কর্মপ্রার্থীদের কোনও সুখবর আসতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। গুপ্ত শত্রু থেকে সাবধান। নতুন কোনও প্রকল্পের ... বিশদ
তবে, কিছু করারও ছিল না বিজেপি কর্মকর্তাদের। পাঁচ দিন আগে দলীয় সূত্রে খবর আসে প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির মুখ নরেন্দ্র মোদি এই জেলারও কোনও একটি পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন। সেই মতো প্রবল উৎসাহ নিয়ে বিভিন্ন পুজোকমিটির কাছে প্রস্তাব দেয় বিজেপি। প্রথম বড় পুজো মণ্ডপগুলিকেই প্রস্তাব দেওয়া হয়, যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল উদ্বোধনকে টেক্কা দেওয়া যায়। তাঁদের আশা ছিল, প্রধানমন্ত্রী পুজো উদ্বোধন করবেন শুনলে, যে কেউ রাজি হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। একের পর এক পুজো কমিটি মুখ ফেরাতে থাকে। ছোট পুজো কমিটিগুলিও রাজি না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয়, দলীয় কার্যালয়ে পুজো করা হবে। কিন্তু এত দেরিতে প্রতিমারও ব্যবস্থা করতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্ব। বাধ্য হয়ে ছবিতেই হয় পুজো। তবে এরজন্য তৃণমূলের সন্ত্রাসের পরিবেশকে দায়ী করেছেন বিজেপি নেতারা। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা দাবি, মোদির প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে শিল্পাঞ্চলের মানুষের।
করোনার দাপটে বড় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ভোটপ্রচার, সবই চলছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা ভোট, তাই তৃণমূল-বিজেপি যুযুধান দু’পক্ষের রাজনৈতিক লড়াইও শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। কয়েক বছর ধরেই বাঙালির দুর্গাপুজোর আবেগে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা চলছে। গত বছর কলকাতায় অমিত শাহর পুজো উদ্বোধন করতে আসা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। এবার বিজেপি আসরে নামিয়েছে তাঁদের প্রধান মুখ নরেন্দ্র মোদিকে। বিজেপি যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কলকাতার কোনও পুজো উদ্বোধন করতে চলেছে তার খবর আগেই ছড়িয়ে পড়ে। সেখানেই মাস্টার স্ট্রোক দেয় শাসক দল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় সশরীরে পুজো উদ্বোধন করার পাশাপাশি প্রতি জেলায় বেশকিছু মণ্ডপের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন। তারপর বিজেপিও ঠিক করে নরেন্দ্র মোদিও কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ১০টি পুজোর উদ্বোধন করবেন। সেখানে ঠাঁই পায় পশ্চিম বর্ধমান জেলাও। কারণ লোকসভা ভোটের নিরিখে এই জেলা বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। প্রায় ২ লক্ষ ভোটে জিতে আসানসোল থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনেও জিতেছেন এসএস আলুওয়ালিয়া। তাই এখানকার মানুষকে বিশেষ শুভেচ্ছাবার্তা দিতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে, এই অনুষ্ঠান করতে গিয়ে দেখা যায়, বিজেপির থেকে কার্যত মুখ ফেরালেন জেলাবাসী। কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করেও কোনও পুজোকমিটিকে ভার্চুয়াল উদ্বোধনের জন্য রাজি করানো যায়নি। বিজেপির জেলা সম্পাদক মদন চৌবে বলেন, আমরা কমপক্ষে ৫০টি পুজো কমিটিকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ রাজি হয়নি। এই অবস্থায় ঠিক হয় দলীয় কার্যালয়ে পুজো হবে। কিন্তু শেষ সময়ে প্রতিমা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আসানসোলে জেলার দলীয় কার্যালয়ের দেওয়ালে সাঁটানো হয় মা দুর্গার ছবি। তার পাশে বসানো হয় বিশাল এলইডি স্ক্রিন। সেখানকার পুজোই উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
যদিও বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবরাম বর্মন বলেন, তৃণমূলের সন্ত্রাসের ভয়েই কেউ প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করানোর সাহস পেল না। মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, আসলে নরেন্দ্র মোদির মুখোশ মানুষের কাছে খুলে গিয়েছে। তাই এই অবস্থা।