কর্মের উন্নতি হবে। হস্তশিল্পীদের পক্ষে সময়টা বিশেষ ভালো। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মের প্রসার। আর্থিক দিকটি অনুকূল। ... বিশদ
এমন বীরত্বপূর্ণ অতীত যাঁদের সেই নারীকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। জিতে আসতে হয়েছে দীর্ঘ আইনি লড়াই। ভারতের প্রতিরক্ষার তিন বাহিনীতে মহিলাদের উপযুক্ত পদে নিয়োগের দ্বিধা তবুও সম্পূর্ণ কাটেনি, আজও! ডান, বাম বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল তাদের সর্বোচ্চ পদে মহিলাদের বসাতে এখনও ইতস্তত করে। নির্বাচনগুলিতে প্রার্থী মনোনয়নে মহিলাদের যথাপ্রাপ্য গুরুত্ব দেওয়া হয় না। মন্ত্রিসভা গঠনেও চেষ্টা চলে এলেবেলে দপ্তর দিয়ে মহিলাদের খুশি রাখতে। ইন্দিরা গান্ধীর আগে এবং পরে মিলিয়ে, ৭৭ বছরের স্বাধীন ভারত দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী পায়নি! এই মুহূর্তে, এত বড় ভারতে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মাত্র দু’জন—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আতিশী মারলেনা সিং! অথচ ভোটাধিকার প্রয়োগে মহিলাদের সচেতনতা বেড়েছে অনেকগুণ। বেশকিছু রাজ্যে ইদানীং মহিলারা ভোটের লাইনে পুরুষদের চেয়ে বেশি সংখ্যাতেই দাঁড়াচ্ছেন। শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রেও পুরুষের সঙ্গে সমানে পাল্লা চলেছে নারীর। আধুনিক কর্মক্ষেত্রে মহিলারা বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে চলেছেন। তবু এতখানি সচেতন, যোগ্য ও সক্ষম নারীসমাজ এখনও বঞ্চনার শিকার নানাভাবে। মহিলা শ্রমিকদের, বহু নিয়োগ কর্তা পুরুষের চেয়ে কমই মজুরি দেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে কর্মী ছাঁটাই অনিবার্য হলে প্রথম কোপটা পড়ে মহিলাদের উপর। টাটকা দৃষ্টান্ত করোনাকাল। ২০২০-২২ সালের ভিতরে বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ সংস্থা কর্মী সঙ্কোচন নীতি নিয়েছিল। সেসময় সবচেয়ে বেশি হারে চাকরি হারাতে হয়েছিল মহিলাদের।
সেখানেই নতুন বছরের আগে মেয়েদের জন্য সুসংবাদ দিল একটি সমীক্ষা রিপোর্ট: ভারতে প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষতন্ত্রের চোখে চোখ রেখেই অধিকার বুঝে নিচ্ছে নারী ব্রিগেড। একটি নামী পরামর্শদাতা সংস্থার ওই রিপোর্ট বলছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪-এ দেশে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১.৪ কোটি। তাতে অনেকটাই এগিয়ে মহিলারা। এমনকী নিয়োগের হারে এবং বেতন প্রাপ্তির নিরিখেও কয়েক বছরে তাঁদের অগ্রগতির হার উল্লেখযোগ্য। এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের উপস্থিতিটা আরও উজ্জ্বল! ২০২৪-এ চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ৭ কোটি, পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। তার মধ্যে মহিলা ২.৮ কোটি, সংখ্যাটি ২০ শতাংশ বেশি ২০২৩-এর তুলনায়। পুরনো মহিলা চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির হার ২৮ শতাংশ। এছাড়া শ্রমমন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মোট শ্রমিকের মধ্যে মহিলা ছিলেন ২২ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালে সংখ্যাটি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ! দেশজুড়ে উচ্চশিক্ষিত মহিলা কর্মীর সংখ্যাও বেশ বেড়ে গিয়েছে। কাজের বাজারে মহিলাদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ছবিটি আরও উজ্জ্বল: ২০২২-এ এখানে বেসরকারি ক্ষেত্রে মহিলা কর্মী ছিলেন ২৭ শতাংশ। সংখ্যাটি ২০২৪-এ হয়েছে ৩৯। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় মহিলাদের মধ্যে বেকারত্বের হার মাত্র ৩ শতাংশ—সংখ্যাটি অন্যান্য রাজ্যে যখন ৩৪ পর্যন্ত! কর্মী বাহিনীর পুরোটারই সদ্ব্যবহারের এই বেনজির প্রবণতা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। এই প্রবণতায় আরও গতি সঞ্চারে নিশ্চয় আন্তরিক ও প্রয়াসী হবে ২০২৫।