শেয়ার/ ফাটকা প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থকড়ি উপার্জন বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যবসায় দিনটি মোটামুটি। ... বিশদ
এই চেনা ছন্দে এবার যেন কিছুটা হলেও তাল কেটেছে! কারণ এবারের পুজোয় উৎসব আর প্রতিবাদের সহাবস্থান দেখা গিয়েছে মহানগরে। গত ৯ আগস্টের মাঝরাতে আর জি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে এক তরুণী ডাক্তারকে। সেই পৈশাচিক ও হাড়হিম করা ঘটনার বিচার চেয়ে যে নজিরবিহীন প্রতিবাদ-আন্দোলন চলছে গত দু’মাস ধরে, তারই অঙ্গ হিসেবে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় মঞ্চ খাটিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার। সোমবার পর্যন্ত টানা ২০০ ঘণ্টার বেশি অনশনে অসুস্থ হয়ে কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, বাকিরাও ভালো নেই। শহরের নামজাদা মণ্ডপগুলোর মতো এই অনশন মঞ্চকে ঘিরেও নাগরিকদের ঢল নেমেছিল পুজোর দিনগুলিতে। এই উৎসব সাক্ষী থেকেছে পুজো মণ্ডপের সামনে ছাত্রসহ কয়েকজনকে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারের। প্রতিবাদীদের ডাকা মতান্তরে দশমীর দিন ঘরে ঘরে ‘অরন্ধন’ পালনের ডাক, বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ‘বিচার চাই’-এর স্লোগান— আনন্দের পাশাপাশি এই ‘দ্রোহ’-এর উৎসবেরও সাক্ষী থেকেছেন মা দুর্গা। ডাক্তারদের এই অনশন কবে উঠবে, সরকারের কোন আশ্বাসে উঠবে, ঠিক কী ধরনের সরকারি প্রতিশ্রুতিতে সন্তুষ্ট হবে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের ফ্রন্ট— তা নিয়ে একইসঙ্গে বিতর্ক ও উদ্বেগ জারি রয়েছে। কিন্তু এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এবার দেবীর বিসর্জনের আগেই উৎসবের আকাশ খানিক বিষাদের ছায়ায় ঢেকেছে। তবে আশাবাদী বঙ্গবাসী, প্রার্থনা জানিয়েছে সকলকে ভালো রেখ মা।
এই উৎসব শুধু আনন্দের নয়, রাজ্যের অর্থনীতিতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শব্দবন্ধ, ঐতিহ্য, পরম্পরা, সংস্কৃতি, খাওয়াদাওয়া, উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পুজোর অর্থনীতি শব্দটিও। পুজো মানে মৃৎশিল্পী, ঢাকি, হকার, রাস্তার ধারে অস্থায়ী স্টল দেওয়া যুবকদের বাড়তি উপার্জনের স্বপ্ন দেখা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এই পুজোকে কেন্দ্র করে বাংলায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে, যা রাজ্যের জিডিপির ২.৫৮ শতাংশ। অঙ্কের হিসাবে, এবারও তার ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। কিন্তু পুজোর আগেই কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি এবং প্রতিবাদের উৎসবের কারণে গোড়ার দিকে বিক্রিবাটা বেশ কম হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। পরের দিকে অবশ্য টি-২০ ঢঙে ব্যবসা হয়েছে। কিন্তু তাতেও আশানুরূপ ফল মিলবে কি না, তা বুঝতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। একবছরের প্রতীক্ষা। মা আসবেন।