অতি সত্যকথনের জন্য শত্রু বৃদ্ধি। বিদেশে গবেষণা বা কাজকর্মের সুযোগ হতে পারে। সপরিবারে দূরভ্রমণের যোগ। ... বিশদ
রবিবারের ভাষণে ‘ভোকাল ফর লোকাল’ নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। তুলে ধরেন ঋষি অরবিন্দের জীবন দর্শনের কথা। বলেন, তিনি যে স্বদেশীর কথা বলতেন, আমরাও সেই দর্শনে বিশ্বাসী। প্রসঙ্গত, ৫ ডিসেম্বর ঋষি অরবিন্দের মৃত্যুবার্ষিকী। ‘মন কি বাত’-এ অরবিন্দের আদর্শে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ হতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘যতই অরবিন্দের দর্শন পড়ব, ততই জ্ঞান বিকশিত হবে।’ সরকারের নীতির কথা বোঝাতে গিয়ে শুধু অরবিন্দের দর্শনই নয়, কবি ঈশ্বর গুপ্তের শিষ্য মনমোহন বসুর ‘দিনের দিন সবে দীন’ কবিতার দু’টি লাইনও পড়ে শোনান মোদি। বলেন, ‘ছুঁই সুতো পর্যন্ত আসে তুঙ্গ হতে। দিয়াশলাই কাটি তাও আসে পোতে। প্রদীপটি জ্বালিতে, খেতে, শুতে, যেতে। কিছুতেই লোক নয় স্বাধীন।’ হিন্দিতে অর্থ বুঝিয়ে মোদি বলেন, ‘সুঁচ সুতো থেকে দেশলাই কাঠি—সবই বিদেশ থেকে আসে। খাওয়া-শোওয়া কোনও কিছুতেই মানুষ স্বাধীন নন। ঋষি অরবিন্দ বলতেন, স্বদেশী মানে আমরা আমাদের কারিগরদের জিনিসকে গুরুত্ব দেব। তিনি কিন্তু কখনই বিদেশ থেকে কিছু শেখার বিরোধিতা করেননি। কারও কাছ থেকে নতুন কিছু শেখার থাকলে, সেটা আমরা অবশ্যই শিখব। আর আমাদের দেশের যেটা ভালো, তাকে উৎসাহ দিতে হবে। আর এটাই আত্মনির্ভর ভারতের মূলমন্ত্র।’ দেশের শিক্ষা নীতিতেও অরবিন্দের ভাবনার কথা তুলে ধরেন মোদি। বলেন, ‘শিক্ষা নিয়ে ঋষি অরবিন্দের ধারণা অত্যন্ত স্বচ্ছ্ব ছিল। তিনি কখনই পাঠ্যবই, ডিগ্রি ও কাজ পাওয়ার মধ্যে শিক্ষাকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি। বলতেন, হৃদয় থেকে ভারতীয় হতে হবে। কিন্তু মস্তিষ্কের বিকাশ বিজ্ঞানসম্মতভাবে করতে হবে। আজ নতুন শিক্ষা নীতির মাধ্যমে দেশ অরবিন্দের সেই চিন্তাভাবনাকেই বাস্তবায়িত করছে।’
সংশোধিত কৃষি আইনের গুরুত্বের কথাও উঠে আসে ভাষণে। নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষক বিক্ষোভের জেরে কাঁপছে রাজধানী দিল্লি। এই অবস্থায় তাঁদের ক্ষোভ প্রশমনে মোদির বার্তা, নতুন কৃষি আইন তাঁদের সামনে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এই আইন কৃষকদের নতুন অধিকার দেবে। তাঁর সাফ বার্তা, কৃষি আইনের সংস্কার কৃষকদের শুধু শিকলমুক্তই করবে না, তাঁদের সামনে নতুন অধিকার ও সুযোগ এনে দেবে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলি তাঁদের প্রকৃত দাবি মেটানোর জন্য নানাবিধ প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিন্তু এই আইনের ফলে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে। মোদির কথায়, ‘কৃষকদের অভাব-অভিযোগের খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।’ এ প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের এক কৃষকের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ওই কৃষক পাওনা পাচ্ছিলেন না। শেষে নতুন আইনের সাহায্যে তিনি দ্রুত ওই পাওনা উদ্ধার করেন।
পাশাপাশি ৬ ডিসেম্বর বি আর আম্বেদকরের মৃত্যুবার্ষিকীর কথা উল্লেখ করে সংবিধান প্রদত্ত কর্তব্য পালনে সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানান মোদি। ৩০ মিনিটের ভাষণে উঠে আসে কানাডা থেকে বারাণসীর অন্নপূর্ণা মূর্তি ফেরানো, কর্তারপুর করিডর, করোনা ভাইরাসের বিপদের কথা। ছুঁয়ে যান সংস্কৃত ভাষায় শপথ নিয়ে নজির গড়া নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংসদ গৌরব শর্মার নামও।