কর্মে ও ব্যবসায় বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। আর্থিক যোগ শুভ। ব্যয় বাড়বে। সম্পত্তি নিয়ে শরিকি ... বিশদ
মূল্যবৃদ্ধি এদেশে যেন নিত্য রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কেউ বোঝে, জানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে তার পরোক্ষ প্রভাব পড়ে বাজারে। গ্যাসের দাম বাড়লে তার প্রভাব পড়ে রান্নাঘরে। তথ্য বলছে, মোদির আমলেই গুরুত্বপূর্ণ সব পণ্যের দাম ধাপে ধাপে বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে। পেট্রলের লিটার একশো ছাড়িয়েছে, সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় ডিজেল, আর মানুষের নিত্যসঙ্গী রান্নার গ্যাস ৯২৬ টাকা সিলিন্ডার প্রতি। ভোজ্যতেলের দামও বাড়তে বাড়তে ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। আবার কাঁচা আনাজের বাজারে বেগুন ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকায় বিকোচ্ছে। প্রায় সবক্ষেত্রে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে জীবনদায়ী ওষুধের দাম। কারণ অন্যান্য ক্ষেত্রে খরচের কাটছাঁট করার সুযোগ থাকলেও ওষুধ না পেলে জীবনসংশয়ের আশঙ্কাটি থেকে যায়। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দিশা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে মোদি সরকার। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে এবার ওষুধের দাম নিয়েও চরম উদ্বেগ প্রকাশ করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের বিবৃতি সঙ্গতকারণেই ছিল তারই প্রতিফলন। তিনি বলেছেন, জ্বালানির পাশাপাশি উদ্বেগের আর একটি বিষয় হল ওষুধের দাম বৃদ্ধি। কোভিডকালে ওষুধ ও চিকিৎসা খরচ হু হু করে বেড়েছে। কিন্তু দাম বৃদ্ধির প্রবণতা কমার লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। সত্যি বলতে কী, এমন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণভাবেই মোদি সরকার দায়ী। কারণ বাস্তব সত্যটি হল, করোনার কারণে অনেক কলকারখানা, শিল্পে উৎপাদন কমে যাওয়ায় মানুষের আয় কমেছে, পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। তাই জিনিসপত্রের বর্ধিত দাম মোকাবিলা করে পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিলেন অর্থ বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু দেশের শাসকগোষ্ঠী আস্তাকুঁড়ে জঞ্জাল ফেলার মতো যাবতীয় পরামর্শকে ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে গরিব মানুষের জীবনধারণকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ফলে একদিকে দাম বেড়েই চলেছে, অন্যদিকে হাতে নগদ অর্থের টান থাকায় সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। এবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কও স্বীকার করে নিল পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস প্রাকৃতিক গ্যাসের দামে রাশ টানা যাচ্ছে না। ফলে উদ্বেগ আরও বাড়ল।
এই প্রেক্ষিতে ওষুধের দাম বৃদ্ধি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ওষুধের দাম বাড়ার জন্য আঙুল উঠেছে চীনের দিকে। বহু ওষুধের কাঁচামাল আসে চীন থেকে। করোনার প্রকোপে একদিকে যেমন কাঁচামাল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে অন্যদিকে তেমনই কাঁচামালের দামও বেড়েছে অনেকটাই। এর প্রভাব পড়েছে ওষুধ শিল্পে। দেশে মোটামুটি ৪০০টি অত্যাবশ্যক ওষুধের দাম বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বাকি ওষুধের দামে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে সেক্ষেত্রে খেয়ালখুশি মতো দাম বেড়েছে মহামারীকালে। ওষুধের দাম যাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে তার জন্য সরকারি তরফে সুনির্দিষ্ট নীতি গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। এই দায়িত্বটি সরকার পালন না করায় ওষুধ কিনতে গিয়ে অনেকেরই নাভিশ্বাস উঠছে। এই হল মোদির দেখানো ‘সুদিন’।