উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
মুদ্রা যোজনায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ছোট ব্যবসা করার যে ঋণ দেওয়া হয়, তা তিন ভাগে বিভক্ত। ৫০ হাজার টাকার কম অঙ্কে ঋণ নিলে, তার পোশাকি নাম ‘শিশু’। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ হলে, তার নাম ‘কিশোর’। ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের বহর হলে, তাকে ডাকা হয় ‘তরুণ’ নামে। গত আর্থিক বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১ মাসে মুদ্রা যোজনার যে হিসেব মিলেছিল, সেখানে তিনটি ক্ষেত্রেই ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের তুলনায় ঋণের ভারের কাছে পৌঁছতে পারেনি ওই অঙ্ক। দু’টি বছরের তুল্যমূল্য বিচারে তখনও পর্যন্ত ঋণ কম পেয়েছিলেন ১৩ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৫৮ জন। ঋণ কম দেওয়া হয়েছিল ৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সময় বলতে হাতে ছিল শুধু মার্চ মাস। মনে করা হয়েছিল, লক্ষ্যমাত্রা তো দূরের কথা, পূর্ববর্তী বছরের ঋণের পরিমাণেকেই এ রাজ্যে ছুঁতে পারবে না মোদির মুদ্রা।
কিন্তু সব হিসেব ওলটপালট করে দিয়েছে শুধু মার্চ মাসের ঋণ প্রদান। কতটা বদলে গিয়েছে চিত্র? ধরা যাক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণের কথাই। ১১ মাসে যেখানে প্রায় ৩৪ লক্ষ মানুষকে ঋণ দিয়েছিল কেন্দ্র, সেখানে শুধু মার্চে ঋণ দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৬ লক্ষ জনকে। ১১ মাসে ঋণ দেওয়া হয়েছিল প্রায় ৯ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকার। পরের এক মাসে সেই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার যে যোজনা, সেখানে ১১ মাসে ঋণ দেওয়া হয়েছিল প্রায় দু’লক্ষ জনকে। ঋণের অঙ্ক ছিল প্রায় ৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। পরের এক মাসে ঋণ পান প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ জন। ঋণের মোট অঙ্ক ছিল প্রায় ৪ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঋণগ্রহীতা এবং ঋণের অঙ্ক— দু’টি ক্ষেত্রেই এক মাসের হিসেব ছাপিয়ে গিয়েছে বিগত ১১ মাসের হিসেবকে। একইভাবে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণে ১১ মাসে যেখানে প্রায় ২৮ হাজার মানুষকে প্রায় ২ হাজার ৯৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, শুধু মার্চে তা প্রায় ৮২ হাজার ৩০০ জনকে প্রায় ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়। সবক’টি ঋণের যোগ করলে দেখা যাবে, ১১ মাসে মোট মুদ্রা যোজনায় ঋণের অঙ্ক ছিল প্রায় ১৫ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকার। পরের এক মাসে, অর্থাৎ মার্চে সেই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার ৫২২ কোটি টাকায়।
যেখানে সারা বছর ধরে মুদ্রা’র গতি মন্থর হয়ে রইল, সেখানে মার্চে তা লাফিয়ে বেড়ে যাওয়াকে ভোটের বাজি হিসেবেই দেখছে শিল্পমহল। তারা বলছে, যেহেতু ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয় মুদ্রা যোজনায়, তাই তা দিয়ে ছোট ব্যবসা করতে পারেন সাধারণ মানুষ। এ রাজ্যে বিপুল সংখ্যক সাধারণ ব্যক্তিকে ঋণ জুগিয়ে ভোটের রাস্তা মসৃণ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বিজেপি সরকার, মনে করছে শিল্পমহল।