নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বুধবার রামনবমীকে সামনে রেখে জন সংযোগ সারল তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই। মিছিল শোভাযাত্রাগুলি ছিল অরাজনৈতিক। তবে সেখানে রাজনৈতিক নেতাদের দেখা যায়। গেরুয়া শিবিরের নেতা কর্মীদেরই আধিক্য বেশি ছিল। আরামবাগের মিছিলে বিজেপির বিধায়করা ও প্রার্থী শামিল হন। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরেও শোভাযাত্রায় হাঁটেন বিজেপি প্রার্থীরা। বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী রামপুজোয় শামিল হন। 
আরামবাগ শহরে সকালে শ্রীরাম জন্মভূমি সেবা সমিতির তরফে কলস যাত্রার আয়োজন করা হয়। বেনেপুকুর ওলাই চণ্ডীতলা থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। পাশাপাশি রামনবমী মহোৎসব কমিটির তরফে আরামবাগের পাঁড়েরঘাট সংলগ্ন রাম মন্দিরে বিশেষ পুজো, পাঠ ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি আরামবাগ হাইস্কুল মাঠ থেকে বেরিয়ে শহর পরিক্রমা করে। আরামবাগের বিজেপি বিধায়ক মধুসূদন বাগ, গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুশান্ত বেরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। বজরংবলি মন্দির থেকে বিকেলেও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় রামলালার ছবি নিয়ে বহু মানুষ পথ হাঁটেন। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তথা পুরশুরা বিধায়ক বিমান ঘোষ, বিজেপি প্রার্থী অরূপকান্তি দিগার শোভাযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন। বিমানবাবু বলেন, উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে রামনবমী পালিত হয়েছে। শোভাযাত্রায় সকলস্তরের মানুষ শামিল হন।
তৃণমূলের তরফেও এদিন মহকুমাজুড়ে রামনবমী পালন করা হয়। শহরের পল্লিশ্রী এলাকায় হনুমান মন্দিরে রামের পুজো দেওয়া হয়। কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলেন, রামনবমী ধর্মীয় উৎসব। শ্রদ্ধার সঙ্গে দিনটি পালন করা হয়েছে। পল্লিশ্রীতে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সম্প্রীতির ভাবনায় উৎসবে শামিল হয়েছিলেন। ধর্মীয় এই উৎসবকে বিজেপি সুকৌশলে রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে দিতে চাইছে। শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এই ধরনের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা মেনে নেবে না। 
বাঁকুড়া শহরে এদিন কড়া নিরাপত্তায় রামনবমীর শোভাযাত্রা হয়। যে কোনও ধরনের অশান্তি রুখতে ব্যাপক পুলিস মোতায়েন করা হয়েছিল। রামনবমী ঘিরে জনসংযোগ করেন প্রার্থীরা। এদিন সকালে বাঁকুড়ার পাঁচবাগা এলাকা থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। হিন্দু স্কুলের মাঠে শোভাযাত্রা শেষ হয়। রাম নবমীর মিছিল ঘিরে এদিন ব্যাপক উন্মাদনা দেখা যায়। শোভাযাত্রায় রামলালা, রাম শিলা, অযোধ্যার রাম মন্দির প্রভৃতির ট্যাবলো সাজানো হয়। একইসঙ্গে খুদেদের অনেককে রামলালা সাজানো হয়। শোভাযাত্রায় অনেকে লাঠি খেলাও দেখিয়েছেন। রামনবমীতে নানা জায়গায় অংশ নেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। সুভাষবাবু বলেন, এদিন বাঁকুড়ায় শোভাযাত্রা শুরুর সময় থেকেছি। পরে খাতড়ায় ও রাইপুরে রাম নবমীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। 
বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী এদিন সন্ধ্যায় বাঁকুড়া শহরের মিশ্র পাড়ায় রাম পুজোয় যান। সেখানে তিনি আশীর্বাদ নেন। 
এদিন বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ বিষ্ণুপুর ও কোতুলপুরে রামনবমীর শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে জনসংযোগ সারেন। এদিন সকালে বিষ্ণুপুরে স্টেশন সংলগ্ন হনুমান মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। রাসমঞ্চ সংলগ্ন গোশালার মাঠে গিয়ে তা শেষ হয়। সেখান থেকে সৌমিত্র কোতুলপুরে যান। সেখানেও রামনবমীর শোভাযাত্রায় অংশ নেন।