালে তিনি দেখিতে পান যে, এক ঈশ্বর এবং তাঁহারই বহু ভাব। মনুষ্যের দ্বারা তাহা অদ্যাপি সাধিত হয় নাই; সেইজন্য দ্বেষভাবের সম্প্রদায়িক ভাবের অবিরত অভিনয় হইতেছে।
দয়াময় ভগবান রামকৃষ্ণ-রূপে তাহা কার্য্যে পরিণত করিয়া, ধর্ম্মের সমন্বয় করিয়া দিয়া গিয়েছেন। মনু্ষ্যের দ্বারা যাহা হয় নাই, যাহা আর কখন হইবেও না, যাহা কেহ করিতে পারেন নাই এবং চেষ্টা করিলে কেহ পারিবেন না, তাহা রামকৃষ্ণের দ্বারা হইয়াছে, এই নিমিত্ত তাঁহাকে অবতার বা পূর্ণব্রহ্ম ভগবান বলিয়া আমরা বুঝিয়াছি। রামকৃষ্ণদেব যে, বাস্তবিক ধর্ম্ম-সমন্বয় করিয়াছিলেন, তাহার প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিতেছি। আমরা দেখিয়াছি যে, তাঁহাকে সকল সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁহাদের নিজ নিজ ইস্ট বলিয়া বুঝিতে পারিতেন। পরমহংসেরা তাঁহাকে ‘পরমহংস’ জ্ঞান করিতেন এবং তজ্জন্যই সেই নামে ‘রামকৃষ্ণ পরমহংস’ বলিয়া অদ্যাপি উল্লিখিত হইতেছেন। তান্ত্রিক কৌলেরা তাঁহাকে ‘কৌল’ বলিয়া মানিতেন, বৈষ্ণবেরা তাঁহাকে গৌরাঙ্গ স্বীকার করিতেন, শৈবেরা শিব বলিয়া বুঝিতে পারিতেন, নানকপন্থীরা নানক, কর্ত্তাভজারা আলেখ, সহজেরা সহজ, বাউলেরা সাঁই, নবরসিকেরা অটুট বলিয়া বুঝিতে পারিতেন।