নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: চলতি বছর ভ্যাপসা গরমে নদীয়া জেলায় বিদ্যুতের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী উপভোক্তাদের বিদ্যুতের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে দপ্তর। তীব্র গরমে দৈনিক ১০-২০ শতাংশ বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়েছে জেলায়। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঘনঘন লোডশেডিং বাড়ছে। ফলে তীব্র গরমে নাজেহাল হতে হচ্ছে জেলাবাসীকে। বিশেষ করে জেলার গ্রামীণ এলাকায় পাওয়ার কাটের সমস্যা মাত্রাতিরিক্ত। একবার বিদ্যুৎ গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আসে না। ফলে নাজেহাল হচ্ছেন বাসিন্দারা। মূলত চলতি বছরে তীব্র গরমের কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেকারণে আগামী বছর থেকে নতুন পরিকল্পনা নিতে চাইছে নদীয়া জেলা বিদ্যুৎদপ্তর। বিদ্যুৎ ব্যবহারের গ্রাফ কী হারে বাড়বে তার অনুমান করে এগতে চাইছেন বিদ্যুৎ দপ্তরে আধিকারিকরা। সেইমতো বিদ্যুতের জোগান বাড়ানো হবে বলে জানা গিয়েছে। গত এপ্রিল মাসেই নদীয়া জেলার তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৪৪ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা জেলার সর্বকালীন রেকর্ড। ছিল তীব্র দাবদাহ। যার ফলে এপ্রিলের গরমেই নাজেহাল হতে হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। সেইসঙ্গে গ্রামীণ এলাকায় ঘনঘন লোডশেডিং হয়। একবার বিদ্যুৎ গেলে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে আসার নাম ছিল না। এমনকী বহু এলাকায় সারারাত বিদ্যুৎ না থাকার ঘটনাও ঘটেছে। জেলার প্রতিটি ব্লকেই কমবেশি এই সমস্যায় জর্জরিত। যার ফলে তীব্র গরমে গ্রামীণ এলাকার মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছিল। গত সোমবার লোডশেডিং নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। কৃষ্ণনগরের দোগাছি পঞ্চায়েতে প্রায় চার ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিলেন তাঁরা। বিদ্যুৎদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, দূরের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে অনেক সময় সমস্যা হয়। পাওয়ার কাটের সমস্যা দেখা দেয়। তার উপর এই গরমে এসি চালানোর প্রবণতা অনেক বেশি। যার ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহে অতিরিক্ত চাপ পড়ছিল। এপ্রিল মাসে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১০-২০শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেও আমরা সরবরাহ অব্যাহত রেখেছি।
জানা গিয়েছে, দিনে সর্বোচ্চ কত পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে সেই নিরিখে চাহিদার হিসেব করা হয়। বছরের অন্যান্য সময় বা বিগত বছরগুলিতে দেখা গিয়েছে, জেলায় গড়ে দিনে সর্বোচ্চ ২০০এমভিএ বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েছে। কিন্তু এপ্রিল মাসে নদীয়া জেলায় দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ২৫০-২৬০ এমভিএ ছুঁয়েছিল। যা আগে কখনও হয়নি। যার ফলে এই অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে।
বিদ্যুৎদপ্তর আরও জানায়, বছরের হিসেবে কোথায় কত পরিমাণ ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে তার আগাম একটি অনুমান করে নেওয়া হয়। সেইমতো বিদ্যুৎ জোগানের ব্যবস্থা করা হয়। ২০২৩ সালেও গরম ভালো ছিল। তার ভিত্তিতেই অতিরিক্ত বিদ্যুতের জোগানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এবার বিদ্যুতের চাহিদা সেই জোগানকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।