নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২৪ ফেব্রুয়ারি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি নিজেও নির্দেশ দেন যে, তাঁকে কিছুক্ষণ একা থাকতে দিতে হবে, বিদেশভ্রমণের সময় সেই নির্দেশ মানতে বাধ্য নয় তাঁর সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট। অন্তত একজন তাঁর সঙ্গে যে কোনও স্থানে একসঙ্গে থাকবেনই। এটাই সিক্রেট সার্ভিস প্রোটোকল। দ্বিতীয় প্রোটোকল হল, প্রেসিডেন্ট এমন কোনও স্থানে কখনওই থাকবেন না যেখান থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে কোনও ট্রমা হাসপাতালে পৌঁছনো সম্ভব নয়। বিমানের নাম শুনতে এ ওয়ান। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, প্রেসিডেন্টের জন্য একটিই এয়ারক্র্যাফট থাকবে। যে কোনও ফরেন ট্র্যাভেলে আসলে থাকে দু’টি এ ওয়ান এয়ারক্র্যাফট। ডামি হিসেবে। কোনটায় কখন প্রেসিডেন্ট বোর্ড করবেন, সেটা শেষ মূহূর্তে স্থির করা হয়। এই এ ওয়ান ফ্লাই করার ব্যয় কত? ঘণ্টা প্রতি দেড় লক্ষ ডলার। অর্থাৎ দুটি এ ওয়ান সর্বদাই থাকার কারণে ঘণ্টা প্রতি খরচ তিন লক্ষ ডলার। এরকম বিদেশ সফরে দু’টি এ ওয়ানের পাশাপাশি ছ’টি বিমান থাকে। আজ রাত আটটায় দিল্লিতে যে মৌর্য প্যালেস হোটেলে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প সপরিবারে উঠলেন, তার প্রত্যেক স্টাফকে এক মাস আগে ইন্টারভিউ করে গিয়েছে স্পেশাল সিক্রেট সার্ভিস। যাঁদের ইন্টারভিউ করা হল, তাঁরা ছাড়া আর কোনও নতুন বা পুরনো স্টাফ হোটেলের কোনও ডিউটিতে থাকতে পারবেন না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দিল্লির যে হোটেলে উঠেছেন তার উপরে ও নীচে সব মিলিয়ে তিনটি ফ্লোর সম্পূর্ণ ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ফ্লোরের প্রতিটি রুমের জানালায় বুলেটপ্রুফ প্লাস্টিক লাগানো হয়েছে গত সপ্তাহেই। হোটেল এবং বাইরে ট্রাম্পকে ঘিরে সর্বদাই থাকছে তিনটি স্তরের নিরাপত্তা। প্রথমে স্থানীয় পুলিশ। তারপর সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট। আর সর্বশেষে প্রেসিডেন্টকে ঘিরে প্রোটেকশন ডিভিশন এজেন্টস। ওই ব্ল্যাক ব্লেজার আর ব্ল্যাক সানগ্লাসের পাশে কী থাকে প্রত্যেকের হোলস্টারে? রেমিংটন এইট সেভেন্টি শটগান। আর এই এজেন্টদের সঙ্গেই মিশে থাকা আনইনফর্মড এজেন্টদের অস্ত্র হল প্রধানত এমপি ফাইভ সাবমেশিনগান। আর কোমরে থাকে গ্লক ফাইভ হ্যান্ডগান।
ওই যে বিরাট এক কনভয় দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্টকে নিয়ে যাচ্ছে, সেটার নিরাপত্তা বিন্যাসটি কেমন? প্রেসিডেন্টের ‘দ্য বিস্ট’ লিমুজিনের ঠিক পিছনেই থাকছে সিক্রেট সার্ভিস টিম আর কাউন্টার অ্যাসল্ট ভ্যান। ডোনাল্ড ট্রাম্প যে গাড়িতে বসেন সেটির মধ্যেই রয়েছে গোপন অস্ত্র। প্রধানত পাম্প অ্যাকশন শটগান আর টিয়ার গ্যান ক্যানন। সর্বদাই দেখা যাবে যে সদা তৎপর সিক্রেট এজেন্টরা প্রেসিডেন্টকে একেবারে কাছে গিয়ে সর্বদা ফলো করছেন। তাঁদের হাতের ব্রিফকেস সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ। ওটাই ফুটবল। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিউক্লিয়ার কমান্ড। যার মধ্যে রয়েছে ছোট্ট একটা চিপ। যার নাম বিস্কিট। ওটাই বহন করছে গোপন এক স্পেশাল পাসওয়ার্ড। বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে যে কোড ওয়াশিংটনের কন্ট্রোল কমিউনিকেশনে প্রেসিডেন্ট ফরওয়ার্ড করলেই নিক্ষিপ্ত হবে কালান্তক অস্ত্র-পরমাণু বোমা!