ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ থেকে গঙ্গাসাগর প্রায় ৩০০ কিমি মোহনা ও নিম্ন অববাহিকা অঞ্চল। জলের রুপোলি ফসল ইলিশ ডিম পাড়ার জুতসই জায়গা খুঁজতে সাগরের নোনা জল ছেড়ে গঙ্গা সহ তার শাখা নদীগুলির মিষ্টি জলে পরিভ্রমণ করে। ডিম ছেড়ে সাগরে ফিরে যাওয়ার আগে মা ইলিশ তার সদ্য জন্ম দেওয়া ছোটো ইলিশদের সঙ্গে প্রায় দুই মাস এই অঞ্চলে থাকে। কেন্দ্রীয় ইনল্যান্ড মৎস্য অনুসন্ধান সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষায় জুলাই অক্টোবর ও শীতে ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসে মা ইলিশ বাচ্চাদের নিয়ে পরিভ্রমণ করে। এই সময়েই জেলেরা সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে রুপোলি ফসলকে জালে তুলে। শুধু বড়ো ইলিশ নয়, জাটকা বা খোকা থেকে সব বয়সি ইলিশই বিভিন্ন রকম জালে ফেঁসে জেলের নৌকায় উঠে আসে।
সংস্থা সূত্রের খবর, ২৪ সেন্টিমিটারের নীচে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। অথচ ধরা হয় ৪.৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ইলিশ। এক একটি মা ইলিশ প্রতি মরশুমে ডিম পাড়ে ২০ থেকে ২৯ লক্ষ পর্যন্ত। এই বিপুল পরিমাণ খোকা ইলিশগুলিকে বড় হতে দেওয়া হয় না। তার আগেই অসাধু উপায়ে ছোট ছোট ইলিশগুলিকে জালে তোলা হয়। এই ছোট ইলিশগুলিকে বেশিরভাগ মাছ বাজারে খয়রা মাছ হিসেবে বিক্রি করা হয়। ছোট ইলিশগুলি অনেকটা খয়রা মাছের মতোই।
ছোট ইলিশ ধরার প্রবণতা কয়েক বছরে বেড়েছে। এর জেরে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছে। কেন্দ্রীয় ইনল্যান্ড মৎস্য অনুসন্ধান সংস্থার বিজ্ঞানী সাজিনা এএম বলেন, ছোট ইলিশ ধরার কারণে প্রতি বছর ৪৯ কোটি ৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবছর এই লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। সংস্থার প্রধান মৎস্য বিজ্ঞানী রঞ্জনকুমার মান্না বলেন, এ রাজ্যে ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ ছোট বা খোকা ইলিশ ধরা। বাংলাদেশে ছোট ইলিশ ধরলে জেল যেতে হয় জেলেদের। কিন্তু এখানে সেই কড়া আইন লাগু হয়নি। তার ফলে ছোট ইলিশ অবাধে ধরা হয় এখানে।
সংস্থার মৎস্য গবেষক অর্চিষ্মান রায় বলেন, ছোট ইলিশ ধরার জন্য জেলেরা বিভিন্ন ধরনের জাল ব্যবহার করে থাকেন। বেড় জাল, চারপাটা জাল, গ্যাঁড়া ভেসাল, নৌকা ভেসাল, মীনজাল, ঘন ছাঁদি সহ নানান ধরনের জাল। এই জালগুলিতে ৪.৭ সেন্টিমিটারের ইলিশও ধরা পড়ে। অতিরিক্ত পরিমাণে ইলিশ ধরার লোভেই জেলেরা এত কম ফাঁসের জাল নদীতে নামায়। যার ফলে সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে মানা হয় না।