কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
সে মামলা চলছে। মা এবং তাঁর অসুস্থ শিশুকন্যা সংশোধনাগারেই রয়েছেন। এতগুলি দুঃখের কথার পর সুখের কথাও একটি আছে কিন্তু। সংশোধনাগারে শিশুটির চোখের চিকিৎসা হচ্ছে। ফলে মায়ের অভিযান পুরোপুরি বিফলে যায়নি। এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম ঘটল এমনও কিন্তু নয়।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তানিতিয়া শেখ (৩০) নামে বাংলাদেশের এক মহিলা (নাম পরিবর্তিত) স্বরূপনগর সীমান্তে ধরা পড়েছিলেন। তিনি হৃদরোগে ভুগছিলেন। এক প্রতিবেশীর পরামর্শে চিকিৎসা করাতে পশ্চিমবঙ্গে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। তিনি শুনেছিলেন কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করে ভারতের জেল কর্তৃপক্ষ। তাই যাতে জেল হয়, সেই লক্ষ্যে তানিতিয়া ইচ্ছা করেই ধরা দিয়েছিলেন সীমান্ত প্রহরীদের হাতে। তারপর গ্রেপ্তার। সংশোধনাগারে ঠাঁই। এবং কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে পেসমেকারও বসেছিল তাঁর।
অন্যদিকে পিরোজপুরের ওই মাকে হাজির করা হয়েছিল বসিরহাটের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক প্রদীপকুমার অধিকারীর এজলাসে। বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘কেন আপনি বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে গেলেন?’ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলেন মহিলা। বলেন,‘হুজুর আমার মেয়ের চোখের চিকিৎসা হচ্ছিল না। সে জন্য জেনেবুঝেই এই কাজ করেছি। আমায় ক্ষমা করবেন।’ বিচারক বলেন, ‘জেলে বাচ্চাটির চোখের চিকিৎসা পাচ্ছেন তো?’ গৃহবধূ বলেন, ‘জেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পাচ্ছি।’ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এ কথা শোনার পর বিচারক বলেন, ‘শিশুটির যদি চোখের কোনও সমস্যা হয় বা অন্য কোনও প্রয়োজন হয়, তাহলে দরখাস্ত আকারে পুরো বিষয়টি জানিয়ে আবেদন করবেন আপনি। আদালত তখন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’ বিচারকের আরও মন্তব্য, ‘বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। কিন্তু আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। আইন আইনের পথেই চলবে।’ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারক নিজে শিশুটির খোঁজখবর রাখছেন। সে ঠিকমতো খাবার এবং ওষুধ পাচ্ছে কি না তাও নিয়মিত জানতে চাইছেন জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
আইনজ্ঞদের বক্তব্য, বন্দির চিকিৎসার দায়িত্ব জেল-কর্তৃপক্ষের। আদালতের এ বিষয়ে কড়া নজর। মাঝে-মাঝে চিকিৎসা সংক্রান্ত রিপোর্টও তলব করে আদালত। সুতরাং এ ধরনের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় এ রাজ্যে।
কার্টুন: সুব্রত মাজী