পিতার স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতাই কথায় কথায় গুজরাতের প্রসঙ্গ টানেন। গুজরাত মডেলে বাংলাকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাধের গুজরাতকে কিন্তু জিএসটি আদায়ের ক্ষেত্রে বাংলাই পিছনে ফেলে দিল। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ প্রমাণ করল এই রাজ্যে অন্তত গুজরাত মডেলের কোনও প্রয়োজন নেই। নরেন্দ্র মোদির গুজরাতে যেখানে জিএসটি আদায়ের পরিমাণ গত নভেম্বর মাসের তুলনায় ডিসেম্বরে কমে গিয়েছিল, সেখানে বাংলায় বৃদ্ধি হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে যে জোড়াপন্থাকে বাংলার সরকার হাতিয়ার করেছে তার মধ্যে রয়েছে বাজারে জোগান বাড়ানো এবং সেইসঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো। এই প্রচেষ্টায় বাংলা সফল। তাই জিএসটি আদায়ের রেকর্ডে আজ উজ্জ্বল অবস্থানে বাংলা। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেই যে কোভিড যুদ্ধের লড়াই করতে হবে এই সহজ সত্যটি হয়তো প্রথমে উপলব্ধি করেনি দেশের সরকার। দেয়নি মানুষের হাতে নগদের জোগান, যাতে তাঁরা জিনিসপত্র কিনতে পারেন। অর্থনীতির চাকার গতি বজায় রেখেই যে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে সেই পথটি দেখিয়েছে বাংলা। কেন্দ্রের বোধোদয় দেরিতে হয়েছে। আশার কথা যে, শেষপর্যন্ত জিএসটি সংগ্রহে গত মাসে রেকর্ড করতে পেরেছে ভারত। যা এ দেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোরই বার্তা দিচ্ছে। গত ডিসেম্বর মাসে পণ্য পরিষেবা কর খাতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা রাজকোষে জমা পড়েছে, যা নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষে নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক।
তবে একথা ঠিক, দেশে জিএসটি আদায়ের এই রেকর্ড দেখে এখনই উদ্বাহু হয়ে সরকারি সাফল্য প্রচারের জয়ঢাক পেটানোর সময় আসেনি। কারণ গত বছরের শেষ তিন মাস ছিল উৎসবের মরশুম। উৎসবের মরশুমে স্বাভাবিক কারণেই কেনাকাটার চাহিদা বাড়ে। বাড়ে বিক্রিবাটা। সেকারণে জিএসটি আদায়ও বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। তবে জিএসটি আদায়ের এই গতি বজায় রেখে এগতে পারলে অবশ্যই দেশের অর্থনীতি একটা সন্তোষজনক জায়গায় পৌঁছতে পারবে। জানুয়ারিতে জিএসটি সংগ্রহ কী হয় সেটাই এখন দেখার। তবে একথা বলাই যায়, কর ফাঁকি আটকাতে কেন্দ্রের কিছু আঁটোসাঁটো ব্যবস্থা কাজে লেগেছে। জিএসটি আদায় যদি ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির সূচক হয় তাহলে একথা বলা যায় এই দুর্দিনে করদাতাদের ভূমিকাও কোনও অংশে কম না। দেশে জিএসটি আদায়ের এই রেকর্ড যেমন মোদি সরকারের কাছে স্বস্তির বাতাস বয়ে আনল তেমনই রাজকোষে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের পক্ষেও তা সুখবরই বটে। পণ্য পরিষেবা কর আদায়ে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে নিঃসন্দেহে ২০২১-এ ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।