কর্মপ্রার্থীদের নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ আছে। সরকারি বা আধাসরকারি ক্ষেত্রে কর্ম পাওয়ার সুযোগ আছে। ব্যর্থ ... বিশদ
পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া শুক্রবার জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বেলা ১২টা নাগাদ কালিয়াচক থানার সুজাপুর থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই দুইজনের নাম সেলিম মিঁয়া ও সাকিম মিঁয়া। দুইজনেই কালিয়াচক থানার অন্তর্গত গোলাপগঞ্জ পুলিস ফাঁড়ি এলাকার শ্মশানী অঞ্চলের বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে ১০০০টি জাল ২০০০ টাকার নোট উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আরও জেরা করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিস সুপার।
তিনি বলেন, এদিন উদ্ধার হওয়া জালনোটগুলি সরবরাহ করা হয়েছে মালদহ সংলগ্ন বাংলাদেশের শিবগঞ্জ জেলা থেকে। কাঁটাতারের উপর দিয়ে এই নোটগুলি ভারতের দিকে ছুঁড়ে ফেলার পরে সেগুলি সংগ্রহ করত ধৃতরা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জালনোটের বিনিময়ে ধৃতরা বাংলাদেশে পাঠাত ব্রাউন সুগার, ইয়োবা ট্যাবলেট, আফিমের আঠা সহ বিভিন্ন মাদক পদার্থ। পুরো বিনিময়টাই হত অত্যন্ত গোপনে এবং নাটকীয় কায়দায়। বাংলাদেশ থেকে পাওয়া জালনোটের বিনিময়ে মালদহের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদক সংগ্রহ করত এই কারবারীরা।
নির্দিষ্ট সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে জাল পাতে মোথাবাড়ি থানার পুলিস। মোথাবাড়ি থানার অফিসার– ইন–চার্জ সৌম্যজিত মল্লিক বলেন, আমরা ওই জাল নোট কারবারীদের মাদক সরবরাহের টোপ দিই। সেই ফাঁদেই পা দেয় দুই ব্যক্তি। নির্দিষ্ট সময়ে সুজাপুরে বিপুল পরিমাণ জাল নোটের বিনিময়ে মাদক সংগ্রহ করতে হাজির হয়ে যায় তারা। এরপরেই জাল গোটাতে শুরু করে পুলিস। ধরা পড়ে যায় ওই দু’জন ।
মাদক ও জালনোট পাচারের মধ্যে যে ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে এদিন তা আরও একবার প্রমাণিত হল বলে মনে করছেন মালদহের পুলিস কর্তারা। জেলা পুলিসের এক প্রবীণ আধিকারিক বলেন, জালনোটের কারবার ও মাদক ব্যবসার মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই দুই কারবারকে বিচ্ছিন্ন করে দেখলে হবে না। আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে ধীরে ধীরে এগোচ্ছি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলাজুড়ে মাদক কারবারের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান শুরু করে মালদহ পুলিস। মুর্শিদাবাদ হয়ে মালদহের মাদক প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশাতেও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল বলে জানা যায় পুলিসের তদন্তে। একাধিক মাদক পাচারকারীকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ ব্রাউন সুগার, হেরোইন, নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ সহ বিভিন্ন ধরণের মাদক। এগুলির মধ্যে ব্রাউন সুগারের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি বলেও পুলিস তদন্তে নেমে বুঝতে পারে। ধৃত মাদক কারবারীদের টানা জেরা করে পুলিস নিশ্চিত হয়, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জালনোট কারবারের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তারই সূত্রে পরপর অভিযানে দু’দিনের মধ্যে পুলিস উদ্ধার করে ফেলে বিপুল অঙ্কের জালনোটও।
ওই পুলিস আধিকারিক বলেন, জালনোট ও মাদক কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে প্রতিদিন নতুন নতুন ছক সাজাচ্ছি আমরাও। শুক্রবার যেমন মাদক বিক্রির টোপ দিয়ে জালনোট উদ্ধার হয়েছে তেমন আরও কিছু অদ্ভুত কায়দা আমাদের অপারেশন চালানোর প্ল্যান রয়েছে। একই পদ্ধতি বারবার ব্যবহার করে আমরা অপরাধীদের চালাকি করার সুযোগ করে দেব না।