সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক, কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
এক আধটা নয়। এমন ‘বনবাস’-এর সংখ্যা উত্তরাখণ্ডে একাধিক। প্রায় প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারই জঙ্গলঘেরা। বন্য জীবজন্তুর সঙ্গে ঘর করেই কোভিডের সঙ্গে যুঝতে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারকে। বেঘোরে প্রাণও খোয়াতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। ক’দিন আগের ঘটনা। নৈনিতাল জেলার দুর্গম অঞ্চল বেতালঘাটের একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ঘুমিয়ে ছিল ১০ বছরে এক বালিকা। বিষাক্ত সাপের ছোবলে মারা যায় সে। তার পরেই সেন্টারগুলির চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে সরব হন ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফেরা বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়াকে অস্ত্র করে তাঁদের দুরাবস্থার ছবি সরকারের নজরেও আনেন। কিন্তু অবস্থার খুব একটা হেরফের হয়নি। যদিও সরকারের দাবি, দুর্গম পার্বত্য এলাকায় মানুষ ও জীবজন্তুর সহাবস্থান নতুন কিছু নয়। সতর্কতা অবলম্বন করেই মানুষ বসবাস করেন। তা হলেও ওই সব এলাকার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলির উপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে বনদপ্তরকে।
রাজ্যের বনদপ্তরের মুখ্য ওয়ার্ডেন রাজীব ভার্তারি বলেছেন, ‘প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় গড়ে তোলা কিছু কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বনদপ্তরের কর্মীরাও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন। বন্যজন্তুদের হামলা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। জখমদের দ্রুত চিকিৎসা করতে ভ্রাম্য মেডিক্যাল টিমও গড়ে তোলা হয়েছে।’
পৌরি জেলার তিল্লা গ্রাম। সেখানকার একটি স্কুলবাড়ি এখন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। মহারাষ্ট্র ফেরত বেশ কয়েকজন শ্রমিককে ওই স্কুলে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিশ্রাম সিং নামে এক শ্রমিক বলছিলেন, ‘সরকারি কর্তারা যাই বলুন, আমরা নিরাপদে নেই। থাকবই বা কী করে? আমাদের যে স্কুলে রাখা হয়েছে, তার প্রতিটি দরজা-জানালা ভাঙাচোরা। স্কুলবাড়ির চারিদিকে বন্যজন্তুদের ঘোরাফেরা লেগেই রয়েছে। এবার বলুন কীভাবে তাদের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করব?’ উত্তরকাশির পুরোলা ব্লকের গৈন্দা গ্রামের একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ‘বন্দি’ আকাশ পাইনুলিরও একই অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি দিল্লি থেকে ফিরেছেন আকাশ। তাঁর কথায়, ‘আর বলবেন না! রাতে চিতাবাঘের গর্জনে আমরা ঘুমোতে পারি না। এই বুঝি দরজা ভেঙে ওরা ঢুকে পড়বে। দিনের বেলাতেও সেন্টারের বাইরে ঘোরাঘুরি করে চিতাবাঘ কিংবা বুনো শুয়োর। সে এক ভয়াবহ অবস্থা! প্রতি মুহূর্তে বন্য জীবনের সঙ্গে লড়াই করে থাকতে হচ্ছে।’