কর্মের উন্নতি হবে। হস্তশিল্পীদের পক্ষে সময়টা বিশেষ ভালো। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মের প্রসার। আর্থিক দিকটি অনুকূল। ... বিশদ
সেই মোদিই ২০২৪ সালে তৃতীয় দফার জন্য সরকার গড়ার অধিকার পেয়েছেন, শুধু যুবদের চাকরির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তারা যে তিমিরে ছিল, ৭৭ বছরের স্বাধীন ভারতেও তারা সেখানেই পচে মরছে! এই নিয়ে স্বাভাবিক সমালোচনা এবং চরম ব্যর্থতার কোনও জবাব প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মেলে না। তবে মাঝেমধ্যে কুমির ছানার গল্প শুনিয়ে তখনকার মতো পার পেতে চান তিনি। ফলে সুরাহার বদলে বেকারত্বের আরও উঁচু চূড়ায় ঠাঁই হয়েছে দেশের। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যখন মূক ও বধির চরিত্রচিত্রণে ‘অস্কারজয়ী’ হয়ে ওঠে তখন কোনও মানবিক রাজ্য সরকার তার দায়িত্ব অস্বীকার করে কীভাবে? সত্যিই, দায়িত্ব এড়ায়নি বাংলার মা-মাটি-মানুষের সরকার। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতাকেই হাতিয়ার করেছেন। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ১৪ বছর যাবৎ নিয়েছেন একের পর এক বিকল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা। এই যাঁর ট্র্যাক রেকর্ড, রাজ্যের সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণীদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের কথা তিনি তো ভাববেনই।
তাঁর সরকার চালু করেছে ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প। প্রকল্পটার বয়স মাত্র একবছর ন’মাস। এই সামান্য সময়েই সেটা সাফল্যের নতুন নজির গড়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চালু করা প্রকল্পটা শীঘ্রই ‘হাজার কোটির ক্লাবে’ প্রবেশ করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের প্রতি ব্লকে একমাস ব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘শিল্পের সমাধানে’ শিবির শেষ হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর। সেখানে আরও দেড় লক্ষ তরুণ-তরুণী ক্ষুদ্রশিল্প দপ্তরের অন্তর্গত এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণের আগ্রহ দেখিয়েছেন। প্রশাসনের আশা, সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের অঙ্ক জানুয়ারির মধ্যেই এক হাজার কোটি টাকার গণ্ডি পেরবে। আমরা জানি, ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’-এর মাধ্যমে বাংলার ১৮-৫৫ বছর বয়সি নাগরিকরা ভর্তুকিযুক্ত ও জামানতমুক্ত ঋণ সহজ শর্তে পাচ্ছেন। এই টাকাতেই শুরু হচ্ছে তাঁদের আর্থিক স্বনির্ভরতার পথে এগনো। ২-২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত শিবির থেকে বণ্টিত আবেদনপত্রের ৪০ হাজার ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। এখন চলছে সেগুলির যাচাই পর্ব। জানুয়ারির মধ্যেই ঋণপ্রদান সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে নবান্ন। এপর্যন্ত মোট ৩২ হাজার সম্ভাবনাময় ব্যক্তি এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে স্বনির্ভরতার পথে কয়েক কদম এগিয়েও গিয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৬টি জেলায় সমাপ্ত হয়েছে ক্ষুদ্রশিল্পের ‘সিনার্জি’। সেখান থেকেই ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষুদ্রশিল্পের ক্রেডিট লিঙ্কেজ বা ঋণপ্রদান সম্পূর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে, ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প চালু হয়েছে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল। ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন’ তো বটেই কোনও ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্যেরও এমন নিজস্ব প্রকল্পের এত কম সময়ে ‘হাজার কোটির ক্লাবে’ প্রবেশের নজির নেই। আর এখানেই অনন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থান ভাবনা। সংশয়ের অবকাশ নেই যে বাংলার হবু ব্যবসায়ী বা শিল্পোদ্যোগীরা এই প্রকল্পেই পূর্ণ আস্থা রাখছেন। শিল্পক্ষেত্রে ভারতের মেরুদণ্ড এখনও পর্যন্ত যতটা সোজা তার জন্য সর্বাধিক কৃতিত্ব দাবি করতে পারে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই)। সারা দেশ জানে, এমএসএমই ক্ষেত্রে বাংলাই আজ অপ্রতিদ্বন্দ্বী। মমতার ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ যে তাতে আরও গতি ও শক্তি সঞ্চার করছে, এই বিষয়ে সংশয় নেই। তাঁর এই মহৎ উদ্যোগ সফল হলে বাংলার সঙ্গে স্ফীত হবে দেশেরও অর্থনীতি।