শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত সরকারি প্রাথমিক ও হাইস্কুলগুলিতে দিনের পর দিন পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে। পড়াশোনার মান নিয়েও বিভিন্ন সময় অভিভাবকরা অভিযোগ তুলেছেন। ফলে, বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করানোর প্রবণতা বেড়েছে। বীরভূম জেলার বিভিন্ন জায়গায় এধরনের ঘটনার নজির পাওয়া যায়। তাই প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকস্তর পর্যন্ত স্কুলগুলিতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ডিজিটাল ক্লাস শুরু করতে চলেছে সমগ্র শিক্ষা মিশন। কে-ইয়ান অর্থাৎ নলেজ যান নামক যন্ত্রের সাহায্যে পড়ুয়াদের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হবে।
৩১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৬টি মাধ্যমিকস্তর পর্যন্ত হাইস্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফেই জেলায় এই স্কুলগুলিকে বাছা হয়েছে। তবে, এই স্কুলগুলিতে কম্পিউটারের ব্যবস্থা রয়েছে সেই স্কুলগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে পড়ানো শুরু হবে।
কে-ইয়ান যন্ত্রের সাহায্যে কীভাবে পড়ানো হবে ক্লাসে? এব্যাপারে বীরভূম জেলা সমগ্র শিক্ষা মিশনের রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর বিকাশ রায় বলেন, গত ২০১৭সালেই সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে রাজ্যের তরফে ওই ‘কে-ইয়ান’ যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকস্তরের ছাত্রছাত্রীদের সিলেবাসের পাঠ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে ওই যন্ত্রে ইনস্টল করা হবে। এই কাজ ইতিমধ্যে একটি কম্পিউটার সংস্থা করেছে। প্রধান শিক্ষকদের ওরিয়েন্টশন ক্যাম্প করে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এবার স্কুলের কিছু শিক্ষককেও এই যন্ত্রের সাহায্যে পড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমের ৮৬টি হাইস্কুলকে এই কর্মসূচির জন্য বাছা হয়েছে। তারমধ্যে বোলপুর মহকুমায় রয়েছে ১৮টি হাইস্কুল, সিউড়ি সদর মহকুমায় ২৭টি। বাকি ৪১টি হাইস্কুল রয়েছে রামপুরহাট মহকুমায়। অন্যদিকে, ৩১টি প্রাইমারি স্কুল বোলপুর ব্লকের মধ্যেই রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের গত ১৯ নভেম্বর ও হাইস্কুলের ২০ নভেম্বর ওরিয়েন্টশন ক্যাম্প করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এবার প্রাইমারি থেকে দু’জন ও হাইস্কুল থেকে তিনজন করে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়ে পড়ুয়াদের ওই কে-ইয়ান যন্ত্রের সাহায্যে পড়াবেন। এক্ষেত্রে সমগ্র শিক্ষা মিশন চলতি মাসে শুধুমাত্র ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই এই প্রশিক্ষণ দিতে চাইছে। তবে, যেসব স্কুলে ইংরেজির শিক্ষকের অপ্রতুলতা রয়েছে সেখানে অন্য বিষয়ের শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হতে পারে বলে এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
অভিভাবকদের একাংশের দাবি, অত্যাধুনিক এই যন্ত্রের সাহায্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ছাত্রছাত্রীদের করার উদ্যোগ অভিনব। কিন্তু, এক্ষেত্রে সবস্তরের মধ্যে সদিচ্ছার প্রয়োজন। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি প্রশাসনেরও পদ্ধতিটির উপর নজরদারি করা উচিত।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সাধারণত সরকারি স্কুলগুলির একাংশে পঠনপাঠন নিয়ে নানারকম অভিযোগ ওঠে। ফলে, জেলার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ইংরেজি বিষয়ে অনীহা রয়েছে। পর্যাপ্ত শিক্ষার অভাবে পড়ুয়াদের ইংরেজিতে কথা বলা বা লেখায় ভীতি রয়েছে।
সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক আধিকারিক বলেন, কে-ইয়ান যন্ত্রের সাহায্যে ইংরেজি পড়ানো হলে তা পড়ুয়াদের কাছে অনেকটা আকর্ষণের হবে। সমগ্র সিলেবাসই ওই যন্ত্রে ইনস্টল করা থাকবে। তারফলে শ্রেণীকক্ষে যন্ত্রটির সাহায্যে ইংরেজি শব্দের প্রকৃত উচ্চারণ যেমন শেখানো যাবে। তেমনি পড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে থাকবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আকর্ষণীয় ছবি। যা ছাত্রছাত্রীদের কাছে বোধগম্যের হবে। তাই রাজ্য সরকার এই পদ্ধতিটি স্কুলগুলিতে চালু করছে। আগামী শিক্ষাবর্ষের গোড়াতেই এই পদ্ধতি চালু করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রশাসনের।