কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। হঠাৎ প্রেমে পড়তে পারেন। কর্মে উন্নতির যোগ। মাঝেমধ্যে ... বিশদ
গভীর জঙ্গলে গিয়ে মধু সংগ্রহ করে কোনওরকমে দিন গুজরান করতেন বহু মৎস্যজীবী। কিন্তু তাতে বাঘের মুখে পড়ে প্রাণহানি ঘটেছে অনেকের। সে কারণেই কৃত্রিমভাবে মধু চাষের উপকরণ দিয়ে মৎস্যজীবীদের বিকল্প জীবিকার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ৭২০ জন মৎস্যজীবী এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে গত কয়েক মাসে ৩ হাজার ২০০ কেজি মধু উৎপাদন হয়েছে।
জেলা বন বিভাগ সূত্রে খবর, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই মৎস্যজীবীদের মধু চাষের জন্য বিশেষ বাক্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বর থেকেই শুরু হয় এই প্রক্রিয়া। মার্চ মাস থেকে শুরু হয় মধু সংগ্রহের কাজ। লকডাউন চলাকালীন ৩২ টন মধু সংগৃহীত হয়েছে। প্রথম ধাপে এই প্রক্রিয়া শেষ হলেও এখন এই মধু বিপণনের কাজ চলছে। ডিসেম্বর মাস থেকেই আবার দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হবে বলে সূত্রের খবর।
তবে এত পরিমাণ মধু উৎপাদন হবে, তা অবশ্য আশা করেননি বনদপ্তরের কর্তারা। কারণ এভাবে আদৌ কতটা মধু হবে, প্রকল্প সফল হবে কি না, এসব নিয়ে একটা সংশয় ছিলই। তাই প্রথম ধাপে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল ২০ থেকে ২২ টন মধু। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রাকে ছাপিয়ে গিয়েছে সংগ্রহের পরিমাণ। বন বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছাপিয়ে উৎপাদন হয়েছে। সুন্দরবন লাগোয়া প্রত্যন্ত এলাকার মৎস্যজীবীদের জন্য এই পদ্ধতিতে মধু চাষের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’ বন্যপ্রাণ ও মানুষের সংঘাত এড়াতে এই বিশেষ উদ্যোগ বলে জেলা বন বিভাগ জানিয়েছে। কারণ গতবার বাফার জোনে বাঘের হামলার শিকার হয়েছিলেন দু’জন। ভবিষ্যতে আরও অনেক মৎস্যজীবীকে বিকল্প মধু চাষে যুক্ত করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় উৎপাদিত এই মধু বিক্রি হবে দেশে-বিদেশে। হবে রপ্তানি। অনলাইন বিপণন কিংবা রাজ্য সরকারের ব্র্যান্ড বিশ্ব বাংলা স্টোর থেকে সাধারণ মানুষ তা সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতি কেজি মিলবে ৪২০ টাকায়। বিক্রি করে যা আয় হবে, তা পুরোটাই মৎস্যজীবীদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা বন বিভাগের এক কর্তা। প্রথম ধাপের এই সাফল্য বাকি মধুচাষিদের উৎসাহ দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর ফলে জঙ্গলে গিয়ে মধু সংগ্রহ করার প্রবণতা কমবে।