কর্মে অগ্রগতি হবে। চাকরিজীবীদের পদোন্নতি ও বদলির যোগ আছে। সৎজন সান্নিধ্যে মানসিক আনন্দ। ... বিশদ
জাগ্রৎ অবস্থায় আমরা দেহ-বোধে পূর্ণ থাকি। স্বপ্ন অবস্থায় জীব দৈহিক স্তর থেকে অবচেতন স্তরে নেমে আসে। স্বাভাবিক চেতনার নীচে এই অবচেতন স্তরে বাস করে আমাদের প্রবণতাসমূহ, কামনাচয় এবং জীবনের অভিজ্ঞতা সঞ্জাত অতীত সংস্কারসমূহ। জাগ্রৎ অবস্থায় মানুষের নির্দিষ্ট অহং চেতনা থাকে। কিন্তু জীব যখন দৈহিক স্তর থেকে সংস্কারের ভাণ্ডাররূপ অবচেতন স্তরে প্রবেশ করে জাগ্রৎ-কালীন অহং-বুদ্ধি সে হারায়। জীব যেন সঞ্চিত সংস্কারে ডুব দেয়। অবচেতন স্তরে বিচার-ক্ষমতা এবং ইচ্ছাশক্তি কাজ করে না। কল্পনার প্রাচুর্য এবং অনিয়ন্ত্রিত আবেগ তখন কাজ করে। সূক্ষ্ম সংস্কার থেকে যত খুশী রূপ তৈরি করে কল্পনা। মানুষের যে দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য—বিচারশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি—সে দুটি থেকে স্বপ্ন অবস্থায় জীব বঞ্চিত হয়। বাস্তবিকই আমরা তখন আবেগ ও কল্পনার অধীনস্থ হই।
তারপর সুষুপ্তি অবস্থায় আমরা আরও গভীরে যাই। স্বপ্ন-স্তরের অনেক নীচে মনের আরও একটি স্তর আছে—যাকে বলে কারণ অবস্থা। স্বপ্ন অবস্থায় মনের বৈচিত্র্য থাকে, যথা—ভালবাসা, অনুভূতি, স্মৃতি। কিন্তু কারণ অবস্থায় সমস্ত কিছু সমশ্রেণীভুক্ত হয়ে যায়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়—গাছের কারণ অবস্থা হল বীজ। গাছের মধ্যে আমরা বৈচিত্র্য দেখি কিন্তু যে বীজের মধ্যে গাছ সুপ্ত অবস্থায় আছে তার মধ্যে বৈচিত্র্য দৃষ্ট হয় না। অনুরূপে প্রতিটি জীবের মনে একটি কারণ অবস্থা আছে। সে কারণ অবস্থায় মনের সমস্ত কার্য স্তব্ধ হয়ে যায়। এমনকি অহং-চেতনাও লোপ পায়। আমরা যে কী তাও জানতে পারি না। রাজা তখন রাজা থাকেন না, মা তখন মা থাকেন না। পূর্ণ অজ্ঞানের রাজ্যে জীবাত্মা কিন্তু এই অজ্ঞানের নীরব সাক্ষী থাকেন।