নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: সংশোধিক নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ, এনআরসি নিয়ে রাজপথে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে আগেই। এবার প্রতিবাদ নেমে এল জলপথেও। গঙ্গাবক্ষে সাঁতরে সিএএ, এনআরসির প্রতিবাদ করলেন হাওড়ার এক সাঁতারু। সম্প্রতি বেলুড় মঠে এসে জাতীয় যুব দিবসের ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএর পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। এই দু’য়ের বিরোধীদের কটাক্ষও করেন সেই মঞ্চ থেকে। বেলুড় মঠের মঞ্চকে এভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগের প্রতিবাদেও এই সাঁতার বলে জানিয়েছেন তরুণ সাঁতারু এবং উদ্যোক্তারা। জাতীয় স্তরের এই সাঁতারুর নাম মুকেশ গুপ্তা। তাঁর বাড়ি হাওড়া ময়দান এলাকায়। রবিবার সকালে বেলুড় মঠের জেটিঘাট থেকে রামকৃষ্ণপুর ঘাট পর্যন্ত সাঁতার কাটেন তিনি। সাঁতারের মাধ্যমে এমন অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল হাওড়া তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক অরূপ রায় সাঁতারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন। মুকেশ যখন সাঁতরে যাচ্ছিলেন, লঞ্চে তাঁর থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন তিনি। অরূপবাবু বলেন, আমরা সবরকমভাবে সিএএ এবং এনআরসির বিরোধিতা করছি। সেই বিরোধিতার বার্তাই এবার গঙ্গাবক্ষে জলপথে দিতে চেয়েছি। তিনি আরও বলেন, গঙ্গাবক্ষে প্রধানমন্ত্রী মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলুড় মঠে এসেছিলেন। তারপর বেলুড় মঠকে তিনি রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করলেন। এর প্রতিবাদে আমরা বেলুড় মঠের জেটিঘাট থেকে এই প্রতিবাদী সাঁতার শুরু করি। আর শিকাগোর ধর্ম মহাসভা থেকে স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণপুর ঘাট হয়ে ফেরেন। তাই এই দুই ঘাটকে আমরা প্রতিবাদের অংশ করেছি।
এদিন সকালে এর জন্য বেলুড়ের জেটিঘাট এবং হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাটে তৃণমূল সমর্থকরা জাতীয় এবং দলীয় পতাকা নিয়ে ভিড় জমান। সিএএ, এনআরসির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তাঁরা। এনআরসি এবং সিএএর প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস হাওড়ার একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কয়েকদিন আগে হাওড়ায় মহামিছিল করেছেন এই ইস্যুতে। সাঁতারু মুকেশ গুপ্তা বলেন, এনআরসি এবং সিএএর বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ আমি এভাবেই প্রকাশ করলাম। এর ফলে হিন্দু-মুসলমানে বিভাজন তৈরি হয়েছে এবং নিজের বন্ধুদের মধ্যেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেলুড় মঠে এসে বিভাজনের কথা বলেছেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ তো ধর্মে ধর্মে ভাগাভাগির কথা বলেননি। -নিজস্ব চিত্র