পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে আইনি চাপ বাড়তে পারে। কাজকর্মে যোগাযোগের অভাবে বিঘ্ন। ... বিশদ
এক সময় চর অধ্যুষিত এই বিধানসভা বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এখানে বামেরা জেতে। কিন্তু ২০২১ সালে কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থীকে তৃণমূল প্রার্থী ব্যাপক মার্জিনে হারিয়ে দেয়। উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা যায়, সিপিএমের ভোট ব্যাঙ্কে কিছুটা ধস নামে। বামের ভোট অনেকটাই চলে যায় বিজেপির দিকে। এবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম নেমেছেন এই কেন্দ্রে। তাঁর কাছে এবার রামে যাওয়া ভোট ফেরানোই মূল চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কাঁটা উপড়ে ফেলতে মরিয়া আবু তাহের। গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে নিজের ভোট ধরে রাখতে পারলেই এই বিধানসভা থেকে অনেকটা লিড পাবেন বলে আশাবাদী তৃণমূল প্রার্থী। এই বিধানসভায় ৪০ শতাংশ হিন্দু ভোট এবং ৬০ শতাংশ মুসলিম ভোট রয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের আব্দুর রেজ্জাক তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের ইদ্রিস আলিকে এই আসনে পরাজিত করেছিলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফের সিপিএমের আব্দুর রেজ্জাক তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের অলোক দাসকে এই আসনে হারান। ২০২১ সালে এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রেজ্জাক। তিনি ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৪০ ভোট পান। অপরদিকে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএমের সাইফুল ইসলাম মোল্লা ৪৪ হাজার ৫৬৪ ভোট পান। বিজেপি প্রার্থী চন্দন মণ্ডল ভোট পেয়েছিলেন ৪৩ হাজার ৭৭৩টি। সিপিএমের ভোট কমেছিল ৩০ শতাংশের বেশি। বিজেপির ভোট বেড়েছে ১২.৩৬ শতাংশ। এই অবস্থায় তৃণমূল নিজের ভোট ধরে রাখতে পারলেই বাজিমাত করবে।
তবে এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের সদস্যরা সকলে ভোট করতে নামেননি। তাঁদের অভিযোগ, বিধায়কের মদতে সিপিএমের সঙ্গে বোর্ড চালাচ্ছে তৃণমূলের কেউ কেউ। তৃণমূলের মেজরিটি থাকা সত্ত্বেও আমাদের বঞ্চিত করেছে। যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রাকিবুল ইসলাম বলেন, এখানকার বিধায়ক দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন। ফলাফল কেমন হবে তা রেজাল্ট বের হলেই বোঝা যাবে। এই বিধানসভায় নির্বাচনী কমিটি গঠন হলেও কোনও বৈঠক হয়নি। ফলে অনেকেই নামেননি।
বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক বলেন, ফল ভালোই হবে। দু’-একজন ভোট করুক বা না করুক মানুষ আমাদের সমর্থন জানাবে। বিধানসভার মার্জিন হবে কিনা জানি না। তবে আমারই লিড দেব। সাগরপাড়া থেকে শুরু করে কাতলামারি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ চর এলাকায় বিজেপির কিছুটা প্রভাব আছে। তবে এখানে দ্বিতীয় স্থানে বাম-কংগ্রেস জোট থাকবে।
প্রার্থী আবু তাহের বলেন, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে জলঙ্গি বিধানসভায় ভালো ফল করার চেষ্টা করছি। সবাইকে কাজে নামানো হয়েছে। এত বড় দল আমাদের। দু’-একজনের ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকবে। তবে সেটা ভোটের ফলাফলে কোনও প্রভাব ফেলবে না।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জামাল হোসেন বলেন, ১৪টি অঞ্চলে সেলিম সাহেব লিড পাবেন। তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার কথা এখানকার মানুষ ভাবছে না। তৃণমূল প্রার্থীও সেটা বুঝতে পেরেছেন। মানুষকে ভোট না দিতে দিয়ে পুলিসকে দিয়ে জিতে যাবেন বলে মনে করছেন তিনি। কিন্তু সেটা হবে না। বাম-কংগ্রেসের সৈনিকরা ভোট লুট আটকাতে তৈরি। আমাদের জোট প্রার্থী ব্যাপক লিড পাবেন।