অত্যাধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
হলদিয়া বন্দরের মেরিন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্পশহর এলাকায় উম-পুন ঘূর্ণিঝড়ের যখন ল্যান্ডফল হয়, তখন তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২০৫কিলোমিটার। ভয়ানক গতিতে এই ঝড় প্রথমে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল, লাগোয়া নন্দীগ্রাম, সুতাহাটা, হলদিয়া মহিষাদল ব্লকের উপর আছড়ে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা এত বেশি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গাছপালার। এছাড়া হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গিয়েছে কয়েক হাজার বিদ্যুতের খুঁটি।
হলদিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবল ঝড়ের তাণ্ডবে শুধু শিল্পাঞ্চলেই প্রায় দু’লক্ষাধিক গাছ নষ্ট হয়েছে। গাছ উপড়ে, ঘরবাড়ি পড়ে পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ড কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। পুরসভা এলাকাতেই তিন হাজারের বেশি খুঁটি পড়েছে, হাইটেনশন লাইন ছিঁড়ে গিয়েছে বা টাওয়ার উল্টেছে। কিছু এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। পুরসভার তিনটি টিম, এনডিআরএফের টিম গাছ কেটে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া ও রাস্তাঘাট সচল করার চেষ্টা করছে। ঝড়ে মহিষাদল ও হলদিয়া ব্লকে দু’হাজার করে মোট চার হাজার, সুতাহাটায় প্রায় তিন হাজার এবং নন্দীগ্রামে দু’হাজার বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মহিষাদল ব্লকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাটশাল-১ ও ২, বেতকুণ্ড, অমৃতবেড়িয়া, ইটামগরা-২, লক্ষা-১ ও ২, কিসমৎ নাইকুণ্ডি, সতীশ সামন্ত ও গড়কমলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। ১১টি অঞ্চলের মধ্যে ১০টিতেই ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গেঁওখালি ত্রিবেণী সঙ্গম ও রাজবাড়ি, দু’টি পর্যটন কেন্দ্রই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, ঘরবাড়ি, গাছ, কৃষি, রাস্তা, নদীবাঁধ মিলিয়ে ব্লকে মোট ক্ষতি পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা।
একই অবস্থা সুতাহাটা ও হলদিয়া ব্লকেও। সুতাহাটা ব্লকেও প্রায় ৬০০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১০০০ মৎস্যজীবী পরিবারের বাড়ি নষ্ট হয়েছে। এই ব্লকে স্বসহায়ক দলের পোলট্রি ফার্মগুলি ভেঙে প্রচুর মুরগি মারা গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি সহ সভাপতি তাপস মাইতি বলেন, ব্লকে গাছের পাশাপাশি কয়েক কোটি টাকার প্রাণিসম্পদের ক্ষতি হয়েছে। সুতাহাটা ও হলদিয়া ব্লকে পুকুরে ও ফিশারিতে মাছচাষে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষিরা। এই দুই ব্লক মিষ্টিজলে মাছচাষে ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছিল। ঝড়ে গাছ পড়ে পুকুর ও ফিশারিতে দূষণ ছড়িয়ে মাছ নষ্ট হচ্ছে। অনেক ফিশারির বাঁধ ভেঙে মাছ পালিয়ে গিয়েছে।
হলদিয়া, সুতাহাটা এবং মহিষাদল এলাকায় ব্লক প্রশাসন ও বিদ্যুৎ দপ্তর এখন ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ সরিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের হলদিয়ার ডিভিশনাল ম্যানেজার রাজেশ দাস বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য রাতদিন কাজ করছে দপ্তরের লোকজন ও ভিনজেলা থেকে আসা কর্মীরা। এখনও পর্যন্ত শহর গ্রাম মিলিয়ে ২০-২৫ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া গিয়েছে। তবে ঝোড়ো বাতাস থাকায় কাজে সমস্যা হচ্ছে।