উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
করোনার ধাক্কায় বেহাল অর্থনীতি। বাড়ছে বেকারত্ব। এমন একটা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে গেলে একজোট হতে হবে দেশকে। আর সেটাই লক্ষ্য বিডেনের। প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট বললেন, ‘আমার উপর ভরসা রাখার জন্য আপ্লুত। যাঁরা আমায় ভোট দিয়েছেন বা দেননি—সবার জন্যই কাজ করব। লাল বা নীল রাজ্য নয়, আমার কাছে আমেরিকা একটাই দেশ। বিশ্বের দরবারে আমেরিকাকে নয়া উচ্চতায় পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।’ ভারতীয় সময়ে রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মার্কিন ইতিহাসের বয়স্কতম প্রেসিডেন্ট। পাশে থাকার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ দেন স্ত্রী জিল বিডেনকে। বলেন, ‘জিলকে ছাড়া আমি এতদূর এগতে পারতাম না। ও আমার প্রেরণা। জিল অসাধারণ ‘ফার্স্ট লেডি’ হবেন।’ নির্বাচনী দামামার মধ্যেই জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল আমেরিকা। বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ-আন্দোলনে নাজেহাল দশা ট্রাম্প প্রশাসনের। প্রতিবাদে শামিল হয় বিশ্বের একাধিক দেশও। যা এই নির্বাচনে সমানে প্রভাব ফেলে গিয়েছে। তাই কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের বড় অংশের রায় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাট জুটি। তাঁদের ধন্যবাদ দিয়ে নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। ধন্যবাদ। আমিও আপনাদের পাশে থাকব।’
এদিন বিডেনের আগে উপস্থিত সমর্থকদের সামনে বক্তব্য রাখেন কমলা হ্যারিস। ঘিয়েরঙা পোশাকের উপর সাদা স্যুট পরে মঞ্চে আসেন মার্কিন ইতিহাসের প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে কালো মাস্ক সরিয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তিনি। বলেন, ‘এই অফিসে আমিই প্রথম। তবে আমি শেষ মহিলা নই। আজ দেশের প্রতিটি ছোট মেয়েও জানে এ দেশে সব সম্ভব।’ দেশ গড়ার কাজে যাতে আরও মানুষ এগিয়ে আসেন, সেই লক্ষ্যে ডেমোক্র্যাটরা কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন কমলা। তাঁর কথায়, ‘আমেরিকা প্রস্তুত। বিডেন এবং আমিও।’
শুধু প্রস্তুত নন একজন। স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরাজয় নিশ্চিত। তবু আশা ছাড়ছেন না। আশা জয়ের। একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিডেনকে জয়ী ঘোষণা করতেই তৎপর হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। ট্যুইটে লেখেন, ‘বড় ব্যবধানে এই নির্বাচন আমিই জিতেছি।’ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পোস্টটিকে ফ্ল্যাগ মার্ক করে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষ। ভোট গণনা ও কারচুপির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। হেরেও ধরে রেখেছেন ট্রাম্পোচিত মেজাজ। ভার্জিনিয়ায় ট্রাম্প ন্যাশনাল গল্ফ কোর্সে সময় কাটাচ্ছেন। তবু কোথাও তাল কাটছে। বদলেছে শরীরী ভাষা। হোয়াইট হাউসে আরও চার বছর থাকার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। সাদা বাড়ি যেন ‘হাউস অব কার্ডস’।
বরিস জনসন (প্রধানমন্ত্রী, ব্রিটেন): আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য জো বিডেন ও ঐতিহাসিক কৃতিত্বের জন্য কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছি।
অ্যাঞ্জেলা মার্কেল (চ্যান্সেলর, জার্মানি): আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বিডেনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। দেশের প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকেও অভিনন্দন। প্রেসিডেন্ট বিডেনের সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করছি।
এমানুয়েল ম্যাক্রঁ (প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্স): আমেরিকা তাদের প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছে। জো বিডেন ও কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন। আজকের দিনের চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। এবার কাজ শুরু করা যাক।
জাস্টিন ট্রুডো (প্রধানমন্ত্রী, কানাডা): অভিনন্দন জো বিডেন ও কমলা হ্যারিস। আমাদের দুই দেশ পুরনো বন্ধু, সহযোগী ও মিত্র। বিশ্বের মঞ্চে আমাদের সম্পর্ক সত্যিই অভূতপূর্ব। আপনাদের দু’জনের সঙ্গেই কাজ করার অপেক্ষায় আছি।
স্কট মরিসন (প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়া): আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বহু বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার ভালো বন্ধু। কোভিড-১৯ মহামারীর এই কঠিন সময়ে তিনি আমেরিকার দায়িত্ব নিচ্ছেন। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করাটা মার্কিন নেতৃত্বের আবশ্যিক কাজ।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (প্রধানমন্ত্রী, ইজরায়েল): অভিনন্দন জো বিডেন ও কমলা হ্যারিস। জো, তোমার সঙ্গে আমার ৪০ বছরের গভীর ও ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের সম্পর্ক। ইজরায়েলের একজন ভালো বন্ধু হিসেবেই তোমাকে আমি চিনি।
মাইকেল মার্টিন (প্রধানমন্ত্রী, আয়ারল্যান্ড): আমি জো বিডেনকে অভিনন্দন জানাতে চাই। তিনি সারাজীবন এই দেশের একজন প্রকৃত বন্ধু। আগামী দিনে তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করছি। পরিস্থিতি অনুমোদন করলে তাঁকে নিজের ঘরে সাদর অর্ভথনা করব।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
রামনাথ কোবিন্দ (রাষ্ট্রপতি): জো বিডেন ও কমলা হ্যারিসকে আন্তরিক অভিনন্দন। প্রার্থনা করি আপনার মেয়াদকাল সফল হবে। ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক মজবুত করার লক্ষ্যে আপনার সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছি।
নরেন্দ্র মোদি (প্রধানমন্ত্রী): অভাবনীয় জয়ের জন্য জো বিডেনকে অভিনন্দন। ভারত-মার্কিন সম্পর্ক মজবুত করার ব্যাপারে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনার মূল্যবান ভূমিকা ছিল। এই সম্পর্ককে এক নতুন দিশা দিতে আপনার সঙ্গে একযোগে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।
সোনিয়া গান্ধী (কংগ্রেস সভাপতি): আপনার সুচিন্তিত ভাষণে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। ভাষণে আপনি বরাবরই মানুষের মধ্যেকার বিভেদ দূর করার কথা বলেছেন। লিঙ্গ ও জাতিগত সমতা রক্ষা, বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা বৃদ্ধি ও বিশ্বের প্রতিটি দেশের উন্নতির কথা আপনি বলেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ): জো বিডেন ও কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন। ভারত-মার্কিন সম্পর্ক জোরদার হোক।