একাধিক সূত্র থেকে আয় ও সঞ্চয় বৃদ্ধির যোগ। কাজকর্মে উন্নতি হবে। মানসিক চঞ্চলতা ও ভুল ... বিশদ
শুধু অর্থনীতির, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নয়, সমতলে মেইতেই ও পাহাড়ি অঞ্চলে কুকি-জো জনজাতির মধ্যে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে গোটা রাজ্য কার্যত আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। ধ্বংসের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই ছোট্ট রাজ্যটি। ইতিহাস বলছে, কয়েকবছর আগে পর্যন্তও এই দুই জনগোষ্ঠী সমতল-পাহাড়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দিনযাপন করেছে। কিন্তু আরএসএস-বিজেপির মতাদর্শ মেনে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সুকৌশলে বিভাজন তৈরি করেছেন মোদি-শাহের ‘রাবার স্ট্যাম্প’ বলে পরিচিত মুখ্যমন্ত্রী। জনজাতিগোষ্ঠী কুকিদের বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরু মেইতেইদের মেরুকরণ করে ভোটে জেতার পরিচিত খেলা চালিয়েছে বর্তমান ‘ডাবল ইঞ্জিনের’ সরকার। এর পরিণতি হিসাবেই গত ১৯ মাস ধরে শত্রুতার বর্ম পরে দুই গোষ্ঠী মুখোমুখি লড়াইয়ে নেমেছে। সেই লড়াইয়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে মণিপুর। লড়াই থামাতে চূড়ান্ত ব্যর্থতার নজির তৈরির পরেও এন বীরেন সিংকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে রেখে দিয়েছেন মোদিরা! তাই মণিপুরের যাবতীয় অশান্তি ও ব্যর্থতার দায় শুধু মুখ্যমন্ত্রী একা নন, মোদি-শাহকেও নিতে হবে। আর শুধু দুঃখ প্রকাশ করে, ক্ষমা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পার পেয়ে যেতে পারেন না। ন্যূনতম আত্মসম্মানবোধ থাকলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রায়শ্চিত্ত করা উচিত। না হলে বুঝতে হবে এসব আসলে লোক দেখানো, ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সস্তা নাটক।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সে পথে না হেঁটে নতুন বছরে শান্তি ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু ঘটনা হল, তাঁর আশ্বাসবাণীর পরেই বছরের প্রথম দিকেই ফের উত্তপ্ত হয়েছে মণিপুর। সেদিন বেশি রাতে ইম্ফলের এক গ্রামে হামলা চালায় কয়েকজন জঙ্গি। যথেচ্ছ বোমা-গুলি চলে। এর দু’দিন পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় পাহাড়ে কুকি অধ্যুষিত এলাকায় এক ডেপুটি কমিশনারের দপ্তরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। আসলে মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও গত সেপ্টেম্বর থেকে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে এই রাজ্যে। এজন্য রাজ্যের পাঁচ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়। গত ডিসেম্বরেও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অদূরে বোমা পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির উন্নতির কোনও লক্ষণ নেই। বরং মনে হতে পারে, অশান্তি জিইয়ে রাখতেই বেশি আগ্রহী শাসকগোষ্ঠী। তাই মুখ্যমন্ত্রীর শোনানো আপ্তবাক্য নয়, মণিপুরের ভবিষ্যৎ কুয়াশায় ঢাকা।