নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অবশেষে আগামী বছর আইএসএলে দুই প্রধানের শিকে ছিঁড়তে পারে। গত তিন বছর ধরে আইএসএলের টিআরপি ক্রমশ কমছে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে দুই প্রধানকে নেওয়ার ব্যাপারে ফিফা- এএফসি’র চাপ। সেই সঙ্গে অনুঘটকের কাজ করছে রাজনৈতিক ফ্যাক্টর। মোহন বাগান যদি অক্টোবরের প্রথমে বড় স্পনসর পায় তবে সেখানেও থাকবে এফএসডিএলের সহযোগিতা। এইসব সমষ্টিগত কারণেই আগামী বছর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আইএসএলে সুযোগ পেতে পারে দুই প্রধান।
দ্বিতীয় বছরের শেষেই ‌ইনভেস্টর কোয়েসের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের সম্পর্কে ছেদ পড়তে পারে। বার্ষিক সাধারণ সভায় কোয়েসের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারটিতে ক্লাবের তরফে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে কোয়েসের শীর্ষকর্তারা জানিয়েছিলেন, ‘এবার না হলেও আগামী বছর আমরা আইএসএলে খেলব।’ দশ বছর ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকারও করা হয়েছিল। কিন্তু এই বছরের মার্চে ঘোষিত নীতি থেকে সরে আসে কোয়েস। আইএসএলে খেলার কোনও উদ্যোগও তারা নেয়নি। যদিও আগামী বছরের ৩১ মে’র পর তারা ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে থাকছে না। ইস্ট বেঙ্গল প্রেসিডেন্টকে এই মর্মে কোয়েস চেয়ারম্যান অজিত আইজ্যাক জানিয়ে দিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটেই এবং কিছুটা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় আইএসএলের পরিচালক সংস্থা এফএসডিএল ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে এটিকে’র সংযুক্তিকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। গত ফ্রেব্রুয়ারিতে মোহন বাগানের সঙ্গে কোয়েসের সংযুক্তিকরণে প্রক্রিয়া কিছুটা এগিয়েছিল। কিন্তু এটিকে’র শর্ত শেষ পর্যন্ত মোহন বাগান মেনে নেয়নি।
এফএসডিএল এবং ফেডারেশন সচিব কুশল দাসের উদ্যোগে ইস্ট বেঙ্গল সভাপতি ডাঃ প্রণব দাশগুপ্ত দুই দফায় আলোচনায় বসেছিলেন এটিকে’র কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে। সেখানে ইস্ট বেঙ্গল সংযুক্তিকরণের জন্য লাল-হলুদ সভাপতি চল্লিশ শতাংশ শেয়ার চান। সেই সময় এটিকে তিনটি শর্ত রাখে। প্রথমত সংযুক্তিকরণের পর ক্লাবের নাম হবে এটিকে- ইস্ট বেঙ্গল। দ্বিতীয়ত, নতুন ক্লাবের দু’টি লোগো থাকবে এবং তৃতীয়ত ব্যবহৃত হবে দুই ধরনের জার্সি। কলকাতা বা বাংলায় নতুন ক্লাব খেলবে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে খেলবে। বাংলার বাইরে পড়তে হবে এটিকে’র পরিচিত লাল-সাদা জার্সি। এই প্রস্তাব নিয়ে সভাপতি ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভার পর পদাধিকারীদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। অধিকাংশ পদাধিকারী বিরোধিতা করেছেন ওই তিনটি শর্তের।
এই ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে দাঁড়িয়ে ডাঃ প্রণব দাশগুপ্ত বলেন,‘প্রথম দুটি শর্ত মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বাংলার বাইরে লাল-হলুদের জায়গায় লাল-সাদা জার্সি পড়ার ব্যাপারটি তবুও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু সংযুক্তিকরণ করতে হলে নাম হতে হবে ইস্ট বেঙ্গল-এটিকে। আর লোগো রাখতে হবে জ্বলন্ত মশালকেই। তবে আমরা বেঙ্গালুরুর ইউবি গ্রুপের সঙ্গেও কথা বলছি। ইংল্যান্ডের একটি এজেন্সির সঙ্গেও কথাবার্তা এগিয়েছে। ওই গ্লোবাল সংস্থা আমাদের সঙ্গে চুক্তি করলে নিজেরাই স্পনসর জোগাড় করবে। তবে এটিকে’র শর্ত নিয়ে আপত্তি থাকলে আগামী বছর শতবর্ষ শেষ হওয়ার আগেই সমর্থকদের জন্য হয়তো থাকবে শুভ সংবাদ।’
সূত্রের খবর, ইউবি গ্রুপের সঙ্গে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্লাবের কর্মসমিতির এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যর যা কথা হয়েছে তাতে ইস্ট বেঙ্গল আইএসএলে খেললে ইউবি গ্রুপ হবে প্রধান সহযোগী স্পনসর। মূল স্পনসর আনবে তারাই। ইস্ট বেঙ্গল শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারও বলছেন,‘দুটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। তাই আমাদের ভাবনায় এটিকে নেই।’