বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
এসবের মানেটা কী? মানুষের কি আর কোনও কাজ নেই! মানুষ শুধু নথি জোগাড় করে যাবে! এত এত নথি কি মানুষকে ভাত জোগাবে! এতক্ষণ ধরে কংস রাজার বদ ফরমাশের যে ফিরিস্তি দেওয়া হল, সেটা সবকিছু একেবারে সুষ্ঠু স্বাভাবিক চলছে ধরে নিয়ে। কিন্তু সবার কপাল তো এতটা ভালো নয়। হাজার হাজার মানুষ নানাবিধ ভুলে-ভরা একগুচ্ছ কার্ড নিয়ে এ-দপ্তর, সে-দপ্তর ঘুরে মরছে বছরের পর বছর। সংশোধনের জন্য আবেদনের পর আবেদন করে চলেছে। কিন্তু সেগুলি ঠিকমতো সংশোধন হওয়ার লক্ষণ নেই। কোথায় গেলে কোন মন্ত্রে সেটা সম্ভব, তারা ভেবে কূল করতে পারছে না। কেউ কোনও জবাব দিচ্ছে না। শুধু হুকুম জারি করেই গার্জেনরা খালাস! তার মধ্যে ঘুম ছুটে গিয়েছে অসমে এনআরসি প্রক্রিয়ার রকম দেখে। সিএএ, এনআরসি, এনপিআর নিয়ে বড় মেজ ছোট বিজেপি নেতাদের হুঙ্কারে নিত্য বুক শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরস্পর-বিরোধী বক্তব্য শুনে তো মানুষ আরও বিভ্রান্ত। এর মধ্যে নতুন খবর, আধার কার্ডে এবার থেকে বাবার নাম থাকবে না! ফলে মানুষের উদ্বেগ বেড়ে গিয়েছে। এনআরসি, এনপিআর-এর মোদ্দা কথা হল—নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে বাবা-মায়ের পুরনো নথির ভিত্তিতে। সেখানে আধার থেকে বাবার নাম বাদ দিয়ে দেওয়ার অর্থ এই দাঁড়াবে না তো—আধার আর গ্রাহ্য নথি নয়? শঙ্কিত মানুষের হাতে একটি নথি কমে গেল!
তীব্র অস্থিরতা উদ্বেগ অশান্তির মধ্যে কাটছে ভারতবাসীর। স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারছে না বলে মানুষ তার সেরাটি দিতে পারছে না। কাজের মান নেমে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে মোট উৎপাদনও। এটা বোঝার জন্য অর্থনীতির পণ্ডিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যার পেটে খিদে, যার বুকে জ্বালা—তার চেয়ে ভালো আর কে বুঝবে? তাই এই যন্ত্রণা দুঃখের সাতকাহন প্রতিটি মানুষ টের পাচ্ছে রোজ। পরে মিলিয়ে নিচ্ছেন পণ্ডিতরা সরকারি রিপোর্টের সঙ্গে: মোদি-জমানায় মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ, বাজারে আগুন! সব্জির মুদ্রাস্ফীতির বহর ৬০ শতাংশের বেশি! ভাবা যায়! বেহাল অর্থনীতির প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে শিল্প-বাণিজ্যে। রোজ কমে আসছে চাকরির সুযোগ। সাড়ে চার দশকের ভিতরে সবচেয়ে ভয়াবহ বেকারত্বের খবর দিয়েছিল ২০১৯ সাল। তার কোনও কারেকশন হয়নি। ফলে, বেকারত্বের জ্বালা আরও তীব্র হওয়ারই আশঙ্কা। মানুষ বাঁচবে কী করে? এই অশান্তির ছায়া লক্ষ করা যাচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তাঁদের কাছে এখন এনআরসি-তাড়িত রোগীদেরও আনাগোনা শুরু হয়েছে! এই লক্ষণটি ছোট করে দেখার নয়। এ অশনিসঙ্কেত। মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচার পরিবেশ ফিরিয়ে দিক মোদি সরকার।