কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। হঠাৎ প্রেমে পড়তে পারেন। কর্মে উন্নতির যোগ। মাঝেমধ্যে ... বিশদ
রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত অফিসে চুক্তিতে নিযুক্ত ২৬০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত কম্পিউটারাইজড অ্যাকাউন্টস অ্যাসিস্ট্যান্ট (জিপিসিএএ) ৫-৬ বছর ধরে কাজ করছেন। একশো দিনের কাজ, রাস্তা, বাড়িঘর নির্মাণ সহ বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য কম্পিউটারে নথিভুক্ত করার কাজ এই কর্মীরা করেন। গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পগুলির তথ্য এখন নিয়মিত পোর্টালে আপলোড করতে হয়। ফলে পঞ্চায়েতের কাজকর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে এই কর্মীদের।
জিপিসিএএ কর্মীদের বেতনের টাকা চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থ থেকে দেওয়া হতো। তখনই এই ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি উঠেছিল। কারণ চতুর্দশ অর্থ কমিশনের থেকে অর্থ পাওয়ার সময়সীমা শেষ হলে ওই কর্মীদের বেতন অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তখন থেকেই ছিল। কিন্তু আপত্তি উঠলেও এই ব্যবস্থা চালু করা হয়। চতুর্দশ বেতন কমিশনের বরাদ্দ অর্থ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে এখন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা আসছে। কিন্ত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা খরচের যে গাইডলাইন আছে, তাতে জিপিসিএএ-দের বেতন দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নেই। ফলে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা থেকে ওই কর্মীদের বেতন দেওয়া সম্ভব ছিল না। ফলে গত কয়েকমাস ধরে কর্মীদের বেতন আটকে ছিল।
এই কর্মীদের বেতন আটকে যাওয়ার আগে থেকে বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে কর্মী সংগঠনের নেতাদের আলোচনা চলছিল। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের মেন্টর কমিটির নেতা মনোজ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকরা সেখানে ছিলেন। বেতন দেওয়ার ব্যাপারে অর্থদপ্তরের অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এই সব প্রক্রিয়া চলার সময় এই কর্মীদের বেতন আটকে গেলে গত ২২ ডিসেম্বর মনোজবাবু বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেন।
ওই চিঠি দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে গত জানুয়ারি পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে জিপিসিএএ কর্মীদের বেতন দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। দপ্তরের বিশেষ সচিব জেলাশাসকদের কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে কীভাবে বেতন দেওয়া হবে, তার জন্য একাধিক প্রস্তাব দিয়েছেন। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের অর্থ যদি কোনও পঞ্চায়েতের কাছে এখনও পড়ে থাকে, তাহলে তা দিয়ে বেতন দেওয়া যেতে পারে। পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকেও বেতন দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে এই কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না থাকলে রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বরাজ অভিযান প্রকল্পের অর্থ বেতন দেওয়ার জন্য আপাতত ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এই নির্দেশিকার জেরে জিপিসিএএ-দের বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটল বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পুজোর ঠিক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এজেন্সির মাধ্যমে নিযুক্ত বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের একগুচ্ছ সুবিধা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ওই কর্মীদের বেতন বাবদ বরাদ্দ অর্থের একটা অংশ এজেন্সিগুলি কেটে নেয়। এই কর্মীদের সরকারের থেকে সরাসরি বেতন দেওয়া ছাড়াও অন্যান্য কয়েকটি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দপ্তর থেকে কর্মীদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে।