শারীরিক কারণে কর্মে বাধা দেখা দেবে। সন্তানরা আপনার কথা মেনে না চলায় মন ভারাক্রান্ত হবে। ... বিশদ
২০০১ সালে এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারকেশ্বর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ৮২.৫ কিমি রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ২০১২ সালে আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর তথা হাওড়া পর্যন্ত রেল চলাচলের উদ্ধোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর গোঘাট পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ হয়। কিন্তু, ভাবাদিঘির উপর দিয়ে রেলপথ নিয়ে যাওয়ায় বাধা দেন গ্রামবাসীরা। বর্তমানে কামারপুকুর পর্যন্ত রেলপথের মাটির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি আছে শুধু ভাবাদিঘি গ্ৰামের অংশটা। মুখ্যমন্ত্রী গ্ৰামবাসীদের জন্য অন্য জায়গায় দিঘি খনন ও মাছ চাষের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীরা ৫২ বিঘার বেশি আয়তনের এই দিঘির উপর এখনও রেললাইন তৈরি করতে দেওয়ার বিরোধী। তাঁরা চাইছেন, দিঘির উত্তর পাড়ে হোক রেললাইন।
দিঘি বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম নেতা প্রসাদ রায় বলেন, আমরা এখানে রেললাইন তৈরির বিপক্ষে নয়। শুধু চাইছি, দিঘির উত্তরে এই রেললাইন হোক। শাসক দল দিঘির উপর লাইন করার জন্য গ্ৰামবাসীদের চাপ দিচ্ছে। বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে ওরাও আমাদের আন্দোলনের বিরোধিতা করতে পারে। তবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
দিঘি বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুকুমার রায় বলেন, ভাবাদিঘির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ। আমরাও চাই, রেললাইন হোক। তবে দিঘির উত্তর পাড়ে। রাজ্যের সব দল নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমাদের ব্যবহার করেছে।
গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, আমরা রেলদপ্তরের কাছে বহুবার আবেদন করেছি, রেললাইন দিঘির উপর দিয়ে না করে উত্তর দিকে করা হোক। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আছে। সদিচ্ছা থাকলে সহজেই রেললাইন উত্তর দিকে তাদের সরকার করতে পারে। কিন্তু, রাজনৈতিক স্বার্থে এই কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় সিপিএম ও বিজেপি নেতৃত্ব রাজনৈতিক স্বার্থে গ্ৰামবাসীদের উসকাচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে।
গোঘাটের সিপিএম নেতা তথা কৃষক সমিতির সম্পাদক ভাস্কর রায় বলেন, রেলদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই প্রকল্পে রেললাইনের স্থান বদল করা যাবে না। কিন্তু, আমরা এটা মানি না। দিঘির উপর দিয়ে না গিয়ে উত্তর দিকে হলেই রেলপথ সোজা হবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন জটিলতা তৈরি করা হয়েছে।
বিজেপি নেতা শিশির রায় বলেন, তৃণমূল ও সিপিএম গ্রামের মানুষকে যেভাবে ঠকিয়েছে তাতে বিজেপিকে নিয়ে আন্দোলনকারীদের আশঙ্কার বিষয়টি স্বাভাবিক। ভাবাদিঘির মানুষের আন্দোলনের পাশে আমরা আছি। ডবল ইঞ্জিনের সরকার হলেই মিটবে সমস্যা। জমি অধিগ্রহণ করে উত্তর দিকেই হবে রেললাইন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এই আন্দোলনের পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে করছে। তাদের বক্তব্য, ক্ষমতা বদলের পর যদি দিঘির উত্তর পাড় দিয়ে রেললাইন পাতার ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে এখন অনুমতি দিতে আপত্তি কিসে?
রেল লাইন হলে তো বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের উপকার হবে। সে কথা মাথায় রেখে বিজেপির সাংসদরা কেন কেন্দ্রের উপর নকশা বদলের ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করলেন না? মানুষের উপকার করার চেয়ে ভাবা দিঘিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা তোলাই উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।