সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: শান্তিনিকেতনে সমাবর্তন উপলক্ষে আসতে চলেছেন রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক রামনাথ কোবিন্দ। শান্তিনিকেতনে তিনি রাত কাটাবেন। তার জন্য বিশ্বভারতীজুড়ে চলছে জোর প্রস্তুতি। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে জেলা প্রশাসন ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মধ্যে। শুক্রবারও বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সহ আধিকারিক, অধ্যাপক, জেলা পুলিসের কর্তাব্যক্তি, স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক সহ আরও অনেকে। এদিনের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিতে আসছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। প্রথমে ঠিক ছিল, ১১ নভেম্বর সকালে আকাশপথে তিনি শান্তিনিকেতনে আসবেন। ১ঘণ্টা ১৫ মিনিটের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে তিনি ফিরে যাবেন। কিন্তু, পরবর্তীতে তাঁর সফরসূচি বদলে যায়। নতুন সফরসূচি অনুযায়ী সমাবর্তনের একদিন আগে অর্থাৎ ১০ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ আকাশপথে রাষ্ট্রপতি সস্ত্রীক শান্তিনিকেতনে এসে উপস্থিত হবেন। তাঁর সঙ্গেই আসবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার।
বিশ্বভারতীর কুমিরডাঙা মাঠে তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণ করবে। সেখান থেকে সরাসরি তিনি পৌঁছে যাবেন রথীন্দ্র অতিথি গৃহে। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ঠিক করে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী কিছু দর্শনার্থী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। পরের দিন অর্থাৎ ১১ নভেম্বর সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি প্রথমে রবীন্দ্রভবন গিয়ে সেখানে কবিগুরুর ব্যবহৃত চেয়ারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন। তারপর সেখান থেকে আম্রকুঞ্জে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে বলা হয়েছে, ১০ তারিখ সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতন চত্বর ঘুরে দেখতে পারেন রাষ্ট্রপতি। সেই কথা মাথায় রেখে শান্তিনিকেতনজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূল অনুষ্ঠানস্থল সিসি ক্যামেরায় নজরবন্দি করা হচ্ছে। প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এছাড়াও প্রচুর আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি শান্তিনিকেতনে পা দেওয়ার পর থেকেই মূল এলাকায় যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত হবে। কিছু কিছু এলাকা সম্পূর্ণ ‘নো-এন্ট্রি’ করে দেওয়া হবে। তবে, সমাবর্তনে কতজন স্নাতক পড়ুয়াকে রাষ্ট্রপতি নিজের হাতে সপ্তপর্ণী তুলে দেবেন, তা এখনও স্থির হয়নি।
এদিন বৈঠক শেষে দুপুর ২টো নাগাদ কুমিরডাঙা মাঠে হেলিকপ্টার ওঠানামার মহড়া হয়। এবার জলের পাউচ বা প্লাস্টিক বোতল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রবেশাধিকার থাকবে শুধুমাত্র আমন্ত্রণমূলক। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যাঁদের নিমন্ত্রণ করবে শুধুমাত্র তাঁরাই এই অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন। সর্বসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানাতে আমরা সব রকমভাবে প্রস্তুত। শান্তিনিকেতনে রাষ্ট্রপতি দু’দিন থাকবেন। তার জন্য নিরাপত্তা সহ সমস্ত বিষয় নিয়ে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছি।