কর্মে ও ব্যবসায় বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। আর্থিক যোগ শুভ। ব্যয় বাড়বে। সম্পত্তি নিয়ে শরিকি ... বিশদ
আশিস যে তাঁর মন্ত্রী-পিতার বলেই বলীয়ান তাতে সন্দেহ কী? তাঁদের দু’জনেরই বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। শিব সেনা, কংগ্রেস, এনসিপির জোট মহাবিকাশ আগাড়ি মন্ত্রী অজয় মিশ্রের বরখাস্ত দাবি করেছে। প্রধানমন্ত্রীর পার্টির বিরুদ্ধে একদিকে দেশজুড়ে ছি ছি পড়ে গিয়েছে, অন্যদিকে ভর্ৎসনা করেছে শীর্ষ আদালত। শেষমেশ আদিত্যনাথের পুলিস, ঘটনার ছ’দিন পর, মন্ত্রীপুত্র আশিসকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়েছে। ১৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক বিজেপি নেতাসহ আরও চারজনকে। তাঁরা হলেন সুমিত জয়সওয়াল, শিশুপাল, নন্দন সিং বিস্ত ও সত্যপ্রকাশ ত্রিপাঠী। সত্যপ্রকাশের কাছ থেকে রিভলভার এবং বুলেট উদ্ধার হয়েছে। কৃষকদের পিষে মারার ঘটনার একটি ভিডিও সেদিনই ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, স্থানীয় বিজেপি নেতা সুমিত জয়সওয়াল কনভয়ের একটি এসইউভি গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এই ব্যক্তিটিই ঘটনার পর কৃষকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ (এফআইআর) করেন। সুমিতের অভিযোগ ছিল, কৃষকরাই একটি গাড়ির চালক, তাঁর বন্ধু এবং দুই বিজেপি নেতাকে খুন করেছেন। বিজেপি নেতৃত্বের আক্রান্ত গাড়ি আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে গেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়।
লখিমপুরের ঘটনায় বিজেপি এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারকে একহাত নেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা ওয়াধেরা। প্রিয়াঙ্কা সুর চড়িয়েছেন এই ভাষায়, এ দেশে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা আর ধনকুবেররাই শুধু নিরাপদ। প্রধানমন্ত্রী লখনউতে গিয়েও লখিমপুরে যাননি। তার সমালোচনা করে প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আজাদি কি অমৃত মহোৎসব দেখতে এসেছিলেন, নিহত কৃষকদের পরিবারের কষ্ট ভাগ করে নিতে নয়। বিজেপি নেতৃত্বের তরফে কৃষকদের ‘আন্দোলনজীবী’, ‘জঙ্গি’ ইত্যাদি ভাষায় কটাক্ষ করারও নিন্দা করেন প্রিয়াঙ্কা। নিন্দিত মন্ত্রী এবং তাঁর পুত্রকে অন্যায়ভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। উঠেছে এই গুরুতর অভিযোগও। নিন্দা, ভর্ৎসনা ইত্যাদি অবশেষে রাজনীতির মঞ্চ অতিক্রম করে শীর্ষ আদালত থেকেও বর্ষিত হল। তদন্তে অনাবশ্যক বিলম্ব ও গাফিলতি নিয়ে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভও প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তদন্ত অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছে কোর্ট। বিষয়টিকে লঘু করে দেখা বা ঝুলিয়ে রাখা অনুচিত বলেও সতর্ক করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সামান্যতম বিবেক বা মানবিকতা থাকলে সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করত এবং তদন্ত দ্রুত শেষ করে তাদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করত—বিরোধীদের নিন্দা এবং কোর্টের ধমকের প্রতীক্ষা করত না। পরিবর্তে উল্টো রাস্তা নিয়ে সরকার ও শাসক দল বুঝিয়ে দিয়েছে তারা প্রকৃত পক্ষে কোন শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করছে! নরেন্দ্র মোদিদের রাজনীতি সত্যিই ভারতের মূল ধারার একেবারে বাইরে, তাঁদের রাজনীতির সঙ্গে ভারতের অন্তরাত্মার কোনও সম্পর্ক নেই।