পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
পেগাসাস-বিতর্কের সময়েই শোনা গিয়েছিল আড়িপাতার তালিকায় রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধী নেতাদের নাম। তালিকায় সাংবিধানিক পদাধিকারী, বিচারপতি, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, কিছু ব্যবসায়ীর নামও রয়েছে বলে শোনা গিয়েছে। লক্ষণীয় হল, মোদি সরকারের দুই মন্ত্রীর নামও তালিকায় ছিল। এঁদের মধ্যে তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রীর নামও ছিল বলে জনশ্রুতি। যদিও ২০২১-এ ‘বেআইনি’ভাবে আড়িপাতা নিয়ে তোলপাড়ের সময় সরকারের হয়ে ব্যাট ধরে তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সংসদে বলেছিলেন, ‘এইসব অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।’ কিন্তু তার পরেও সুপ্রিমকোর্ট নিয়োজিত তদন্ত কমিটিকে সরকারের সহযোগিতা না করা এবং মার্কিন আদালতের এই রায় ঘোষণার পর মোদি সরকারের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানোর অভিযোগ যে সত্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই স্বচ্ছতার কারণেই আড়িপাতার ‘শিকার’ ৩০০ জনের নাম সামনে আসা উচিত। ‘শিকার’-এর মতো ‘শিকারি’র মুখোশও এবার প্রকাশ্যে আসা দরকার। গোপনে আড়ি পেতে কেন্দ্রীয় সরকার ও তার তদন্তকারী সংস্থাগুলি কী ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছিল, সেই তথ্য কোন কাজে ব্যবহার বা অপব্যবহার করা হয়েছিল—তা জানার অধিকার রয়েছে দেশবাসীর। প্রশ্ন হল, এইসব দাবি নিয়ে ফের কোনও মামলা হবে কি? বা মামলা হলে আদালতের ভূমিকা কী হবে? আদালত কি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আগের তদন্তের খাতা পুনরায় খুলবে? তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কি সামনে আসবে? আগুনের ফুলকির মতো এইসব গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন এখন ঘোরাফেরা করছে।
পেগাসাসের মালিক এনএসও-র বিরুদ্ধে পাঁচ বছর আগে মামলা করেছিল হোয়াটস অ্যাপের মালিক সংস্থা ‘মেটা ডেটা’। আমেরিকার আদালতে হওয়া সেই মামলার শুনানিতে এনএসও-র যুক্তি ছিল, তাদের থেকে যারা স্পাইওয়্যার কেনে তা কী কাজে লাগানো হবে সেই দায় তাদের নয়। আদালত এই যুক্তি খারিজ করে দেয়। ইজরায়েলের এই সংস্থার অর্থাৎ এনএসও-র আরও যুক্তি ছিল, উগ্রপন্থী কার্যকলাপ ও সংগঠিত অপরাধ দমনে সাফল্য পেতে বিভিন্ন গোয়েন্দা ও আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী সংস্থা বৈধভাবে তাদের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে। মার্কিন আদালত এই ব্যাখ্যাকেও গুরুত্ব দেয়নি। এর আগে বিতর্কের সময়ে এনএসও জানিয়েছিল, তারা একমাত্র কোনও দেশের সরকার বা সরকারি সংস্থাকেই পেগাসাস বিক্রি করে। সব মিলিয়ে এই সম্ভাবনাই প্রবল হচ্ছে যে, ভারতে মোদি সরকারই পেগাসাস স্পাইওয়্যার কিনেছিল। কিন্তু অভিযোগ, এনএসও বর্ণিত কাজে ব্যবহার না করে মূলত সরকার-বিরোধীদের ফোনে আড়িপাতার কাজে পেগাসাসের অপব্যবহার করেছে মোদি সরকার। অভিযোগ নিঃসন্দেহে গুরুতর। তাই দ্রুত এই রহস্যের পর্দা ওঠা উচিত।